নিউজ ডেস্ক: – নয়া কৃষিবিলের প্রতিবাদে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন NDA’র সবচেয়ে পুরনো জোটসঙ্গী পাঞ্জাবের শিরোমনি অকালি দলের (SAD) একমাত্র সদস্য হরসিমরত কৌর বাদল। বৃহস্পতিবার তিনি সংসদে ইস্তফার কথা জানিয়েছেন। নয়া কৃষিবিল কৃষক স্বার্থ বিরোধী, এই অভিযোগে সরব পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে SAD সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী হরসিমরত কৌর বাদলের এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
কিন্তু লোকসভা অধিবেশন শুরুর আগেই পাঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষকরা প্রস্তাবিত বিলে পুঁজিপতিদের প্রাধান্য দেওয়ার অভিযোগ তুলে ব্যাপক ক্ষোভ দেখান। এই পরিস্থিতিতে পাঞ্জাবের শিরোমনি অকালি দলকে NDA’র জোটসঙ্গী হয়েও নিজেদের অবস্থান বদল করতে হয়। দাঁড়াতে হয় নিজের রাজ্যের কৃষকদের পাশে। আর সেই জায়গা থেকেই বাদল পরিবারের পুত্রবধূ, কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী হরসিমরত কৌরের (Harsimrat Kaur Badal) পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।
বৃহস্পতিবার ৭০ পেরিয়ে ৭১ বছরে পড়লেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এই দিনেই ভাঙন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। কেন্দ্রের তিনটি কৃষি বিলের প্রতিবাদে মোদী মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন এনডিএ-র অন্যতম শরিক অকালি দলের নেত্রী হরসিমরত কৌর বাদল। এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি। মোদী মন্ত্রিসভায় অকালি দলের একমাত্র সদস্য ছিলেন হরসিমরত।
নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ট্যুইটারে হারসিমরত লিখেছেন, ‘সরকারের কৃষক বিরোধী অর্ডিন্যান্স এবং আইনের প্রতিবাদে আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছি। কৃষক এবং তাঁদের ভাইবোনদের পাশে থাকতে পেরে আমি গর্বিত।’
যদিও আগামী দিনে এনডিএ-তে থাকা বা না থাকা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি শিরমণি অকালি দল। দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমাদের আগামী রণকৌশল কী হবে, সেই বিষয়ে পার্টির পরবর্তী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এর আগে লোকসভায় কৃষি বিলের উপরে বিতর্কে অংশ নিয়ে বিজেপির সিদ্ধান্তের উল্টো পথে যায় শিরোমণি অকালি দল। এই বিলকে কৃষক বিরোধী আখ্যা দেন দলের প্রধান সুখবীর সিং বাদল। একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এই বিল আইনে পরিণত হলে কৃষকদের স্বার্থ লঙ্ঘিত হবে।
দেশের কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কার-কেন্দ্রিক পদক্ষেপগুলিকে বাস্তবায়িত করতে গত ৫ জুন কেন্দ্রীয় সরকার কতগুলি অধ্যাদেশ জারি করে। সেই অধ্যাদেশগুলিকে পাকাপাকিভাবে আইনি মান্যতা দিতে গত সোমবার লোকসভায় কৃষি-সংক্রান্ত তিনটি বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষি কল্যাণ মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর।
ওই তিনটি বিলের মধ্যে একটি বিলের লক্ষ্য, দেশের বর্তমান অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধন করে নির্দিষ্ট কিছু কৃষি পণ্য মজুত রাখার ঊর্ধসীমা তুলে দেওয়া।
আর একটি বিলের লক্ষ্য, রাজ্যগুলিতে বর্তমানে কৃষিপণ্য বিপণন নিয়ে যে এপিএমসি আইন আছে তা দূর করে আন্তঃরাজ্য কৃষি পণ্যের বাণিজ্য অবাধ করা এবং তৃতীয় বিলটির উদ্দেশ্য, রাজ্যগুলিতে চুক্তি-ভিত্তিক চাষ ব্যবস্থা আইনসিদ্ধ করা।
সংসদে উপস্থিত বিরোধী সদস্যরা একে রাজ্যের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ বলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ওই তিন প্রস্তাবিত আইনের তীব্র বিরোধীতা করেন।