ওয়েব ডেস্ক:- করোনা ও লকডাইনে প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থাকতেই মোদিজী ঘোষণা করেছিলেন পি এম কেয়ার্স ফান্ড । এই ফান্ডের টাকার হিষাবের জন্য জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বার বার আবেদন করছে ।এরই মধ্যে আবার আর টি আই ,কিন্তু হিষাব দেওয়া হল না।
ঘোষণা করা হয়েছিল করোনার মোকাবিলায় তৈরি ‘পিএম কেয়ার্স’ ফান্ড নিয়ে বিরোধীদের একাধিক অভিযোগ ছিলই। তার মধ্যেই এই তহবিল সংক্রান্ত তথ্য দিতে অস্বীকার করল প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও)। তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) পিএম কেয়ার্স সম্পর্কিত তথ্য চাইলে আবেদনকারীকে আরটিআই আইনের নির্দিষ্ট ধারা উল্লেখ করে জানানো হয়, পিএমও-তে এই সংক্রান্ত সব তথ্য নেই। তাই তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা ‘আইনের অপব্যবহার’।
দেশে যে কোনও বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল রয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাস ও লকডাউনের মোকাবিলায় তৈরি করা হয়েছিল ‘পিএম কেয়ার্স’ নামে আলাদা একটি তহবিল। সেই তহবিলে যে কেউ দান করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থাকতেও আলাদা করে কেন ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিল তৈরি করতে হল, তা নিয়ে শুরুর সময়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। পরবর্তীকালে ওই তহবিলে কে কত টাকা দান করেছেন, সেই টাকা কোন খাতে কত খরচ হয়েছে, তার হিসাব প্রকাশ্যে আনার দাবিও জানিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী দলগুলি। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেনি শাসক দল।
অন্য দিকে এই পিএম কেয়ার্স সম্পর্কে তথ্য জানতে বহু আবেদন জমা পড়ে পিএমও-তে। তেমনই একটি আবেদন জানিয়েছিলেন লোকেশ বাত্রা নামে এক অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর অফিসার। ২০২০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পিএমও-তে প্রতি মাসে কত আবেদন জমা পড়েছে, সে বিষয়ে জানতে চান তিনি। আবেদনের মধ্যে কতগুলি পিএম কেয়ার্স এবং কতগুলি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল সম্পর্কিত সে বিষয়েও জানতে চেয়েছিলেন লোকেশ বাত্রা। কিন্তু বাকি সব তথ্য দিলেও পিএম কেয়ার্স এবং প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল সম্পর্কিত তথ্য দেওয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ওই আবেদনের জবাবে বলা হয়েছে, ‘‘আপনি যে তথ্য জানতে চেয়েছেন, তা এই অফিসে এক জায়গায় গচ্ছিত নেই। সেই তথ্য সংগ্রহ করা এবং এক জায়গায় করা এই অফিসের এক্তিয়ার বহির্ভূত। সেটা করা অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্মের পক্ষে সঠিক হবে না।’’ আরটিআই আইনের ৭(৯) নম্বর ধারার কথাও উল্লেখ করা হয় ওই আবেদনের জবাবে।
কোন কোন প্রেক্ষিতে কোনও সরকারি অফিস তথ্য দিতে অস্বীকার করতে পারে, আরটিআই আইনের ৮ (১) নম্বর ধারায় সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। অন্য দিকে ৭(৯) ধারা অনুযায়ী, আবেদনকারী যে ফর্মে অর্থাৎ যে ভাবে তথ্য চাইছেন, কোনও অফিসে যদি ঠিক সেই ফর্মেই তথ্য থাকে, তা হলে তা দিতে বাধ্য থাকবে। কিন্তু যদি সেই ফর্মে না থাকে, তা হলে সেই তথ্য দেওয়া সঠিক হবে না। সে ক্ষেত্রে তথ্য দিলে সেটা তথ্যের নিরাপত্তা বা সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটা শুধুমাত্র তথ্য না দেওয়ার অজুহাত। তথ্য কমিশনের প্রথম কমিশনার ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ্ বলেন, ‘‘এর মধ্যে কোনও অস্পষ্টতা নেই। এটা আইনের ওই ধারার অপব্যবহার।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমার সময়ে এটা (তথ্য জানার অধিকার আইন) ছিল প্রাথমিক পর্যায়ে, যখন সাধারণ মানুষ এ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতেন না। তবে এখন সেই আইন প্রতিষ্ঠিত। এখন এই ধরনের অজুহাত খাটে না।’’
এর হিষাব কি আদৌ মিলবে এর আশায় এখন দেশবাসী ।
সৌজন্য :- আনন্দ বাজার পত্রিকা