মন্ত্রী না হতে পারার আফশোস শুভেন্দুর! “আমি এখন আর মন্ত্রী নই” নিজেই জানালেন আফশোসের কথা
‘প্রশাসনের বার্তার দিকে নজর রাখুন’, ‘যশ’ মোকাবিলায় মমতার উপরই আস্থা দলত্যাগী রাজীবের!
ওয়েব ডেস্ক :- : বরাবরই রাজ্যের বিরোধিতায় সুর চড়িয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করার একটি সুযোগও ছাড়েননি যে দিলীপ ঘোষ , এবার তাঁর গলাতেই অন্য সুর। ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ মোকাবিলায় রাজ্যের ভূমিকার প্রশংসা করলেন বিজেপি সাংসদ ।
বুধবার সকালে ঘূর্ণিঝড় বালেশ্বরে আছড়ে পড়লেও মঙ্গলবার রাতভর প্রবল বৃষ্টিতে ভিজেছে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত। বুধবার ভোর থেকে দিঘার পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াল রূপ ধারণ করছে। ক্রমশই বাড়ছে হাওয়ার বেগ। প্রায় ৩০ ফুট জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। নারকেল গাছের উপর দিয়ে সমুদ্রের ঢেউ গিয়েছে বলেও দাবি অনেকের। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার প্রত্যেকটি হোটেল জলমগ্ন। এমনকী হোটেলের সামনে থাকা গাড়িও ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। দিঘা , শংকরপুরের বিস্তীর্ণ রাস্তা হয়ে গিয়েছে জলমগ্ন। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী দিবারাত্র নজর রাখছেন ।
দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন, “আমফানের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার রাজ্য সরকার যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে ভাল কাজ করেছে। ঝড় নিয়ে উপকূলের মানুষকে সতর্ক করেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই বোঝা যাবে ক্ষয়ক্ষতি। তবে আপাতদৃষ্টিতে সব কিছু ঠিক হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে।” আমফানের পর বারবার রাজ্যকে বিঁধেছে বিজেপি। ত্রাণ থেকে ক্ষতিপূরণ সবেতেই তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। সেই নেতার গলায় এবার অন্য সুর।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে এবারে প্রকাশ্যেই আফসোস করলেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন মন্ত্রিসভায় জায়গা না পাওয়ার আফসোস।
গতবছর আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ের সময় শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্যাবিনেট মন্ত্রী। হাতে ছিল রাজ্যের সেচ দপ্তর, পরিবহন দপ্তর, হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি চেয়ারম্যান পদ থেকে শুরু করে অসংখ্য সরকারি দফতরের দায়িত্ব। কিন্তু এবারে তিনি সে সমস্ত ক্ষমতার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেননি।
তাই বিতর্কিতভাবে হলেও এখনো পর্যন্ত নন্দীগ্রামের বিধায়ক হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী যে বিশেষ কোনো কাজ করতে পারবেন না, তার শিকার করে নিয়ে কার্যত আফসোসের সুরে শুভেন্দু বলেন, “আমি এখন মন্ত্রী নই। সরকার-প্রশাসনের সঙ্গে যে কাজটা গতবছর করতে পেরেছিলাম, সেটা হয়তো এবার করতে পারব না। আপনাদের সঙ্গে রয়েছি।”
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’। রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে দুর্যোগ। সকাল থেকেই জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে বৃষ্টি। ফুঁসছে সমুদ্র। চুঁচুড়ায় আছড়ে পড়েছে টর্নেডো। পাণ্ডুয়ায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। এদিন টুইটে তিনি বলেন, “প্রবল ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে। আপনারা কেউ ঘর থেকে বেরবেন না। ঘরের ভিতরে থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন। প্রশাসনের বার্তা ও ঝড় সংক্রান্ত বার্তার দিকে নজর রাখুন। সবসময় মাস্ক পড়ুন। ঘন ঘন সাবান জলে হাত ধুয়ে নিন। অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন।” বিজেপি নেতার এই সতর্ক বার্তা নিয়েই শুরু হয়েছে সমালোচনা। কারণ, তৃণমূলত্যাগী নেতা প্রশাসনের বার্তার দিকে নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যবাসীকে। তবে কি বিজেপি যোগের কয়েকমাসের মধ্যেই মোহভঙ্গ হল তাঁরও? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত ‘সৈনিক’দের মধ্যে অন্যতম একজন ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’বারের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। গতবছর ডিসেম্বর মাস থেকেই তাঁর আচার-আচরণ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। একাধিক সভায় প্রকাশ্যে দল বিরোধী মন্তব্য করেছিলেন তিনি। অবশেষে আশঙ্কা সত্যি করে মন্ত্রী ও বিধায়ক পদ ত্যাগ করেন তিনি। যোগ দেন পদ্ম শিবিরে। দলবদলে একুশের নির্বাচনে ডোমজুড় আসনে বিজেপির হয়ে লড়াই করেন রাজীব। কিন্তু জয়ের মুকুট ওঠেনি মাথায়।