বীরভূমে জয়ী ২ তৃণমূল প্রার্থী, গেরুয়া উত্থানেও নিজের গড় রক্ষা করে পাশ অনুব্রত।
নিউজ ডেস্ক,অয়ন বাংলা:- দেশের সঙ্গে রাজ্যের প্রায় অর্ধেক আসনে গেরুয়া ঝড়। দক্ষিণবঙ্গে বীরভূম-সহ দু-একটি জেলা ছাড়া অধিকাংশ এলাকায় জোড়া ফুলকে হারিয়ে পদ্মফুলের দাপট। দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও বিষ্ণুপুরে বিপুল ভোটে এগিয়ে বিজেপি প্রার্থীরা। আসানসোল কেন্দ্রে বিদায়ী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবারও তাঁর গড় অক্ষুণ্ণ রাখছেন। এসবের মাঝেও কিন্তু নিজের গড় রক্ষা করেছেন অনুব্রত মণ্ডল৷
বিভিন্ন বুথফেরত সমীক্ষায় সারা দেশে গেরুয়া ঝড়ের ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। বৃহস্পতিবার গণনা শুরুর পর থেকে বেলা যত গড়িয়েছে বুথ ফেরত সমীক্ষার সেই ইঙ্গিতই বাস্তবে রূপ পেয়েছে। রাজ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য, রাঙামাটির ফলাফল। বাঁকুড়ার শাসকদল তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির সুভাষ সরকারের থেকে প্রথম থেকেই পিছিয়ে। বেলা যত গড়ায়, বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের জয়ের মার্জিন ততই বাড়তে থাকে। বিষ্ণুপুরেও তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির সৌমিত্র খাঁর থেকে বেশ কয়েক হাজার ভোটে পিছিয়ে। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েই এমন উল্লেখযোগ্য সাফল্য৷ এমনকী আদালতের নির্দেশে নিজ এলাকায় ঢুকতেই পারেননি সৌমিত্র। তাঁর হয়ে প্রচার করেন তাঁর স্ত্রী। অন্যদিকে পুরুলিয়াতেও এগিয়ে বিজেপি। বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের মৃগাঙ্ক মাহাতোকে পিছনে ফেলে দেন গণনার শুরু থেকেই। বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতার সঙ্গে জোর টক্কর বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার৷
গেরুয়া শিবিরের এই অপ্রত্যাশিত উত্থানে ঘাসফুল শিবির বেশ ধাক্কা খেলেও, নিজের পারফরম্যান্সে কিন্তু ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েই পাশ করে গিয়েছেন দলের অন্যতম ভরসার পাত্র অনুব্রত মণ্ডল৷ জেলার তৃণমূল সভাপতি এবং একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পর্যবেক্ষক হিসেবে তিনি সফল৷ বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র তিনি দায়িত্ব নিয়ে আবারও শতাব্দী রায়কে জিতিয়ে এগিয়ে দিয়েছেন হ্যাটট্রিকের পথে৷ অন্যদিকে, বোলপুরের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালও কিন্তু জিতেছেন, অনুব্রতর অকুণ্ঠ পরিশ্রমে৷ ভোটপর্বের মাঝেই মাতৃবিয়োগ হয়েছে, ক্যানসার আক্রান্ত স্ত্রীর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে৷ এসব সামলেও কখনও দিনভর দলের কার্যালয়ে, কখনও মাঠে-ময়দানে সভা করে গিয়েছেন একটানা৷ এবছরের ভোটে তাঁর দাওয়াই ছিল, নকুলদানা৷ জয়ের বিষয়ে একা কৃতিত্ব নিতে চাননি অনুব্রত৷ গোটাটাই দলের সাফল্য বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ এছাড়াও জয়ের জন্য বিদায়ী সাংসদ তথা দলত্যাগী অনুপম হাজরার কৃতজ্ঞতাও কম কিছু নয় বলেই জানিয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি৷
ভোটের দিনই জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল৷ বৃহস্পতিবার ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল, আত্মবিশ্বাস সার্থক৷ পাশ করে গিয়েছেন তিনি৷ আর তাই এদিনও নকুলদানা দিয়েই জয় সেলিব্রেট করলেন তৃণমূল কর্মী, সমর্থকরা৷