নিউজ ডেস্ক :- যে জনসংঘ ভেঙ্গে বিজেপি তৈরি হয়েছিল সেই সে বিজেপি আই জনসংঘ বিরোধী সংঘ এবার প্রকাশ্য বিজেপি বিরোধী ,বাংলায় তারা বিজেপির বিরোদ্ধে প্রাথী দেওয়ার কথা ঘোষণা করল। এই নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে চাপানউতোর শুরু হয়েছে ।
যে জনসংঘ থেকে বিজেপির জন্ম, সেই বিজেপির বিরুদ্ধেই এবার বঙ্গের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দিচ্ছে ভারতীয় জনসংঘ । শুক্রবার গাইঘাটার ঠাকুরনগরের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এই ঘোষণা করেন ভারতীয় জনসংঘের কর্মকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন জনসংঘের রাজ্য সভাপতি সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ তিনি সম্পর্কে জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আত্মীয়। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে জনসংঘের পক্ষ থেকে বনগাঁ উত্তর, বাগদা, গাইঘাটা, হরিণঘাটা ও হাবরা বিধানসভায় দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। মোট ১৭৫ আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনসংঘ।
শুক্রবার আপাতত এই ৫ কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে জনসংঘের তরফে। ঘোষিত প্রার্থীদের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বা আছে। সুব্রতবাবু বলেন, “এবার রাজ্যের মোট ১৭৫ টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ ৫ টি কেন্দ্রের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।”
দিন কয়েক আগে বিজেপির তরফে একদফা প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়। গাইঘাটা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের দাদা সুব্রত ঠাকুর। সুব্রত ঠাকুর প্রার্থী হওয়ায় একাংশ ক্ষুব্ধ হয় দলের একাংশ। তাঁরা যোগাযোগ করেন বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বরের সঙ্গে। বুধবার দুলাল পর বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ও সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে দুলালবাবু জানিয়ে দেন, সুব্রত ঠাকুর প্রার্থী হওয়ায় গাইঘাটার হাজার হাজার বিজেপি কর্মী ক্ষুব্ধ। কর্মীরা চাইলে তিনি গাইঘাটা কেন্দ্রের প্রার্থী হতে রাজি৷ এরপরে বিক্ষুব্ধ বিজেপি দের একাংশ জনসংঘের রাজ্য নেতৃত্ব সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং গাইঘাটা-সহ কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জনসংঘের সভাপতি সুব্রতবাবু বলেন, “বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। উনি প্রার্থী হতে চেয়ে ছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে তিনি তা অস্বীকার করেছেন। বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে নিশ্চয়ই কোনও সম্মান বা অর্থনৈতিক বোঝাপড়া হয়েছে।”
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সুব্রতবাবু বিজেপির কড়া সমালোচনা করে বলেন, “শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আদর্শ থেকে বর্তমান বিজেপি সরে গিয়েছে। কর্পোরেটদের হাতে চলে গিয়েছে। মোদি ও শাহ দেশকে বিক্রি করে দিতে চাইছে। আমরা এই পরিস্থিতি থেকে দেশকে ঘুরে দাঁড়া করানোর চেষ্টা করছি। সেই কারণেই আমরা এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিলাম।” বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের প্রার্থী অরবিন্দ বিশ্বাস এবং হাবরা কেন্দ্রের প্রার্থী কিশোর বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। এর আগেও তারা বিজেপির প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেছে৷
সূত্রের খবর, এবারের ভোটে যারা প্রার্থী না হতে পেরে বিজেপির উপর ক্ষুব্ধ তাদেরকেই জনসংঘ বেছে বেছে প্রার্থী করছেন। স্বাভাবিকভাবে জনসংঘ প্রার্থী দেওয়ায় বিজেপির ভোট ব্যাংকে ফাটল দেখার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ প্রার্থী এবং প্রার্থীর সঙ্গে থাকা কর্মী-সমর্থকরা সকলেই বিজেপির কর্মী সমর্থক বলে পরিচিত৷ যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। জনসংঘ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ১৯৫১ সালে থেকে ৭৭ সাল পর্যন্ত জনসংঘ নির্বাচনে লড়াই করতো। পরবর্তী সময়ে বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি জনসংঘর নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন৷ এ বছর থেকে ফের তারা নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্য বিজেপির দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন “ভারতীয় জনসংঘ নির্বাচনে অপ্রাসঙ্গিক। ওরা প্রার্থী দিলেও কিছু এসে যায় না।”
সৌজন্য :- সংবাদ প্রতিদিন