ফেলে আসা দিন,নিজ গ্রামকে আজোও মনে রাখে রায় পরিবার

Spread the love

ফেলে আসা পথকে ভুলবেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা,কান্দী:-   মানুষ যখন ছোট থেকে বড় হয়ে, বিখ্যাত হয়ে যায়, তখন বেশিরভাগ মানুষ পিছনের পথ টা কে ভুলে যান। ভুলে যান ওই পথ দিয়ে হেঁটেই তিনি উচ্চাসনে আসীন হয়েছেন বা হয়েছিলেন। ভুলে যান ছেলেবেলার সেই প্রথম শিক্ষালয়কে অর্থাৎ প্রাথমিক বিদ্যালয় কে। এমন তরো আবহ থেকে এক্কেবারে অন্যরকম ভাবনা নিয়ে ডক্টর আলোক রায় ভুলে যাননি তার সেই প্রথম শিক্ষালয় কে। মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমার একটি স্বনামধন্য গ্রাম খোশবাসপুর। এই গ্রামেরই সর্বজন শ্রদ্ধেয় পরিবার “রায় পরিবার “।

স্বর্গীয় সুধাংশু বদন রায় এবং উমারাণী রায়ের বংশধররা আজ ফুলে ফলে বিকশিত হয়ে এক মহীরুহে পরিণত হয়েছে। এই রায় পরিবারের কৃতি সন্তানেরা কর্মসূত্রে থাকেন আমেরিকা সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে। এই রায় পরিবারের একজন কৃতি সন্তান ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টারের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়ার সায়েন্টিস্ট ড: আলোক রায় ২০১৫ সাল থেকে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় খোশ বাসপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির মেধাবী ও দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মবিশ্বাস ও উৎকর্ষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নগদ অর্থ ও শংসাপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। একটি মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঐ সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের নগদ অর্থ এবং শংসাপত্র প্রদান করা হয়। ডক্টর আলোক রায় জানালেন আমার ঠাকুরমা উমারানি রায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে যারা মেধাবী ও দুস্থ, তাদের হাতে উমারানী স্মৃতি পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় । গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের নাচ এবং গানে উৎসাহ দেবার জন্য আমরা চালু করেছি, আমার ভাই কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী স্বর্গীয় আশিস রায়ের নামে আশিস রায় সাংস্কৃতিক পুরস্কার। আমাদের এই অনুষ্ঠান এ বছর দশম বর্ষে পদার্পণ করল। মাঝে ২০২১ এবং ২২ সালে কোভিডের জন্য অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি। এই অনুষ্ঠানটি একটি পারিবারিক মিলনমেলায় পরিণত হয়। এখানে পরিবারের সকলেই যোগদানের চেষ্টা করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রায় পরিবারের দৌহিত্র এবং রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর নাতি নিত্য সুন্দর ত্রিবেদী মহাশয়। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রায় পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ নাতি বহরমপুরের খ্যাতনামা ব্যবসায়ী সুখেন্দু বিকাশ রায়। খ্যাতনামা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ডাক্তার চন্দন রায়। রায় পরিবারের নাতনী আমেরিকায় গবেষণারত অন্তরা রায় শিশুদের মাঝে চকলেট বিতরণ করে নজর কেড়েছেন। অনুষ্ঠানে না আসতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বায়ো অ্যানালিটিক্যাল সিনিয়র সায়েন্টিস্ট অর্পিতা রায়, এসএন বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সাইন্স এর প্রাক্তন ডাইরেক্টর ডক্টর সমিত কুমার রায়, আমেরিকা বাসি এডভোকেট অনিন্দ্য রায়। খোসবাসপুর গ্রামের তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের 30 জন ছাত্রছাত্রীদের হাতে উৎসাহ ভাতা ও শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।

বিশিষ্ট সমাজসেবী ও সাংবাদিক শ্রী চ্যাটার্জী তিনজন মেধাবী ও দু:স্থ ছাত্র-ছাত্রীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। সুন্দর এই অনুষ্ঠানটি এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রী মহলে প্রচন্ড উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঞ্চার করেছে। সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন রায় পরিবারের আত্মীয় প্রদীপ রায় ও পার্থ সারথি চ্যাটার্জি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.