নিউজ ডেস্ক: – রাজধানীর অলিন্দে এখন জোর আলোচনা এবার কি গান্ধী পরিবারের বাইরে কেই জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির আসনে বসতে চলেছে। কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি হোক গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে। একবছর আগে রাহুল গান্ধীর সুরে সুর মিলিয়েছিলেন তাঁর বোন তথা উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও । তাঁর সাফ কথা, এবার সময় এসেছে পরিবারের বাইরে বেরনোর। দলেরও এবার উচিত আলাদা রাস্তা দেখা। এবং গান্ধী পরিবারের বাইরে কেউ সভাপতি হলে খুশি মনেই তিনি সেটা মেনে নেবেন। সম্প্রতি প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর একবছরের পুরনো এক সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে এসেছে একটি বইয়ের মাধ্যমে। তাতেই এই মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেস নেত্রী।
গত বছর লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৫২টিতে জেতে কংগ্রেস । এই ভরাডুবির দায় নিয়ে সেসময় পদত্যাগ করেন তৎকালীন সভাপতি রাহুল গান্ধী । কিন্তু তারপর একবছর কেটে গেলেও স্থায়ী সভাপতি নির্বাচন করে উঠতে পারেনি দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল। বেগতিক দেখে শেষমেশ সোনিয়া গান্ধীকেই ফের কার্যকরী সভাপতি করে দলের কাজকর্ম চালানো হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল এভাবে আর কতদিন? রাহুলের পদত্যাগের পর কংগ্রেস একপ্রকার দাঁড়হীন নৌকার মতো চলছে। একের পর এক রাজ্যে বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো তরুণ মুখ দল ছেড়ে চলেও গিয়েছেন। গান্ধী পরিবারের প্রতি আনুগত্যও কমছে নেতাদের। শশী থারুরের মতো নেতারা প্রকাশ্যেই দাবি করছেন, সভাপতি পদের জন্য নির্বাচন করানোর। আসলে তাঁরা ভালমতোই বুঝতে পারছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজন শক্তিশালী নেতৃত্বের। আর এই মুহূর্তে কংগ্রেস নেতৃত্ব দিশাহীন। তাই সময় এসেছে নতুন স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনের।
কিন্তু প্রশ্ন হল স্থায়ী সভাপতি বাছতে হলে, কাকে বাছবে কংগ্রেস? রাহুল গান্ধী পদত্যাগের সময়ই জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি চান এবার পরিবারের বাইরে কেউ সভাপতি হোক। এর মধ্যে বার কয়েক কংগ্রেস নেতারা রাহুলকে ফের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর অবস্থান একেবারে স্পষ্ট, সভাপতি হোক গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ। বছরখানেক আগের সেই সাক্ষাৎকারে রাহুলের সেই সুরে সুর মিলিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কাও। সম্প্রতি সেই সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে এসেছে। যাতে তিনি বলেছেন,”রাহুলের মতে আমাদের কারও সভাপতি হওয়া উচিত নয়। আমি ওঁর সঙ্গে পুরোপুরি একমত। আমার মনে হয়, দলের এবার আলাদা রাস্তা দেখা উচিত।” প্রিয়াঙ্কা বলছেন, আমি গান্ধী পরিবারের বাইরের যে কোনও ব্যক্তিকে নিজের নেতা হিসেবে মানতে রাজি আছি। তিনি যদি বলেন, যে তোমাকে উত্তরপ্রদেশে নয়, আন্দামানে গিয়ে কাজ করতে হবে। আমার তাতেও কোনও সমস্যা নেই।”
গান্ধী পরিবারের সদস্যরা মুখে যাই বলুন, দল কিন্তু এখনও তাঁদের বাইরে কাউকে ভাবতে পারছে না। সম্ভবত সে কারণেই, গত এক বছরে বেশ কয়েকবার রাহুলকে অনুরোধ করা হয়েছে, তাঁর ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করে নিতে। রাহুল যদি নিতান্তই রাজি না থাকেন তাহলে প্রিয়াঙ্কার কথাও ভাবছেন কংগ্রেস নেতাদের একাংশ। কিন্তু গান্ধী পরিবারের কনিষ্ঠতম সদস্যার এই বক্তব্যে স্পষ্ট, অদূর ভবিষ্যতে তিনিও দলের দায়িত্ব নিতে রাজি নন।
তাহলে কি এবার সত্যিই জাতীয় কংগ্রেস এর সভাপতির পদ কেই গান্ধী পরিবারের বাইরে থকে হতে চলেছে।