সাংবাদিক জগতে ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন বিশিষ্ঠ সাংবাদিক কমল ভট্টাচার্য
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : সাংবাদিক জগতে ইন্দ্রপতন ঘটলো গত রবিবার (৯ মে) । চলে গেলেন বিশিষ্ঠ সাংবাদিক কমল ভট্টাচার্য (৭৬)। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী ও কন্যাকে।
কমল ভট্টাচার্যের সাংবাদিকতার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল “যুগান্তর” পত্রিকায়। “যুগান্তর” বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি “সংবাদ প্রতিদিন”এ সাংবাদিকতা করতেন। এছাড়াও তিনি বেশ কিছু ম্যাগাজিন ও আঞ্চলিক পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকা ও পোর্টাল ওয়েব নিউজকে খুবই গুরুত্ব দিতেন তিনি। এক সময়ে কমলবাবু কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতিও ছিলেন।
তাঁর সম্মন্ধে লিখতে গিয়ে নানা স্মৃতি উঠে আসছে। ২০১১ সালে আগে আমি ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (IJA) এক্সিকিউটিভ কমিটির মেম্বার ছিলাম। কমল দা তখন ওই সংগঠনের একজন কর্মকর্তা। আমি ছিলাম একটু প্রতিবাদী। সংগঠনে কারোর কোনও কাজে ভুল ত্রুটি হলেই তার প্রতিবাদ করতাম। যারফলে বেশ কিছু সুবিধাবাদী সাংবাদিক আমার উপর চটে যেতেন। কমল দা তখন নিজের দাদার মতো আমাকে পরামর্শ দিয়ে বলতেন, “কিচ্ছু বোলো না পরিমল, যে যা পারে করুক… প্রতিবাদ করে তুমি কেন শত্রু হচ্ছো…” এ ছাড়াও তাঁর কাছ থেকে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে নানা উপদেশ ও পরামর্শ পেয়েছি।
লকডাউনে গত বছর (২০২০) বেশিরভাগ সময়ই কলকাতা প্রেসক্লাব বন্ধ ছিল। লকডাউনের পর প্রেসক্লাব খুললে কয়েকবার কমল দা’র সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তখন দুজনে দুজনের কুশল বিনিময় করেছি। এমনকি গত জানুয়ারি মাসেও (২০২১) প্রেসক্লাবে তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। সেই সময় উনি একগাল হেসে আমাকে বলেছিলেন, “তোমাদের বাংলা রিপোর্টার্স গিল্ড কেমন চলছে ? সাবধানে থেকো পরিমল, করোনা কিন্তু এখনও যায়নি”… সেটাই যে তার শেষ পরামর্শ ও আমার সঙ্গে শেষ দেখা…..ভাবতেই কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে। সদাহাস্যময় এই মানুষটি যে চিরতরে হারিয়ে যাবেন কখনোই সেদিন বুঝতে পারিনি। কমল দা’র প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি। এখন এছাড়া কমল দা’কে বলার আমার আর কিছুই নেই।