সকল শিক্ষা বহির্ভূত কাজ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে মুক্ত করার দাবি নিয়ে ডেপুটেশন দিল প্রধান শিক্ষক সংগঠন….
মোমিন আলি লস্কর ও তপন কুমার দাস (উত্তর ২৪ পরগনা)
গতকাল(১২/১১/২৪) আমাদের সবার প্রিয় সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস( এ এস এফ এইচ এম) এর পক্ষ থেকে রাজ্যের শিক্ষার সদর দপ্তর বিকাশ ভবন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং কারিগরি ভবনে বাংলা শিক্ষা পোর্টালের “তরুণের স্বপ্ন” প্রকল্পে ট্যাবের টাকা বিভ্রাট বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের পথ খোঁজা হয় এবং বিদ্যালয় প্রধানদের এ বিষয়ে কাঠগড়ায় না রেখে উচ্চ পর্যায়ের সিআইডি,লালবাজার কিংবা জেলা সাইবার সেলের মাধ্যমে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। বাংলা শিক্ষা পোর্টালের সাইবার সুরক্ষার দাবিও জানানো হয়েছে। সকল শিক্ষা বহির্ভূত কাজ থেকে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাকে মুক্ত করার দাবীও জানানো হয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আমাদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড আগেকার মতোই ক্যাম্প অফিসের মাধ্যমে বিতরণ করবে। আমরা বোঝাতে পেরেছি যে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডের গুরুত্বের সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক কিংবা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিট কার্ডের গুরুত্ব সমতুল না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের সাথে সমন্বয় রেখেই কাজ করতে ইচ্ছুক। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরকেই দেখতে হবে। বৃত্তিমূলক শাখার যে সকল ছাত্র-ছাত্রী ট্যাবের টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, অবিলম্বে তাঁদের যুক্ত করার দাবি জানানো হয়েছে। ঐ সকল বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমাদের দাবিগুলো খতিয়ে দেখবেন এবং নিরসনের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা আশাবাদী। গতকাল অনেক রাত পর্যন্ত মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেটের সঙ্গে সকল শিক্ষা বহির্ভুত কাজ থেকে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাগণকে মুক্ত করে বিদ্যালয় শিক্ষার আঙিনায় ফেরানোর দাবি নিয়ে জনস্বার্থে মামলা করার বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। গতকালের এই ডেপুটেশনে অংশ নিয়েছিলেন প্রিয় সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ড: হরিদাস ঘটক, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক শ্রী চন্দন মাইতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উল্লেখ করার বিষয় এই যে বর্ধমান জেলার কয়েকজন প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা জেলা সাইবার সেলে উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্র-ছাত্রীদের ট্যাবের টাকা বিভ্রাটের বিষয়ে অভিযোগ জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বর্ধমান জেলা পুলিশ মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে বাংলা শিক্ষা পোর্টাল হ্যাক করে ট্যাবের টাকা লোপাটের সঙ্গে যুক্ত থাকায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে। আমরা এই পদক্ষেপকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আর অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের চারজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ এবং লব্ধ প্রতিষ্ঠিত প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে জেলা সাইবার সেলে অভিযোগ জানালে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক নিজেদের দোষ ঢাকতে ঐ চারজন প্রধান শিক্ষকের নামে জামিন অযোগ্য ধারায় তমলুক থানায় মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে সংগঠনের প্রিয় রাজ্য সভাপতি ড: হরিদাস ঘটক এবং জেলা সম্পাদক মৃন্ময় মাঝির নেতৃত্বে শতাধিক প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা জেলা শাসক জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করে অবিলম্বে ঐ চারজন প্রধান শিক্ষকগণের নামের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানান এবং স্মারকলিপি জমা দেন। পুলিশ তদন্তে নামে এবং ঐ চারজন প্রধান শিক্ষককে গ্রেপ্তার করার মতো কোনো তথ্য না পাওয়ায়। সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এখনোও পর্যন্ত আমাদের সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও আশাবাদী রাজ্যে কোথাও আর একজনও কোন প্রধান শিক্ষকের নামে এ ধরনের কোন মামলা দায়ের হবে না এবং জেলা তথা রাজ্য শিক্ষা দপ্তর সহ রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের শাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণের মান সম্মান, সামাজিক মর্যাদা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা বজায় রাখবে। রাজ্যের হাই স্কুল এবং হাই মাদ্রাসার আমাদের প্রিয় সংগঠনের সদস্য সদস্যগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে তাঁরা যেন এ বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকেন, মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকুন, বেঁধে বেঁধে থাকুন। আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের সংগঠনের আইনজীবীর সঙ্গে সকল শিক্ষা বহির্ভূত কাজ থেকে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাকে মুক্ত করার আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করার আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছি।আমাদের রাজ্যের এই প্রিয় সংগঠন রাস্তায়, সরকারি দপ্তরের এবং প্রয়োজনে আইনের লড়াইয়ের মাধ্যমে সংগঠনের প্রিয় সদস্য- সদস্যাগণকে হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা,লড়াই,আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এ লড়াই লড়তে হবে- এ লড়াইও জিততে হবে। “এ এস এফ এইচ এম” দীর্ঘজীবী হোক।