চলে গেলেন বাংলার নক্ষত্র প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুর্খাজী

Spread the love

নিউজ ডেস্ক :-   সাল ২০২০। আবারও নক্ষত্রপতন। রত্নহারা হল ভারত। চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়। সোমবার দিল্লির সেনা হাসপাতালে মৃত্যু হল তাঁর।নিজের করোনা আক্রান্তের খারাপ খবরটা নিজেই ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। লিখেছিলেন, ‘অন্য চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলাম। করোনা-পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। গত এক সপ্তাহে যাঁরা আমার সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের অনুরোধ করছি, সেলফ আইসোলেশনে থাকুন এবং করোনা পরীক্ষা করিয়ে নিন।’এই লড়াইটা জেতা হল না প্রণবের। চলে গেলেন ভারতীয় রাজনীতির এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব।
৮৪ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। ৯ অগাস্ট শৌচাগারে বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে দিল্লির সেনা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। সেখানেই এদিন প্রয়াত হলেন তিনি।

 

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একটি উল্লেখযোগ্য নাম প্রণব মুখোপাধ্যায়।
তিনি ছিলেন কংগ্রেসের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের মুশকিল আসান। ভারতবর্ষের অন্যতম প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এই মানুষটি শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের গোষ্ঠীবাজির শিকার হয়েছিলেন এবং তাঁকে কংগ্রেস থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করা হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস নামে একটি দলও গঠন করেছিলেন।

উল্লেখ্য, কংগ্রেসের পারিবারিক কারণে এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীবাজির কারণে একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হবার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনা করা হয়েছে।

ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ, কূটনৈতিক দক্ষতা ও বুদ্ধিমত্তার বিচারে তিনিই ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদের ‘সবচেয়ে যোগ্যতম’ ব্যক্তিত্ব। কিন্তু কংগ্রেস দল তাঁকে বঞ্চিত করেছে। যদিও ২০১২ সালে তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মত,এই পদ্ধতি গ্রহণ করে রাজনৈতিক জীবন থেকে তাঁকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

১৯৬৯ সালে তিনি ইন্দিরা গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হন। তিনি নিজে ছিলেন অধ্যাপক। ৬৯ সালে রাজ্যসভার সদস্য। ১৯৭৭ সাল থেকেই ক্যাবিনেট মন্ত্রী। ১৯৮০-৮৫ রাজ্যসভার দলনেতা। ১৯৮২-৮৪ অর্থমন্ত্রী পদ গ্ৰহণ করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে বিদেশ, প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ দপ্তরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন।

তিনী”পদ্মবিভূষণ”, ভারতরত্ন এবং শ্রেষ্ঠ সাংসদের শিরোপা পেয়ে সম্মানিত হন। ২০১৩ সালে তিনি পেয়েছিলেন “বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা”।

তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল “বিয়ন্ড সারভাইভাল”, “অফ দ্য ট্রাক, সাগা অফ স্ট্রাগল অ্যান্ড স্যাক্রিরফাইস”

কাঁচরাপাড়ার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল প্রণব মুখার্জীর। যুব নেতা হিসেবে মৃণাল সিংহ রায় কংগ্রেসের ২০ দফা কর্মসূচি রূপায়ণে তাঁকে প্রধান বক্তা হিসেবে নিয়ে এসেছিলেন। কংগ্রেসের কর্তব্য কি,কংগ্রেস কি করতে চায় এবং দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি এক জোরালো বক্তব্য রেখেছিলেন সেই সভায়।

কাঁচরাপাড়া অঞ্চল এমন একটি অঞ্চল যেখানে বহু মনীষার ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পদার্পণ ঘটেছে। তারৎমধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রণব মুখোপাধ্যায়।

এই প্রণব মুখোপাধ্যায় শেষ পর্যন্ত ভারতবর্ষের রাষ্ট্রীয়, জাতীয় জীবনে শ্রেষ্ঠতম পদ রাষ্ট্রপতি পদ অর্জন করেন। কিন্তু সারা ভারত পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা হয়। এটাই আজ বাঙালির কাছে দুঃখ ও দুর্ভাগ্যের বিষয়।

2 thoughts on “চলে গেলেন বাংলার নক্ষত্র প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুর্খাজী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.