ইয়াস তান্ডবের প্রভাবে কান্দিসহ মুর্শিদাবাদে, ক্ষতির মুখে পাট চাষীরা
জৈদুল সেখ অয়ন বাংলা (ABN TV), কান্দি :-
ইয়াস ঝড়ের প্রভাবে বুধবার থেকেই মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে নেমে এসেছে ঝড়ো হাওয়া তার সঙ্গে নিম্নে চাপ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মুষলধারে ভারী বৃষ্টি যার ফলে কান্দি মহকুমা তো বটেই মুর্শিদাবাদের পাটচাষীদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাজ। কান্দী মহকুমার তেলকার মাঠ , হিজল বিলের মাঠ, খড়গ্রাম, এবং ভরতপুরের বিস্তৃন্য অঞ্চলে জুড়ে ধান চাষের পাশাপাশি পাট এবং তিল চাষ হয়। উল্লেখ্য কিছুদিন আগে শিলাবৃষ্টির ফলে ব্যাপকভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সদ্য বোনা পাট এবং পাঁকা ধানের অনেকেই কষ্ট করে জল থেকে তুলেছে পাঁকা ধান, তার উপরে এবারে পাট এবং বোরো ধানে যেন গোঁদের উপর বিষফোড়া!
সবেমাত্র পাট বুনেছে কোথায় হাঁটু পর্যন্ত কোথায় বা মাথা উচুঁ করে দাড়িয়েছে, বৃহস্পতিবার লাগাতার বৃষ্টির ফলে গোকর্ণ, কান্দির আন্দুলিয়ার মাঠগুলোতে বৃষ্টির জল জমতে শুরু করে দিয়েছে
জমা জলেও ক্ষতি হতে পারে ফসলের। গোড়ায় জল জমে বিভিন্ন ছত্রাকঘটিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে৷ ফলে পাট বেড়ে উঠার আগেই নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখে চিন্তার ভাঁজ কপালে চাষীদের।
এর সঙ্গে মাঠে এই মুহূর্তে ফসলের মধ্যে পাট, তিল, বিভিন্ন সব্জি, ভুট্টা ইত্যাদি রয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিপক্ক অবস্থায় রয়েছে তিল। অথচ সেটা পুরোপুরি তুলে আনবার মত হয়নি এইভাবে আর দুএকবার বৃষ্টি হলে জলে নষ্ট হবে তিলও।
কান্দি বিডিও নীলাঞ্জন মন্ডল জানান ” ইয়াস ঝড়ের প্রভাব কান্দিতে সেভাবে পড়েনি বাড়ি ঘর ক্ষতির কোনো খবর এখনো পর্যন্ত নেই তবে আজ সকাল থেকেই ভারি বৃষ্টির ফলে কিছু নিচু এলাকায় জল জমে পাট এবং তিলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ”
মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি, ভরতপুর, খরগ্রাম, হরিহরপাড়া ও সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই পাটচাষের উপরে নির্ভরশীল। এছাড়া জেলার অন্যান্য এলাকাগুলিতেও পাটচাষ হয়।
পাট চাষীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ সরকার চাষিদের কথা চিন্তা করে না। তাদের মাধ্যমে মহাজনরা উপকৃত হয়। কারণ পাট ওঠার সময় চাষিরা দাম পান না। তাঁরা মহাজনদের কাছ থেকে লোন নিয়ে চাষ করতে হয়, তাই লোনের টাকা পরিশোধ করার জন্য জমি থেকে পাট তুলে কম দামে বিক্রি করে দিতে হয়। পরে দাম ওঠেলেও। তখন চাষিদের কাছে আর পাট থাকে না। মহাজনরা তা আড়ৎ থেকে বেশি দামে বিক্রি করে।
কোভিড পরিস্থিতিতে এমনিতেই কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছে, এই ‘ইয়াস’ পরবর্তী সময়ে আরও কঠিনতর হতে পারে কৃষকের জীবন। ঘূর্নিঝড়ে ভয়ানক ক্ষতি হতে পারে পাটের। নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে ভেঙে যেতে পারে গাছ। তাছাড়াও বিভিন্ন গ্রীষ্মকালীন সবজি যেমন পটল, উচ্ছে, ঝিঙ্গে, ভেণ্ডি প্রভৃতি রয়েছে মাঠ জুড়ে।