‘লুনাটিক’স্ হাট’ নাকি ‘জেলখানা’…? ‘চন্দ্রাহতের কুটির’ নাটকটি ঐতিহাসিক নির্মাণ করলেন পৃথ্বীশ রাণা

Spread the love

‘লুনাটিক’স হাটের ‘জেলখানা’…? ‘চন্দ্রাহ্তের কুটির’ নাটকটি চন্দ্র ঐতিহাসিক নির্মাণ পৃথ্বী রাণী

ফারুক আহমেদ

চাঁদের রাত পাহাড়ের রূপ দেখতে গিয়ে বরফে মারা গিয়েছিলেন ‘লোটাস ইটার’-এর শার্ট। প্রেমের জন্য চন্দ্রাহত বার কে? মনোতোষ আর শোও যখন পাহাড়ের দুই ঢাল বেয়ে এসে হাজির হন, যেখানে পরাস্তব আর বাস্তব হাতধরি করে দেখায়। মার্জিয়া জাদুবাতার পরতে-পরেস্তর ঐশ্বর্য সৃষ্টি করছে এই নির্মাণে। জিজ নিদান হাঁকা ‘জাগতে রহো’ কথা করিয়ে দেয় শিখণ্ডী সিস্টেম নগ্নতাকে। যে শিবিরে বন্দি যত উন্মাদের আর্তনাদ-আকুতি, সমবেত সঙ্গীতের শতজলঝরনার উচ্ছ্বাস ভেসে আসে। চরিত্রটি ভিতর দিয়ে প্রবাহিত জিনিষ ধারাভাষ্য। ব্যক্তিগত বিশ্বাস, মতাদর্শ, আবেগ-অনুভূতি যেখানে বিশ্বনাগরিকের সর্বজনীন রূপান্তরিত হয়। আপনার মূল ধারাটি ক্লাসিক হওয়া, চেরি ফুল ফোটে, জাগতিক বন্ধন করছি ‘রাজার চিঠি’ আসে, ছুটির খবর আসে, মুক্তির হাওয়া হয় নির্ন্তর, বছর-দিমাস ভোগ মনোরোষ বা শোর যুগলবন্দি গণ যেখানে ছয় দল আসে ‘ চন্দ্রাহতের কুটির’-এ। ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, নির্দেশক, কারিগরি করুকার্য, অভিনয়দের নিপুণ ছন্দরীতি এবং সঙ্গীত যেখানে মহাবিত হয়ে ভেসে এসে নাট্যের এক আশ্চর্য মেলবন্ধন ঘৃণা! চিন্তার তোরে ঘা দেয়, ঠিক মেঘে ঘন্টার মতো।

ডার্ক স্টুডিও প্রযোজ্য এবং নাটকীয় নিবেদিত রবিশঙ্কর বল- লেখা অবলম্বনে ‘চন্দ্রাহতের কুটির’ এক অনবদ্য নাট্য রূপ উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়-এর এই নাটকের তবু এই নাটকের সমালোচনা নিজেই। পৃথ্বীশ রাণা বারবার তৈরি করেছেন তার অপরূপ চিন্তার শক্তি। আগেও বিভিন্ন নাটকে তার মঞ্চ ও আলোর কাজ আমাদের অভিভূত হচ্ছে। আপনি আবার জাত চেনালেন তার। পৃথ্বীশকে নিয়ে আরো অনেক কিছু আছে, এছাড়াও অভ্র দাগুপ্ত এই নাটকের মঞ্চ ও আলোকিত। তরুণ প্রতিভা। এক টুকরো যেনো মঞ্চের কুটির উপর আছে। একটি ইমব্যালেন্স মম, যার অংশই ঠিক নয়, কুটিরে থাকা চরিত্রের চরিত্রের মতোই। তার সঙ্গে যোগ্যসঙ্গত আলোকপাত করেছে। পৃথ্বীশ-এর পর, এই প্রজন্মের এই প্রথম কেউ আলোচনা মঞ্চ এবং আলোক আলোচনায় থাকতে পারেন। আহা, কত রংঙে রং দিয়েও, এত এতটা একটা আলো তৈরি করা যায়, এবং আলো দিয়েও যে অন্ধকার তৈরি করা যায়, তা কিন্তু বাংলা থিয়েটারে বিড়ল। এছাড়াও নজর কেছেন, সৃজনশীল সঙ্গীত নির্মাতা দেবরাজ ভট্টাচার্য। সঙ্গীত তন্ময় পাল। আবহ বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। পোশাক মৌমিতা দত্ত। অঙ্গবিন্যাস বুদ্ধদেব দাস। রূপসজা সুরজিৎ পাল। মঞ্চ উপকরণ পার্থ সারথি সরকার। প্রথম উসফুল ৭ জুলাই ২০২৪ শুক্র মিনার্ভা থিয়েটার দর্শকদের মুখরিত শোভন করা হয়েছে।

মনের আকাশ স্থান দাগ নির্দেশ ‘চন্দ্রাহতের কুটির’। অপূর্ব সুন্দর পরিবেশন দর্শকদের মনে গভীরভাবে বিশেষ বার্তা দিয়ে দেখা যায় এই নাটকটি। মাদকদ্রব্য থেকে দূর থাকার বার্তা। দর্শকদের ভক্ত করে নবাগত নেতাদের তুখোড়। পৃথ্বীশ রাণা সমাজকে এই সময়কে মনে করতে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করা এই থিয়েটার নির্মাণের মধ্য দিয়ে। নাট্য আকাদেমি প্রাপ্ত, পৃথ্বীশ রানা নাট্য প্রশিক্ষণকারী একজন স্বনামধন্য নারী। খুব ছোট পুরানো নাটকের অভিনয়ের হাতেখড়ি দেখতে ২০০৯ শেষ কাল কালীন্দী ব্রাজন নাট্যদান করেন। নেতৃত্ব বিভিন্ন প্রযোজ্য মঞ্চে আলোচনা, আলোচনার পরিকল্পনা বা কারিগরি সহায়তা এ্যাক্টিভিটি নিজস্ব শৈল্পিক চেতন ও নৈপুণ্য প্রকাশ ঘটান। পৃথ্বীশ রানা মঞ্চ পরিকল্পক বা আলোক পরিকল্পক ক্যানভাসার, ব্যোমকেশ, জায়মান, আনন্দীবাই, চন্দ্রগুপ্ত, হাজু মিঞাঁর কিসসা, পদগোখরো, তক্ষক, য্যাসা কাত্যাসা, চিরকুমার কাঁঠার সভা, হড়পা বান, হাঁসুলি বাঁক, মুথাক উপকথা , অমূল্যর মধুর, মেঘে ঢাকা তারা, বোমা, পড়ে পাওয়া ষোলো আনা, তিন তস্কর, ভয়, অরণ্যদেব, দেবদাস, বিবর, উল্লঙ্গ প্রজা পরিহিত, ট্যাঙ্কি সাফ, গিরিগিটি, নাসিকা পুরাণ, আলাম ও পদ্মাবতী, পিতৃভূমি, বিনয়ের জীবন প্রভৃতি। এছাড়াও বিভিন্ন নাটকে নিজের কর্মদক্ষতা প্রদর্শন করেন। ছোটদের নিয়ে থিয়েটারের কাজ করেছেন বেশ কিছু। যেমন তাসের দেশ, লক্ষ্ম শক্তিশেল, চাঁদের পাহাড়, ডমরু চরিত কথা, ভোম্বল সর্দার, পাণ্ডব গোয়েন্দা প্রভৃতি নাটক। কারিগরি সহায়ক হিসাবে কাজ করেছেন দুঃখের চেনা সুখ, সিনেমার মতো, কে?, নির্বাচন ২০১৪, আলতাফ গোমস্, অদ্য শেষ রজনী, ২১ গ্রাম, পাঁচের পাঁচালী, মীরজাফর প্রভৃতি নাটকে। পশ্চিমবঙ্গ পাকিস্তানের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর অধীনস্থ মিনাভা নাট্য সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রে বেশ কিছু বছর কো-অর্ডিনেটর পদে চাকরি করেন পৃথ্বীশ রানা। পৃথ্বীশের তুখোড় শেষ ও নির্দেশনা ইতিপূর্বে প্রায় ১০০টি শো হাউস ফুল নাটক ‘বাদাবন’ দর্শকদের মনে গভীর দাগ সংগ্রাম চেষ্টা।
এই ডার্ক স্টুডিও প্রযোজ্য ‘চন্দ্রাহতের কুটির’ চাঁদের আলোর অন্ধকারে অমাবস্যার গান প্রচারও থিয়েটার দর্শকদের উপহার পাওয়া পৃথ্বীশনা। ‘চন্দ্রাহতের কুটির’ থিয়েটারে যাঁরা উল্লেখ করেছেন আবার, পার্থসারথি সরকার-মনোতোষ বসু। নীলাঞ্জন গাঙগুলি-মাৎসুও বাশো। প্রলয় দত্ত-বঙ্কিম। রাজরাখাল-হিরালাল। সন্দীপ বিশ্বাস-কপিল। স্বগত চ্যাটার-ইকবাল। সৌপর্ণ পাত্র-মনময়। মৌমিতা দত্ত-চেরী।
বিভাব করে সকল দর্শকদের।
দ্বিতীয় শো ১৪ জুন জুন মধুসূদন ম ৬.৩০।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.