পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসা জাল নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরি করা দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর

Spread the love

পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসা জাল নিয়োগপত্র নিয়ে চাকরি করা দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবশেষে দুই ভুয়ো শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ শুরু করলো হাওড়া জেলার পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের নামে জাল নিয়োগ সুপারিশপত্র তৈরি করে ২০১৮ সালে হাসিম আব্দুল হালিম ও সুতাপা দাস নামে দুজনকে শিক্ষকতার চাকরিতে নিয়োগ করে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি। বিষয়টি সামনে আসার পরেই মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেনের নির্দেশে বুধবার এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সাঁকরাইল থানায় এফআইআর দায়ের করা হলো। এই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল নিয়োগপত্র তৈরি করে চাকরিতে যোগ দিয়ে টানা দু’বছর সরকারি কোষাগার থেকে বেতন বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দুই ভুয়ো শিক্ষকের মধ্যে সুতপা দাস হলেন, পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসা প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বুদ্ধদেব দাসের মেয়ে। বুদ্ধদেব বাবু মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন এই জাল নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে বুদ্ধদেব বাবুর সরাসরি যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। জাল নথিপত্র তৈরি করার ক্ষেত্রে বুদ্ধদেব বাবুর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে ওই মাদ্রাসার আর এক শিক্ষক সৈয়দ ইমরোজ আলীর। এনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, হাসিম আব্দুল হালিমকে চাকরিতে নিয়োগ করার জন্য ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। সেই নিয়োগ সম্পূর্ণ করতে বুদ্ধদেব বাবুকে কাজে লাগাতে গিয়ে যাবতীয় জাল নথিপত্র তৈরি করেছিলেন। সেই সুযোগেই নিজের মেয়ের যাবতীয় নথিপত্র জাল করে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা চাকরি দিয়েছিলেন বুদ্ধদেববাবু। হাসিম আব্দুল হালিম ও সুতাপা দাসের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বুদ্ধদেব দাস সৈয়দ ইমরোজ আলী সরাসরি যুক্ত বলেও অভিযোগ। তবে, থানায় এফআইআর করতে গিয়ে শুধুমাত্র হাসিম আব্দুল হালিম ও সুতাপা দাসের নামে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়ে পাঁচপাড়া হাই মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ সাইফুদ্দিন জানান, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিকর্তা আবিদ হোসেনের নির্দেশে আমরা আইনি পদক্ষেপ এর পথে হেঁটেছি। আবিদ সাহেব এই ভুয়ো শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কথা বলেছিলেন। সেই মোতাবেক, আমরা এই দুজনের নামই অভিযোগ দায়ের করলাম।
তবে, এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে এখনো যোগাযোগ করা যাচ্ছে না অভিযুক্ত হাসিম আব্দুল হালিম ও সুতাপা দাসের সঙ্গে। তাদের ব্যবহৃত ফোন নাম্বার গুলো এখনো বন্ধ রয়েছে। জানা গিয়েছে হাসিম আব্দুল হালিমের বাড়ি, পূর্ব মেদিনীপুর হলদিয়া। সুতাপা দাসের বাড়ি বীরভুম।
অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসায় যোগাযোগ রাখছেন না সুতপা দাসের বাবা তথা প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বুদ্ধদেব দাস। অভিযোগ, গত বছর মাদ্রাসা থেকে চলে যাওয়ার পর, অফিসের ব্যবহৃত আলমারির চাবি তিনি নিয়ে চলে যান। গত বুধবার, ম্যানেজিং কমিটির রেজুলেশন করে ক্লার্কের কাছে থাকা অন্য একটি চাবি দিয়ে আলমারি খোলা হয়। সাইফুদ্দিন বাবু জানান, গোটা আলমারি জুড়ে একাধিক ব্যক্তির নামে জাল নথিপত্র তৈরি করা হয়েছে। যাদের হয়তো নিয়োগের টোপ দেওয়া হয়েছিল বলে আমাদের অনুমান। আমরা এই বিষয়গুলি মাদ্রাসা দপ্তরের সামনে তুলে ধরবো।
থানায় করা অভিযোগপত্রে নাম না থাকলেও, এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে সৈয়দ ইমরোজ আলীর বিরুদ্ধে। তিনি এই ঘটনার তদন্তের মুখোমুখি হতে চেয়েছেন। তার অভিযোগ, মাদ্রাসা শিক্ষকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক শিকার করা হচ্ছে আমাকে। এখন দেখার এই বিষয়টি কোনদিকে গড়াই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.