নিউজ ডেস্ক :- কৃষি বিল প্রত্যাহার সহ বিভিন্ন দাবীতে কৃষকদের দিল্লী চলো অভিযান । পঞ্জাবের একাধিক কৃষক সংগঠনের ডাকে ‘দিল্লি চলো’ অভিযান ঘিরে উত্তেজনা দিল্লিতে। ২৬ ও ২৭ নভেম্বর এই অভিযান রয়েছে। হরিয়ানা সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে কৃষকদের রোখার চেষ্টা করে। দিল্লির সীমানা পয়েন্টগুলোয় চেকপয়েন্ট বসিয়ে চলছে তল্লাশি।
পঞ্জাবের কৃষকদের দিল্লি অভিযান ঘিরে টানটান উত্তেজনা দিল্লি-এনসিআরে। কোভিড বিধিকে ঢাল করে, গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে দিল্লিমুখী কৃষকদের প্রতিহত করতে মরিয়া কেন্দ্র। এমনকী হরিয়ানা পুলিশের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলা হয়েছে। যাতে দিল্লিতে ঢোকার আগেই প্রতিবাদী কৃষকদের রুখে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় নির্দেশ পালনে হরিয়ানা পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে তত্পরও হয়। দিল্লিমুখী কৃষকদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করায় সমালোচিতও হয় হরিয়ানা পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্রে করে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন সংশ্লিষ্ট দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কড়া ভাষায় হরিয়ানা পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ২৬ ও ২৭ নভেম্বর ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছে পঞ্জাবের একাধিক কৃষক সংগঠন। এদিন সকালে এই অভিযানে শামিল হয়েই দিল্লির পথে রওনা দেন পঞ্জাবের কৃষকরা।
সূত্রের খবর, রাজধানী লাগোয়া সীমানা অঞ্চলগুলিতে বৃহস্পতিবার প্রচুর পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানী শহরে ঢোকার মুখে বিভিন্ন চেকপয়েন্টে দাঁড় করিয়ে প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আন্দোলনে শামিল কৃষকেরা যাতে কোনও ভাবেই না রাজধানীতে প্রবেশ করতে পারে, সেই মর্মেই নির্দেশ রয়েছে পুলিশের কাছে। দিল্লি পুলিশের কাছে খবর রয়েছে, প্রতিবাদী কৃষকদের অনেকেই ট্র্যাক্টর নিয়ে আসছেন। তাই ট্র্যাক্টরের পথ বন্ধ করতে সিঙ্ঘু সীমায় একাধিক বালি বোঝাই ট্রাক দাঁড় করিয়ে রেখেছে পুলিশ। রাজধানীর নিরাপত্তায় ড্রোনেও চলছে নজরদারি।
দিল্লি পুলিশের এক কর্তা জানান, রাজধানী লাগোয়া কোনও সীমানাই সিল করা হয়নি। নজরদারিতে একাধিক পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। প্রতিটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চলছে। তার পরেই গাড়িগুলি রাজধানী শহরে ঢোকার অনুমতি পাচ্ছে। প্রতিবেশী শহরগুলোর সঙ্গে এনসিআরের সংযোগ থাকা দিল্লি মেট্রো ট্রেনের পরিষেবাও এদিন বেলা ২টো পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছিল। দিল্লি মেট্রো সূত্রে খবর, আনন্দ বিহার থেকে বৈশালী, নিউ অশোক নগর থেকে নয়ডা সিটি সেন্টার, সুলতানপুর ও গুরু দ্রোনাচার্য স্টেশন সেকশনে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল।
কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজাধানীর সীমানা অঞ্চলগুলির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়েছিলেন দিল্লি পুলিশ কমিশনার এসএন শ্রীবাস্তব। পুলিশ কমিশানার জানান, দিল্লিতে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ বলবত্ রয়েছে। ফলে, রাজধানীতে রাজনৈতিক সমাবেশের অনুমতি দেওয়া যাবে না। কৃষকরা দিল্লি অভিযানের কথা জানিয়ে অনুমতি চাইলে, কোভিডের কারণেই তা প্রত্যাখ্যান করতে হয়। শ্রীবাস্তব বলেন, এর পরেও কৃষকরা ‘দিল্লি চলো’ অভিযান করছেন। কিন্তু, ওঁদের রাজধানীতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। যে কারণে সীমানা অঞ্চলগুলিতে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কৃষকদের প্রতিহত করতে পঞ্জাব ও হরিয়ানা পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল বলে তিনি জানিয়েছেন।
কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ২৬ ও ২৭ নভেম্বর ‘দিল্লি চলো’ অভিযানের ডাক দিয়েছে একাধিক কৃষক সংগঠন। দিল্লি পুলিশ বুধবারই জানায়, দিল্লি অভিযানের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কোভিড গাইডলাইন ভেঙে দিল্লিতে জমায়েতের চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
সৌজন্যে :- এই সময় পত্রিকা