লকডাউনে মানবিক মুখ ; ১১০ কিমি বাইক চালিয়ে এসে রক্ত দিয়ে এক মুসলিম শিশুর প্রাণ বাঁচালেন এক হিন্দু যুবক

Spread the love

লকডাউনে মানবিক মুখ ; ১১০ কিমি বাইক চালিয়ে এসে রক্ত দিয়ে এক মুসলিম শিশুর প্রাণ বাঁচালেন এক হিন্দু যুবক।

মহম্মদ নাজিম আক্তার,চাঁচল,১৮ মে:
মানবিকতা আজও বেঁচে আছে। মনুষ্যত্ব মানুষের মন থেকে এখনও মুছে যায় নি।যদি বিবেক, মানবিকতা আর মনুষ্যত্বের রং ফিকে হয়ে যেত তাহলে মোশারফ আলির(১৩) প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়তেন না বিপুল রায়।

জানা যায় চাঁচল-১ নং ব্লকের খোরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাবাজপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিবুর রহমানের বছর তেরোর এক শিশু মোশারফ আলি রক্তক্ষরণ অসুখে আক্রান্ত।মঙ্গলবার শিশুটির শরীরে রক্তের অভাব দেখা দিলে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।রক্ত ভান্ডারে ‘এ’ নেগেটিভ রক্ত মজুত না থাকায় চরম সংকটে পড়েন শিশুটির পরিবার।

খবর পেয়ে শিশুটির পাশে দাঁড়ান ‘উত্তরধ্বনি’ ও ‘দিশা মানবিকতার দিকে’ নামে দুই স্বেচ্ছাসেবক সংস্থার সদস্যরা। তাঁরা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন ‘ইউনিভার্সিটি গৌর বঙ্গ ব্লাড হেল্প’ এর সদস্য বিপুল রায় এর সঙ্গে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট এলাকার বাসিন্দা বিপুল রায় ১১০ কিমি বাইক চালিয়ে এসে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচান শিশুটির।

ছেলের জীবন ফিরে পেয়ে মোশারফের বাবা মজিবুর রহমান জানান ‘উত্তরধ্বনি’ ও ‘দিশা মানবিকতার দিকে’ সদস্যদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। হঠাৎ করে ছেলের রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। লকডাউনের মধ্যে রক্ত জোগাড় করা কার্যত অসম্ভব ছিল।দিশেহারা হয়ে পড়ি।
তারপর তাঁরা যেভাবে রক্ত দেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন তা দেখে আমি অভিভূত। এই সময় তাঁরা আমার পাশে না দাঁড়ালে ছেলেকে বাঁচতে পারতাম না। আমি তাদের কাছে চিরঋণী হয়ে থাকব।”

রক্তদাতা বিপুল রায় এটাকে তার নৈতিক দায়িত্ব বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “মানুষ হয়ে মানুষের বিপদে এগিয়ে যাওয়া কর্তব্য। বেশি কিছু করি নি। আর মোশারফ আমার ভাইয়ের মত।একবার নয় আবার লাগলে আবার রক্ত দেব।
মোশারফের এবং তার পরিবারের চিন্তার কিছু নেই। আমরা সবসময় ওর খোঁজ নেব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.