কোনা ভাবেই গঙ্গার করাল গ্রাস থেকে রেহাই পাচ্ছে না মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের ধানঘরা গ্রামবাসী!

Spread the love

কোনা ভাবেই গঙ্গার করাল গ্রাস থেকে রেহাই পাচ্ছে না মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের ধানঘরা গ্রামবাসী!

মোঃ ইজাজ আহামেদ ও মহ: মুস্তফা শেখ .অয়ন বাংলা :- বিগত কয়েকদিন আগে মুর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জের ধানঘরা গ্রামের অনেকের বাড়ি, জমি, বাগান গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছিল যা নিয়ে সামসেরগঞ্জ ও সুতিতে চাঞ্চল্য ছড়ায় জনমানসে এবং বিভিন্ন খবরের কাগজে, বিভিন্ন খবরের চ্যানেলে ও সামাজিক গণমাধ্যমে জায়গা করে নেয় । অনেকে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন এবার হয়তো গঙ্গা রাক্ষুসে মূর্তি ধারণ করবেনা। কিন্তু না, কয়েকদিন বিরতি নিয়ে আবার ভয়ংকর হয়ে উঠেছে বৃহস্পতিবার থেকে ।

 

একে একে ভিটে মাটি গিলে ফেলছে মুহূর্তের মধ্যে। বৃহস্পতিবার থেকে আজ, শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৭০ টির মতো বাড়ি সহ, কয়েক বিঘা কৃষিজমি, বাগান দানব নদীর জলে তলিয়ে গেছে। যে নদী দেখলে মনে প্রশান্তি আসে মানুষের দেহ-মনে, একঘেয়েমি কাটে, নদীর তীরে বিকেলের নির্মল বাতাসে মন প্রফুল্ল হয়ে উঠে, সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকে কবিতা লিখে ফেলে মনের মাধুরী মিশিয়ে। আজ সেই নদী যেন এলাকাবাসীর কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে, রাক্ষুসে দানব হয়ে এসেছে তাদের কাছে। প্রতি মুহূর্তে তাদের মনে দুঃখের এবং আতঙ্কের জোয়ার উঠছে। যে সাধের বাড়িগুলো তারা তিল তিল করে গড়ে তুলেছিল আজ গঙ্গার গ্রাস কবলে পড়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। কোথায় ঠায় পাবে, কোথায় যাবে, ছেলে মেয়ে নিয়ে কি খাবে তা ভেবে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। লোকসভায় ২০০৫ সালে গঙ্গা-ভাঙ্গনকে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করা হয় এবং ২০ হাজার কোটি টাকা ভাঙ্গন রোধে বরাদ্দ করা হয় । কিন্ত সেই টাকার কাজ খুব একটা হয়েছে তা মানতে নারাজ এলাকাবাসী। তাছাড়া প্রত্যেক বছর শুধু টাকা বরাদ্দের কথা শুধু শোনা যায় কিন্তু তার বাস্তবায়ন দেখা যায় না বলে অভিমত এলাকাবাসীর। এবং এই গ্রামটির অনেকাংশইটা নদীর চলে গেলেও সরকার সেভাবে এখনও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে এলাকাবাসী জানান। যাদের বাড়ি প্রহর গুনছে নদীর বুকে তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে সেই সব বাড়ির অধিবাসীরা বাড়ির ইটগুলো নিয়ে একটু সম্বল পাওয়ার আশায় সাধের,স্বপ্নের বাড়িগুলো ভাঙতে শুরু করেছে। পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসীরা দেখতে এসে গঙ্গার তীরে বসবাস করা অসহায় ধানঘরাবাসীদের দুঃখ দুর্দশা দেখে এক বুক দুঃখ নিয়ে স্মৃতির ক্যানভাসে ছবি এঁকে বাড়ি ফিরছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙন ও তাদের দুঃখ দুর্দশা দর্শন করতে ভিড় জমাচ্ছে এই এলাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.