নিউজ ডেস্ক,অয়ন বাংলা :- বাংলায় বিজেপি কে আটকানো মমতার একার পক্ষে আর সম্ভব নয় এটা মমতা ব্যার্নাজী খুব ভাল ভাবে বুঝতে পারছেন।তাই আর একলা চলো নয় ,সবাই কে নিয়ে চলতে চাইছেন।বিজেপিকে কি তবে একা আর রুখতে পারছে না তৃণমূল? এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে এসেছেন একমাত্র তৃণমূলই পারে বিজেপিকে রুখতে। সেই কারণে বাংলায় মহাজোট গড়তে একপ্রকার অস্বীকার করেছিলেন। বলেছিলেন যেখানে যে শক্তিশালী সে লড়াই করবে। বাংলায় তারা একাই একশো। লোকসভার ফল প্রকাশের পর অবশ্য মত বদলে ফেললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।বুধবার বিধানসভায় তিনি বলেন, বিজেপিকে রুখতে সবাইকে একজোট হতে হবে। এই মর্মে তিনি কংগ্রেস ও সিপিএমকেও আহ্বান জানান। বলেন, বিজেপির মতো ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করতে কংগ্রেস-সিপিএম-টিএমসিকে একত্রিত হতে হবে। রাজ্যে বিজেপির উত্থানে যে তিনি ভয় পেয়েছেন তা আবার এদিন প্রমাণ করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ভোটের পর থেকে ভাটপাড়ায় যে ঘটনা ঘটে চলেছে, তাতে আশঙ্কা প্রকাশ করে মমতা বলেন, আমি মনে করি আমাদের সকলের বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধে একত্রিত হওয়া উচিত। এর অর্থ এই নয় যে আমাদের রাজনৈতিকভাবে হাত মেলাতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক আদর্শ আলাদা, সেখানে আদর্শের লড়াই থাকবে। কিন্তু জাতীয় পর্যায়ের মতো এ রাজ্যেও বিভিন্ন ইস্যুতে আমরা একসাথে চলতে পারি।
বিধানসভায় বুধবার রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার জবাবি বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার আহ্বান, ‘‘মান্নান ভাই (কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান), সুজনবাবু (সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী), আমাদের একসঙ্গে আসা দরকার।’’ তাঁরা দু’জনেই অবশ্য মাথা ঝাঁকিয়ে, হাত নেড়ে ওই প্রস্তাব কার্যত খারিজ করে দেন। হইচইয়ের মধ্যে সুজনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘নো চান্স।’’ দিল্লিতে পরে কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও এই সুরেই প্রতিক্রিয়া জানান। আর বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘জোট করুন, না করুন, বিজেপিই জিতবে।’’
এ দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতা, অন্য দল ভাঙানো, লোকসভা ভোটে বিপুল অর্থের অন্যায় ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে কলুষিত করার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বলেন, ‘‘সিপিএম আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে পারে। কংগ্রেস আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে পারে। কিন্তু দেশটা ওরা ভেঙে তছনছ করে দেবে, তা আমি বিশ্বাস করি না।’’
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব বার বার দাবি করেছেন, বাম ভোট রামের ঝুলিতে যাওয়ার ফলেই এ রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। বিধানসভার চলতি অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনাতেও তৃণমূল বিধায়কেরা ‘বিজেপিকে ভোট পাচার’ করার অভিযোগ তুলে বার বার বাম বিধায়কদের খোঁচা দিয়েছেন। কিন্তু মমতা এ দিন বলেন, ‘‘কেরলের মানুষ বিজেপিকে ভোট না দিয়ে বাম এবং কংগ্রেসকে দিয়েছেন বলে ধন্যবাদ। আমাদের রাজ্যের বামেরাও সবাই যে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, তা নয়। সিপিএম সব ভোট শিফট করেছে, আমি তা বিশ্বাস করি না।’’ মুখ্যমন্ত্রী ব্যাখ্যা দেন, তিনিও ১০০ শতাংশ ভোট অন্য কাউকে পাঠাতে পারবেন না। কারণ সব ভোটার কখনওই কোনও এক জন নেতা বা একটি দলের কথা মেনে ভোট দেয় না। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী সন্দেহ প্রকাশ করেন, ‘‘আপনার (বামেদের) ভোট শতাংশের হিসাব করে সেটা যন্ত্রে (ইভিএম)-এ প্রোগ্রামিং করে দেয়নি তো? আমি কংগ্রেসকে বলেছিলাম, চলুন, এ বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাই। আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু তা বাতিল কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আজ তো আপনাদের সবাইকে নিয়ে আবার যেতে পারি।’’