নিউজ ডেস্ক অয়ন বাংলা:- ত্রিপুরার বিজেপি সহ সভাপতি দল ত্যাগ করে কংগ্রেস ঢুকার পর আবার বিপাকে বিজেপি ,পঁচিশজন বিধায়ক মন্ত্রী দল ছাড়লেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে পাখির চোখ করে লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করার পরিকল্পনা নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু গত ক’দিনে উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্য থেকে বিজেপি ছেড়েছেন প্রায় ২৫ জন নেতা। অরুণাচল প্রদেশের ১৮ জন বিজেপি নেতা দল ছাড়লেন আজ।
লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন হবে। সেই ভোটের টিকিট না পেয়েই দল ছাড়লেন এই নেতারা। দল ছেড়ে বিদ্রোহী বিজেপি নেতারা যোগ দিয়েছেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা-র ন্যাশনাল পিপল্স পার্টিতে (এনপিপি), যারা বিজেপি শরিক হওয়া সত্ত্বেও‘একলা চলো’ নীতিতেই এই ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অরুণাচলে ছয় বিধায়ক, তিন মন্ত্রী ছাড়াও বিজেপি ছেড়েছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী শেরিং জুরমে। বিজেপি ছেড়ে আসা নেতা-মন্ত্রী-বিধায়কদের যোগদানের পর এনপিপি নেতা টমাস সাংমা জানিয়েছেন, ‘‘৬০ সদস্যের বিধানসভায় আমরা অন্তত ৪০টি আসনে প্রার্থী দেব। ভোটে জিতলে আমরা একাই সরকার গড়ার চেষ্টা করব।’’
দলত্যাগী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুমার ওয়াই অরুণাচল বিজেপির বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্র এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ এনেছেন। দল ছেড়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘বিজেপি ঠিক পথে থাকলে আমরা দল ছাড়তাম না। শীর্ষনেতৃত্ব সব সময় বলে দেশ এবং পার্টি ব্যক্তির আগে। কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটা হয়। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তোলে বিজেপি। কিন্তু অরুণাচলে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের লোকেরাই তিনটি টিকিট পেয়েছেন।”
দলে এই বিদ্রোহের খবর সামনে আসার পর বিজেপি নেতা কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, “কে টিকিট পাবেন, তা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রাজ্য নির্বাচন কমিটির সুপারিশ পাওয়ার পর কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে। অনেক নেতা-মন্ত্রী-বিধায়ককেই টিকিট দেওয়া হয়নি। স্থানীয় পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
এনপিপি আগে এনডিএ-এরই অংশ ছিল। কিন্তু, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে বিজেপির সঙ্গ ছাড়েন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে এমনিতেই উত্তর-পূর্ব ভারতে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বিজেপি। বিলটি রাজ্যসভায় পাশ না হওয়ায় ধাক্কা সামাল দেওয়া গিয়েছে।
গোটা উত্তর-পূর্বে এখনও পর্যন্ত মোট দু’টি দলকে শরিক হিসেবে জোগাড় করতে পেরেছে বিজেপি। সিকিমের পবন চামলিংয়ের দলের সঙ্গেও এবার জোট হয়নি বিজেপির। এমনকি নিজেদের পুরনো শরিকদের মধ্যেও বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করার প্রবণতা বেড়ে চলেছে ঠিক ভোটের আগে। সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা (এসকেএম) এবং এনপিপি সেই তালিকায় নতুন সংযোজন।ত্রিপুরাতেও আইপিএফটির সঙ্গে জোট ভেঙে গিয়েছে তাদের।
গোটা পূর্ব ভারত আজ বিজেপি র সঙ্গ ত্যাগ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে।