ওয়েব ডেস্ক : – তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের তাঁর দলের টিকিটে প্রার্থী করতে চাইলে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে সেই প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য আনুষ্ঠানিক ‘সম্মতি’ দিল জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ২০১৬ সালে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জিতে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী হয়েছেন সিদ্দিকুল্লা।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের মুখে বুধবার বাঁকড়ায় জমিয়তের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের তরফে গ্রন্থাগারমন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেই সূত্রে খবর। ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের ‘একাকিত্ব’ ও সিপিএমের ‘নীতিহীনতা’র প্রতিফলন বলেই মনে করেন সিদ্দিকুল্লা। ভোটের রাজনীতিতে আব্বাসকে ধর্তব্যের মধ্যে আনতেও নারাজ জমিয়তের নেতা। তাঁর কটাক্ষ, ‘আব্বাসের রাজনৈতিক অতীত নেই। যার অতীত নেই, তার কোনও ভবিষ্যৎও থাকে না। উনি তো নিজের ঘরেই কোণঠাসা!’
বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী অনেক কাজ করেছেন। কিন্তু সংখ্যালঘুদের বিষয়ে আরও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। আমি দলের নির্দেশে তৃণমূলের কাছে এই ব্যাপারে বক্তব্য চিঠি লিখে জানাব। আমি রাজ্য সরকারের মন্ত্রী হলেও জমিয়তেরও কর্মী। ফলে সংখ্যালঘু মানুষদের হিত ও স্বার্থ তো বিসর্জন দেওয়া যায় না।’ এ প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘ওঁরা এটা বলতেই পারেন। তাতে আপত্তির কী আছে? উনি তো সরকারের মন্ত্রীই।
অন্য দিকে সিদ্দিকুল্লা বলেছেন, ‘ওয়ার্কিং কমিটির কড়া নির্দেশ, দলের কেউ এমনকী আমিও যেন কোনও গোত্রের সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না করি। তা করলে দল দরজা দেখিয়ে দেবে। আসাউদ্দিন ওয়াইসির মিম-এর মতো শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অর্থ প্রকারান্তরে সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতার হাত শক্ত করা। সমাজের সংখ্যাগুরু অংশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় জমিয়তে।’
একদিকে মিম ও অন্য দিকে পিরজাদার আইএসএফ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসাতে পারে, রাজ্য রাজনীতিতে এই আশঙ্কা মাথা চাড়া দিয়েছে। সিদ্দিকুল্লার অবশ্য দাবি, ‘কংগ্রেসের একা চলার ক্ষমতা নেই। তাই ‘ক্রাচ’ হিসাবে নিয়েছে আব্বাসের দলকে। একসময় সিপিএম আমাকে ‘মোল্লা’ বলে গাল পাড়ত। এখন তারাই ‘মোল্লা’দের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।’
সেই সঙ্গেই মোথাবাড়ি আসনে জমিয়তের নজরুল ইসলামকে প্রার্থী করার অনুরোধ জানানো হবে মমতার কাছে। সংখ্যালঘু উন্নয়নে আরও ‘দক্ষতার সঙ্গে কাজ’ করার দরকার, জমিয়তের তরফে এই বার্তাও তৃণমূলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিদ্দিকুল্লাকে।
সৌজন্য :- আনন্দ বাজার পত্রিকা