প্রেস রিলিজ :- দেশের তদন্তকারী সংস্থা এনআইএকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সম্পূর্ণ সংকীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে বলে দাবি করল এসডিপিঅআই। মঙ্গলবার এক প্রেস বিবৃতিতে এই দাবি করেন রাজ্য সভাপতি তায়েদুল ইসলাম। ওই বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, এ মাসের শুরুতে এ দেশের তথাকথিত এলিট তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ- র গতিবিধি ও তৎপরতা সম্পর্কে কিছুটা ওয়াকিবহাল হয়েছিলেন রাজ্যবাসী। সুপরিচিত তরুণ বিজ্ঞানী ও ভাইরাস বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পার্থসারথি রায়কে সমন ধরিয়েছিল এনআইএ। ভীমা কোঁরেগাও এলগার পরিষদ মামলায় সাক্ষ্যপ্রদানের জন্য। রাজ্যজুড়ে প্রবল প্রতিবাদের মুখে এনআইএর তৎপরতা কিছুটা পিছু হটে।
সম্প্রতি আবার তৎপরতা শুরু করেছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে মুর্শিদাবাদ এর জলঙ্গী,ডোমকল ও রানীনগর থেকে ৬ জনকে তথাকথিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়েদার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে গ্ৰেফতার করে। সংবাদে প্রকাশ, এল ডি এফ শাসিত কেরলের এর্নাকুলাম জেলার গ্রামাঞ্চলে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে যুক্ত তিনজন প্রবাসী শ্রমিককে তাদের ভাড়া বাড়ি থেকে সন্ত্রাসবাদী সন্দেহে তুলে নিয়ে যায় এনআইএর গোয়েন্দারা ঐ একই সময়ে। তাদেরও বাড়ি মুর্শিদাবাদের ডোমকল রাণিনগর জলঙ্গী অঞ্চলে। এরা সবাই মুসলিম সম্প্রদায়ের দরিদ্র যুবক।
এনআইএর পক্ষ থেকে সরকারিভাবে কিছু জানানো না হলেও সংবাদমাধ্যমের একাংশ উচ্চস্বরে এদের তথাকথিত আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়েদার সিক্রেট মডিউলের সদস্য হিসেবে তুলে ধরছে। গল্পের গরু ইতিমধ্যেই গাছে উঠতে শুরু করেছ। সংবাদ মাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে, মুর্শিদাবাদে এদের বাড়িতে নাকি গোপন সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া গেছে এবং তারমধ্যে কিছু বোমা,তার ও কিছু ইলেকট্রনিক গ্যাজেট পাওয়া গেছে। আবার স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিন রিপোর্টে জানাচ্ছেন, সুড়ঙ্গ নয়, ওটা পায়খানার সেফটি ট্যাংক বানানো হচ্ছিল। কোন কোন দৈনিক সংবাদ পত্র জানাচ্ছে ওটা স্টোররুম।এনআইএর আধিকারিকরা সাদা কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ধৃতদের পরিবারের সদস্যরা।
কেন্দ্রের শাসকদল ২০২১ এর নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছড়িয়ে ধর্মীয় মেরুকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে চলেছে। তার অংশ হিসেবে এনআইএকে দিয়ে মুসলিম সমাজের বিরুদ্ধে মুসলিম সন্ত্রাসবাদের এই ঘটনা কি না জনমানসে এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। ।সামনেই নির্বাচন। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী থেকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীরা রাজ্যের শাসকদল ও সরকারের প্রশ্রয়ে এরাজ্যে এবং কেরলে শক্তিবৃদ্ধি করছে এই প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি। বিজেপি বিরোধী কোন কোন দলের নেতৃবৃন্দ বিজেপির এই প্রচারে প্রভাবিত হয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন। তাঁরা ভুলে গেছেন, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বিজেপির প্রচারে এল ডি এফ শাসিত কেরলও আছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরো বলা হয় নির্বাচনে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মেরুকরণ,সাম্প্রদায়িক বিভাজন ও ঘৃণার রাজনীতি ফেরি করতে কোন স্বাধীন সরকারি সংস্থা বা গোয়েন্দা সংস্থার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। স্থানীয় জনগণের থেকে প্রকৃত ঘটনা জানতে রাজ্যের মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক সংগঠনগুলির দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া দরকার। গণমাধ্যমকেও স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে হবে দেশ ও জাতির কল্যাণে।