নিউজ ডেস্ক :- আবার বিজেপি শুরু করেছে অসমে নতুন খেলা । অসমে এনআরসি মানবে না বিজেপি। নতুন করে করা হবে এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জি। ফলে, অসমের বাঙালিরা নতুন করে বিপাকে পড়তে চলেছেন। বিজেপি–র অসম রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাসের অভিযোগ, বহু ‘বিদেশি’–র নাম রয়েছে চূড়ান্ত তালিকায়। তাই তাঁরা এই তালিকা মানবেন না। এনআরসি নিয়ে জটিলতার কারণে বহু মানুষ পাচ্ছেন না আধার কার্ড। ফলে পেনশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
১২০০ কোটি টাকা খরচ করে অসমে প্রকাশিত হয় চূড়ান্ত এনআরসি। ৫০ হাজারেরও বেশি রাজ্য সরকারের কর্মী সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে প্রস্তুত করেন বৈধ নাগরিকদের তালিকা। যাচাই–বাছাইয়ের পর ১৯ লাখেরও বেশি মানুষের নাম বাদ যায় নাগরিকত্বের তালিকা থেকে। প্রায় ১০ বছর ধরে চলে গোটা প্রক্রিয়া। প্রক্রিয়া চলাকালেই চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হয়ে বহু মানুষ প্রাণ হারান। বিজেপি–র আমলে প্রকাশিত তালিকায় বাদ পড়াদের বেশির ভাগই হিন্দু বাঙালি। তাই এখন ভোটের মুখে বিজেপি মানতে চাইছে না এনআরসি। রাজ্য সরকারের দাবি, অন্তত ২০ শতাংশ নাম নতুন করে যাচাই করতে হবে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
এনআরসি নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়লেও বিজেপি–র রাজ্য সভাপতি রঞ্জিত দাস জানিয়েছেন, তাঁরা এই তালিকা মানবেন না। তাঁর মতে, ‘চূড়ান্ত এনআরসি আসলে এখন আবর্জনা ছাড়া কিছুই নয়।’ এদিকে, অসমের বিভিন্ন জেলায় দুর্গা পুজোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করছে প্রশাসন। ডিব্রুগড়ে বলা হয়েছে, মূর্তি পুজো করা যাবে না। বরাকেও জারি হয়েছে একাধিক নিষেধাজ্ঞা। তপোধীরবাবুর মতে, করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিজেপি বাঙালির সংস্কৃতিতে আঘাত করছে।
বিজেপি–শাসিত অসমে বেড়েই চলেছে ধর্ষণের ঘটনা। অসম পুলিশের তথ্য বলছে, গত ৫ বছরে রাজ্যে ধর্ষিতার সংখ্যা ৯ হাজারেরও বেশি। শুক্রবারও অসমে এক তরুণী ধর্ষিতার খবর পাওয়া গিয়েছে। বিজেপি–র আমলে রাজ্যের মহিলারা মোটেই নিরাপদ নন, অভিযোগ কংগ্রেসের। বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার অভিযোগ, সবদিক থেকেই রাজ্যবাসীকে সুশাসন দিতে ব্যর্থ সর্বানন্দ সোনোয়াল–হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার। করোনা পরিস্থিতিতেও তাই বেড়ে চলেছে ধর্ষণ।
অসমে ধর্ষণ এখন জলভাত হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যের বকসা জেলার মুষলপুরে এক মহিলা নিজের বাড়িতেই ধর্ষিতা হন বলে অভিযোগ। প্রশান্ত রাভা নামে এক ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করে বলে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন ধর্ষিতা। শুধু এই একটি ঘটনাই নয়, প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন। বকসা জেলাতেই রবিবার এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে ১৮৫২টি ধর্ষণের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছিল তাঁদের কাছে। গত বছর সেটিই বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৫২। প্রতি বছরই বাড়ছে ধর্ষণের মামলা। অথচ. অপরাধীরা সাজা পাচ্ছেন না। ধর্ষণের মামলা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশের সাফাই, মহিলারা এখন অনেক বেশি সচেতন। তাই কিছু হলেই নাকি পুলিশের কাছে ছুটে আসছেন।
সৌজন্য :- আজকাল পত্রিকা