পশ্চিমবঙ্গে ডব্লুবিসিএস এবং গবেষণা হোক বাংলা ভাষায়
জয়দেব বেরা :- ‘ডব্লুবিসিএস’ হল ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস যা পশ্চিমবঙ্গের পিএসসি এর সবথেকে বড়ো পরীক্ষা।পশ্চিমবঙ্গে এতদিন এই পরীক্ষায় বাংলা ভাষার উপর কোনো স্পেশাল পেপার বাধ্যতামূলক ছিলনা।কিন্তু ভারতের অন্যান্য রাজ্যে এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যের নিজ ভাষার উপর স্পেশাল পেপারে পরীক্ষা দিতে হয়।যেমন- গুজরাটে ১৫০ নম্বরের গুজরাটি,বিহারে ১০০ নম্বরের হিন্দি, মহারাষ্ট্রে ১০০ নম্বরের মারাঠি ইত্যাদি।কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গ এই নিয়মের ব্যাতিক্রম ছিল।বাংলা পক্ষ সংগঠন তথা বাঙালির দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বর্তমান সরকার গত ১৫ ই মার্চ ২০২৩ সালে গেজেট নোটিফিকেশন করে জানিয়ে দিয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গে ডব্লুবিসিএস পরীক্ষায় এবার থেকে ৩০০ নম্বরের বাংলা পেপার বাধ্যতামূলক হবে।কেবলমাত্র পাহাড়ের নেপালিদের জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।কিন্তু দুঃখের বিষয় এই বিষয়কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিভিন্ন চক্রান্ত করছে , যাতে বাংলা ভাষা এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক না হয়।যেটা একেবারে উচিত কাজ নয়।বাংলায় থেকে বাংলা ভাষার বিরোধিতা করা একেবারেই অনুচিত ও লজ্জার বিষয়।যেহেতু অন্যান্য সমস্ত রাজ্যে, রাজ্যের নিজ ভাষার পেপারে উপর পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম বাধ্যতামূলক রয়েছে তাই পশ্চিমবঙ্গেও এই নিয়ম (বাংলা ভাষা) বাধ্যতামূলক করা কোনো ভুল উদ্যোগ নয়।পশ্চিমবঙ্গে থাকুক বাঙালির অধিকার ও বাংলা ভাষার অধিকার।এছাড়াও ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যে যেমন নিজ ভাষায় গবেষণা(এমফিল,পিএইচডি) করা যায় তেমনি আমাদের রাজ্যেও বাংলা ভাষায় গবেষণা করার সুযোগ প্রদান করতে হবে।বাংলা ভাষায় গবেষণা করার সুযোগ প্রদান করলে বাঙালি শিক্ষার্থীদের গবেষণা করার আগ্রহ অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।তাই বলবো পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষাতে গবেষণা করার সুযোগ দেওয়া হোক।বাংলা ভাষাকে নিয়ে পাশ্চাত্য দেশগুলিতে খুব চর্চা হচ্ছে এবং ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য গুলিতে হিন্দি সহ অন্যান্য ভাষায় যদি গবেষণা করা যায় তাহলে পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষায় কেনো গবেষণা করা যাবেনা।তাই বলবো,পশ্চিমবঙ্গে ডব্লুবিসিএস এর পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষায় গবেষণা করার ক্ষেত্রে বাংলা ভাষাতে গবেষণা করার সুযোগ প্রদান করা উচিত।
(লেখক তরুণ কবি, প্রাবন্ধিক, সমাজকর্মী, গেস্ট লেকচারার এবং সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক)