নিউজ ডেস্ক:- এবার বিহারের ভোট রাজনীতিতে নতুন খেলা । জোট বাঁধল আসাউদ্দিন ওয়াইসি ও মায়াবতী । রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ এর অভিমত বিজেপির সুবিধা করে দিতেই কি এই মহাজোট ? বিহার রাজনীতিতে তৃতীয় ফ্রন্টের উদয়। মূলত দলিত এবং মুসলিম ভোটের কথা মাথায় রেখে বিহারে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ে ফেলল আসাদউদ্দিন ওয়েইসির এআইএমআইএম এবং মায়াবতীর বিএসপি। এই তৃতীয় ফ্রন্টে বেশ কয়েকটি স্থানীয় দল যোগ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করা হয়েছে এই জোটের বৃহত্তম শরিক আরএলএসপি সুপ্রিমো তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহাকে । আরএলএসপি, বিএসপি, এআইএমআইএম (AIMIM) ছাড়াও এই জোটে থাকছে দেবেন্দ্র প্রসাদ যাদবের সমাজবাদী জনতা দল, সন্তোষ পাণ্ডের এসবিএসপি-সহ কয়েকটি ছোট এলাকাভিত্তিক দল।
বৃহস্পতিবার যৌথ প্রেস কনফারেন্সে এই ছোট দলগুলি তৃতীয় ফ্রন্টের কথা ঘোষণা করেছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে, গ্র্যান্ড ডেমক্র্যাটিক সেকুলার ফ্রন্ট। এই জোট স্পষ্টতই তৈরি হয়েছে বিহারের জাতিগত সমীকরণের কথা মাথায় রেখে। হায়দরাবাদের মুসলিম নেতা ওয়েইসি অনেকদিন ধরেই বিহারের মুসলিম এলাকাগুলিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি উপনির্বাচনে একটি আসনও জেতে তাঁর দল। অন্যদিকে বিএসপি (BSP) ঘোষিত দলিতদের পার্টি। এছাড়াও মহাদলিত, কুরমি, মল্লা-সব জাতির নেতাই আছেন এই জোটে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিহারে তৃতীয় এই শক্তির উদয় হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হল আরজেডির (RJD) নেতৃত্বাধীন মহাজোটের। যে জোট পরিসরে ছোট হতে হতে এখন বৃহত্তর ইউপিএতে পরিণত হয়েছে। কংগ্রেস -আরজেডি ছাড়া এই জোটে রয়েছে শুধু বাম দলগুলি। ফলে সামাজিক সমীকরণে এঁরা পিছিয়ে যেতে পারে। কারণ, লালুর দলের মূল ভরসা মুসলিম এবং দলিত ভোট। এই তৃতীয় ফ্রন্ট সরাসরি সেই ভোটেই ভাগ বসাবে। এই জোট যত শক্তিশালী হবে, তত চাপ বাড়বে বিরোধী মহাজোটের।
অন্যদিকে, এই জোট গজিয়ে ওঠার ফলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে বিজেপি (BJP)। বিরোধীদের মধ্যে দলিত-মুসলিম ভোট ভাগ হয়ে গেলে বিজেপির লড়াই অনেক সহজ হয়ে যাবে। তবে, বিজেপির সুবিধা হলেও খানিকটা চাপে পড়বেন নীতীশ কুমার । কারণ, উপেন্দ্র কুশওয়াহা আর নীতীশের ভোটব্যাংক প্রায় একই। এবার দু’জনেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হলে, সেখানে কিছুটা ভোট কাটাকাটিতে ক্ষতি হতে পারে নীতীশের দলের। মজার কথা হল, বিজেপিও সম্ভবত সেটাই চাইছে। কারণ, নীতীশের দল কম আসন পাওয়ার অর্থ ভবিষ্যতে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর পদও দাবি করতে পারবে। সেই সব সমীকরণ হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে এই নয়া মহাজোট সবচেয়ে বেশি উপকার করবে গেরুয়া শিবিরের। সেটাই ভাবাচ্ছে কংগ্রেস-আরজেডিকে। কংগ্রেস আগে থেকেই ওয়েইসির দলকে বিজেপির ‘বি’ টিম বলে আসছে। এক্ষেত্রেও যে তাঁর ব্যতিক্রম হবে না, সেটা বলে দেওয়ায় যায়।