একা বিপ্লব নন, বিজেপির আরও সাংসদ নেতা কর্মী আসতে চাইছেন তৃণমূলে

Spread the love

নিউজ ডেস্ক:-  তৃণমূলের প্রথম দিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গী পোড়খাওয়া রাজনীতিক বিপ্লব মিত্র। দীর্ঘদিন সামলেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতির পদ। পরবর্তী সময়ে নাট্যকর্মী অর্পিতা ঘোষে সেই জেলার দায়িত্ব পাওয়ার পরই দ্বন্দ্বে শুরু। অর্পিতা ঘোষ-বিপ্লব মিত্রের অন্তর্দ্বন্দ্বের কথা তৃণমূলের অন্দরে সুবিদিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও অর্পিতার উপর নির্ভর করে এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন একাধিকবার। কিন্তু শেষমেশ উভয়ের মতান্তর আর মেটেনি। উনিশের লোকসভায় জেলায় দলের খারাপ ফলাফলের পর অভিমান নিয়েই বিপ্লব মিত্র সদলবলে তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে যান, যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে।

পাক্কা ১ বছর ১ মাস। আবারও ঘরের ছেলে ফিরলো ঘরে। বিপ্লব মিত্র বিজেপি ছেড়ে ফিরে এলেন জোড়াফুলেরই ঘরে। আর ফিরেই জানালেন, ‘১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলে রয়েছি। মাঝে কোনও কারনে বিচ্যুত হয়েছিলাম। আজ ঘরে ফিরে এলাম।’ যদিও বিচ্যুতির কারন কী তা এদিন সাংবাদিক বৈঠকে জানাননি দক্ষিন দিনাজপুর জেলার প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। এদিন কলকাতার তপসিয়া এলাকায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে জোড়াফুল শিবিরে যোগদান করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে তাঁর ভাই তথা দক্ষিন দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্রও এদিন যোগদান করেন তৃণমূলে।
গতবছর লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট আসনে অর্পিতা ঘোষকে দলের প্রার্থী করা নিয়ে বিবাদের সুত্রপাত ঘটে বিপ্লববাবু ও তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে। সেই সময় দলের জেলা সভাপতি ছিলেন বিপ্লববাবু। এই কথা অনস্বীকার্য যে দলের একদম গঠনপর্ব থেকেই তৃণমূলে ছিলেন বিপ্লববাবু। বলতে গেলে একা হাতেই জেলায় তৃণমূলকে শূন্য থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ ও তিনটি পুরসভায় ক্ষমতায় এনেছিলেন তিনি। তাঁর ভাই প্রশান্ত মিত্র গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে অর্পিতা পরাজিত হতেই অভিযোগ উঠেছিল বিপ্লববাবুর অসহযোগীতার জন্যই এই পরাজয় ঘটেছে। এরপরেই সদলবলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন বিপ্লববাবু। তার জেরে সাময়িক ভাবে দক্ষিন দিনাজপুর জেলা পরিষদ ও গঙ্গারামপুর পুরসভাও হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। পরে অবশ্য অনেকেই বিজেপি ছেড়ে ফিরে আসেন তৃণমূলে। কারন গেরুয়া শিবিরে তাঁরা ম্নিয়ে নিতে পারেননি। তার জেরে গঙ্গারামপুর পুরসভাও ফের তৃণমূলের দখলে চলে আসে। তারপরেই অনাস্থা প্রস্তাব এনে সরিয়ে দেওয়া হয় প্রশান্ত মিত্রকে। নতুন চেয়ারম্যান হন অমলেন্দু সরকার।

এদিকে বিজেপিতে মানাতে না পেরে ও চূড়ান্ত ব্রাত্য থেকে যাওয়ায় ফের তৃণমূলে ফিরে আসার জন্য নিজেই জোড়াফুলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিপ্লববাবু। গতকালই আনুষ্ঠানিকভাবে এই যোগদান হয়ে যেত। কিন্তু সোমেন মিত্রের প্রয়াণের ঘটনায় তা স্থগিত রাখা হয়। এদিন তৃণমূল ভবনে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা হাতে তুলে নিয়ে তৃণমূলে ফিরে এলেন বিপ্লব মিত্র ও প্রশান্ত মিত্র। একই সঙ্গে শোনা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের তিনজন বিজেপি সাংসদ ও দক্ষিনবঙ্গের পাঁচজন বিজেপি সাংসদ তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে যোগাযোগ করেছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে। এমনকি এই তালিকায় ৪জন বিধায়কও রয়েছেন। যদিও এই বিষয়ে এদিন খোলসা করে কিছু বলতে রাজি হননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু অনেকেই যে তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন সেটা স্বীকার করেছেন। এটাও জানিয়েছেন যে, ‘শুধু বিপ্লব মিত্র নয় অনেকেই ফিরতে চাইছেন। দলনেত্রীর আহ্বানেই তৃণমূলে ফিরে এসেছেন বিপ্লব মিত্র। আগামী দিনে আরও অনেকেই আসবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.