নিজস্ব সংবাদদাতা ,অয়ন বাংলা , ডোমকল:- এবার মুর্শিদাবাদে জমে উঠেছে ভাঙ্গার খেলা ।ডোমকল পৌরসভায় এবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে 13 জন কাউন্সিলার সৌমিক হোসেনের বিরুদ্ধে।২০১৭ সালের ২৬শে মে নবগঠিত ডোমকল পুরসভার প্রথম পুরপ্রধান হিসেবে শপথ নেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য যুব সাধারণ সম্পাদক সৌমিক হোসেন। তিনি যেমন একদিকে প্রাক্তন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মান্নান হোসেনের পুত্র, অন্যদিকে তেমনি যুবনেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ। তাই পুরপ্রধানের পদ থেকে তার অপসারণ চেয়ে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন যে কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বেরই বিরোধীতা করা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এখানেই তাই প্রশ্ন উঠছে পর্দার পিছনে নেপথ্য খেলোয়াড় কি বিজেপি? বিশেষ সুত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের মূলে রয়েছে প্রদীপ চাকিকে পুরপ্রধান ও টুলুয়ারা বিবিকে উপ-পুরপ্রধগান করার টোপ।
এক দেড় মাস আগে হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচণে রাজ্য জুড়ে বয়ে গিয়েছে গেরুয়া ঝড়। তার জেরে রাজ্যের প্রায় ১৮টি লোকসভা কেন্দ্রও হস্তগত করেছে বিজেপি। তারপরেই শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের হাতে থাকা রাজ্যের একের পর এক পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি মায় জেলা পরিষদও ছিনিয়ে নেওয়ার খেলা। ঠিক যেভাবে তৃণমূল বাম ও কংগ্রেসের কাছ থেকে একসময় একের পর এক পুরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি মায় জেলা পরিষদও ছিনিয়ে নিয়েছিল, এখন সেভাবেই এগোতে শুরু করেছে বিজেপি। এই খেলায় বিজেপি দুটি পথ ধরছে, এক দলবল নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের যোগদান ও দুই অনাস্থা প্রস্তাব এনে অচলাবস্থা তৈরি করে দেওয়া। তাদের এই খেলার নবতম সংযোজন মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকল পুরসভায় ক্ষমতাসীন চেয়ারম্যান সৌমিক হোসেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন।
সোমবার ডোমকলের মহকুমা শাসকের কাছে পুরসভার ১৩জন কাউন্সিলর সৌমিক হোসেনের অপসারণ চেয়ে লিখিত আকারে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। ডোমকল পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ চাকি ওরফে কার্তিক চাকির নেতৃত্বে তেরোজন কাউন্সিলর ডোমকল মহকুমাশাসক দিব্যা লোগানাথনের কাছে ওই প্রস্তাব জমা দেন। যে সব কাউন্সিলররা এই প্রস্তাব সমর্থন করেছেন তার মধ্যে রয়েছেন দলের টাউন সভাপতি কামরুজ্জামান সেখের স্ত্রী টুলুয়ারা বিবি, আলম খান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ চাকি এর মত সৌমিক ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলররা।
যদিও এদিন অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, বিজেপির কোন প্রলোভনে পা দিয়ে নয়, তারা অনাস্থা আনতে বাধ্য হয়েছেন সৌমিক হোসেনের কর্মকাণ্ড ও দুর্ব্যবহারের জেরে। সোমবার অনাস্থাপ্রস্তাব জমা দেওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা লিখিত আকারে জানান যে পুরপ্রধান অযোগ্য, অত্যধিক আর্থিক দুর্নীতিগ্রস্থ, রূঢ় আচরণ, তার কথা কাজে মিল নেই, অন্যান্য কাউন্সিলরদের সঙ্গে তিনি প্রভু ভৃত্যের মত আচরণ করেন ইত্যাদি।
বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান প্রদীপ চাকির অভিযোগ, পুরপ্রধান আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত, তিনি স্বৈরাচারীর মত পুরসভা পরিচালনা করেন, কাউন্সিলরদের সঙ্গে মত বিনিময় করে তিনি কোন কাজ করেন না, নূ্ন্যতম পরিষেবা দিতেও ব্যর্থ হচ্ছে পুরসভ। ফলে হয়রান হচ্ছে সাধারণ মানুষ, নষ্ট হচ্ছে সরকার ও দল এবং দলনেত্রীর ভাবমুর্তি। যদিও সৌমিক হোসেনের দাবি, বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের পেছনে বিজেপির হাত রয়েছে। তারা বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন।
মুর্শিদাবাদের তৃণমুলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্য চলে এল।