এ পি ডি আর এর ২৮ তম রাজ্য সম্মেলন।
নিজস্ব সংবাদদাতা, লালগোলা, মুর্শিদাবাদ: ৫০ পার হওয়া মানবাধিকার সংগঠন এ পি ডি আর এর দুদিন ব্যাপী (১৫ এবং ১৬ই আগস্ট )২৮তম রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মুর্শিদাবাদ জেলার লালগোলার ঐতিহাসিক এম এন একাডেমী উচ্চ বিদ্যালয়ে। রাজ্য সম্মেলনের আয়োজক ছিল এপিডিআর লালগোলা শাখা। ১৫ ই আগস্ট বেলা ১১ টার সময় লালগোলা স্টেশন থেকে মিছিল করে লালগোলা শহর পরিক্রমা করে কর্মসূচির সূচনা হয়। মিছিল গিয়ে এম এন একাডেমিতে শেষ হয়। এরপর বিদ্যালয়ের বিশাল হল ঘরে শুরু হয় প্রকাশ্য সভা। প্রকাশ্য সভায় বাইরে থেকে আমন্ত্রিত অনেকেই বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বর্তমান বিশ্বে তথা আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস কিভাবে মানুষের মানবাধিকার হরণ করে চলেছে তা তুলে ধরেন। মানবাধিকার সংগঠন সিপিডিআরএস এর কার্যকরী সভাপতি দেবাশীষ ব্যানার্জি তার বক্তব্যে আর জি কর এবং দেশের অন্যান্য প্রান্তে যেভাবে নারীদের উপর অত্যাচার ধর্ষণ করে খুন করা হচ্ছে তা অত্যন্ত আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করছে বলে তার অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি ধর্ষকদের এবং খুনীদের উপযুক্ত সাজার দাবি করেন। প্রকাশ্য সমাবেশের পর শুরু হয় সদস্যদের নিয়ে সম্মেলন। পাঁচজনের সভাপতি মন্ডলী তৈরি করা হয়। এই পাঁচজন ছিলেন, সনৎ কর, অরূপ দাশগুপ্ত, জয় গোপাল দে, জয়নুল আবেদীন এবং মিলন মালাকার।
এরপর খসড়া প্রতিবেদন পেশ করেন এবং পাঠ করেন সম্মেলনের আহ্বায়ক রাংতা মুন্সী। প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংকট , বিশেষ করে জায়নবাদী মানবাধিকার হরণকারী ইসরাইল যেমনভাবে অসহায় প্যালেস্তিনিদের উপর নির্মম আক্রমণ করে চলেছে, এবং দেশে চলমান মানবাধিকার হরণের দিকগুলি তুলে ধরা হয় এবং কিভাবে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে ভবিষ্যৎ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে তার দিশা ব্যক্ত করা হয়।তারপর শুরু হয় প্রতিবেদনের উপর সদস্যদের সুচিন্তিত বক্তব্য পেশ করার পালা। সদস্যরা তাদের চিন্তিত অভিমত এবং প্রতিবেদনে আরো কোন কোন জিনিস থাকা দরকার তা তুলে ধরা হয়। রাত আটটার সময় প্রথম দিনের সম্মেলনের কাজ শুরু হয়। পরের দিন প্রাতরাশ খাওয়ার পর শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের সম্মেলনের কাজ। সদস্যদের প্রতিবেদনের উপর বক্তব্য রাখার পর, কোষাধ্যক্ষ দু বছরের হিসাব পেশ করেন। আহ্বায়ক জবাবি ভাষণ দেওয়ার পর , সভাপতি মন্ডলীর পক্ষ থেকে প্রতিবেদন এবং বাৎসরিক হিসাব অনুমোদনের জন্য সকলের কাছে হাত তুলে সমর্থন চাওয়া হয়। উপস্থিত সদস্যরা হাত তুলে সমর্থন জানান। আগামী দু বছরের সভাপতি এবং সম্পাদক ও সম্পাদক মন্ডলীর নাম ঘোষণা করা হয়। বিশিষ্ট আইনজীবী রাংতা মুন্সি সর্বসম্মতিক্রমে সংগঠনের সম্পাদক নির্বাচিত হন। এপিডিআর এর ৫২ বছরে ইনিই হলেন প্রথম নারী সম্পাদক। সর্বসম্মতিক্রমে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন বেলডাঙ্গা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সনৎ কর । ৪৫ জনের সম্পাদক মন্ডলীর নামও এদিন সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণা করা হয়।এরপর সামান্য কিছু আলোচনার পর সংগঠনের সম্মেলন সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।
এই সম্মেলনে প্রায় ২৪০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। প্রকাশ্য সভার সভাপতি ছিলেন সনৎ কর এবং সঞ্চালক ছিলেন লেখক এবং কবি জয়নুল আবেদীন