প্লাস্টিক মানবতার এক অভিশাপ

Spread the love

অয়ন বাংলা ,প্রতিবেদন সংগ্রাহক ,জয়নাল আবেদিন:- ১৯৫০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ,, আমরা
প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাষ্টিক উৎপাদন
করে ফেলেছি। বর্তমানে এই উৎপাদিত প্লাষ্টিকের মাত্র ৩০% ব্যাবহারিত হচ্ছে,, বাকি ৭০ শতাংশ
মানবতার গলা টিপে হত্যা করার জন্য,, বর্জ্য
পদার্থ হিসাবে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে রয়েছে।

একজন মানুষ পৃথিবীতে জন্ম নেওয়ার ৬০/৭০/
৮০ অথবা ১০০ বছরের মধ্যে,, এই পৃথিবীতে
বিলীন হয়ে যান। এভাবেই জীব-জন্তু,, প্রাণীকুল
একদিন না একদিন মারা যাবে,, এবং এই
পৃথিবীর মাটিতেই বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু,,
একবার পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া প্লাষ্টিক,, অনন্ত-কাল পর্যন্ত,, এখানেই রয়ে যাবে,,
কখনোই বিলীন হবে না।

বর্তমানে বিভিন্ন আধুনিক মেশিনের সাহায্যে,,
এই অতিরিক্ত প্লাষ্টিকের মধ্যে,, মাত্র ১২%
বিলীন করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে,, বাকি প্লাষ্টিক
আমাদের প্রকৃতি এবং জলবায়ুর সঙ্গে মিশে-
গিয়ে,, বিভিন্ন প্রতিকূলতার সৃষ্টি করে চলেছে।

কয়েক বছর আগে,, মুম্বাই সমুদ্রতটে প্রায়
৩০ টি তিমি মাছের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়,,
প্রত্যেকটি মাছের পেট চিরে,, পলিথিনের
টুকরো পাওয়া গেছে।

পলিথিনের এই আবর্জনা,, সমুদ্রে মিশে
রয়েছে। খাল-বিল,, নদী -নালা,, খানা-খন্দ,,
পুকুর,, সর্বত্রই পলিথিন ছড়িয়ে রয়েছে।

পাহাড়,, সমুদ্র,, জঙ্গল,, আমরা যেখানেই
যাই না কেন,, আমাদের উপস্থিতির প্রমাণ
স্বরুপ,, পলিথিন নামক আবর্জনা ফেলে রেখে
আসি। আমরা মাউন্ট এভারেস্ট এর চূড়া থেকে,,
বঙ্গোপসাগরের তট পর্যন্ত,, সর্বত্রই পলিথিন
ব্যাবহার করে চলেছি।

ধনী এবং উন্নত দেশগুলো,, বর্তমানে তাদের
দেশে ব্যাবহার করা পলিথিন গুলো,, গরীব
দেশে পাঠিয়ে দিয়ে থাকে। সামান্য টাকার
বিনিময়ে,, গরীব দেশগুলো সেইসব পলিথিন
পুড়িয়ে ,, নিজেদের মৃত্যুকে,, নিজেরাই
আহ্বান করে চলেছে।

এইসব পুড়িয়ে দেওয়া পলিথিন,, তাদের দেশের
বায়ুমন্ডলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে।
আমরা ,, দেশের সীমানা সুনিশ্চিত করতে
পেরেছি,, কিন্তু বায়ুমণ্ডল,,মেঘ মালা,, আবহাওয়ার কোনো সীমানা নির্ধারণ করে
উঠতে পারিনি। এক দেশের দূষিত বায়ুমণ্ডল,, বিষাক্ত আবহাওয়া অন্য দেশের প্রকৃতিকে ধ্বংস করে থাকে।

পুড়িয়ে দেওয়া পলিথিন থেকে সৃষ্ট,, বিষাক্ত
কনা,, জল,, বায়ু,, এবং খাদ্যের মধ্যে মিলিত
হয়ে,, অনাবরত আমাদের শরীরে প্রবেশ করে
চলেছে।

আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্লাস্টিক
এবং পলিথিন ব্যাবহার একেবারেই পরিত্যাগ
করতে হবে। প্লাষ্টিকের বোতল,, কম সে কম
ব্যাবহার করতে হবে।

একবার,, দীঘার সমুদ্রতটে বসে,, এক ভদ্রলোককে কোল্ড ড্রিংকস খেয়ে,, সমুদ্রে
বোতল ফেলতে দেখে প্রতিবাদ করে,, ভীষণ
রকমের হেনস্থার শিকার হয়ে ছিলাম। সব চেয়ে
দুঃখজনক ব্যাপার হলো,, হাজার মানুষের মধ্যেও
একজনকে সঙ্গী হিসাবে পেলাম না।

এছাড়া,, ডাব খাওয়ার জন্য,, আমরা যে “ষ্ট্র ”
ইউজ করে,, সমুদ্রে ফেলে দিই,, একবার ভেবে
দেখেছেন,, ঐ ষ্ট্র যদি কোনো মাছের পেটে
পৌঁছে যায়, তার অবস্থাটা কি হতে পারে !!

আমরা মানুষ,, আমাদের জ্ঞান রয়েছে,, কিন্তু
এই পৃথিবীর বুকে,, আরো কোটি কোটি প্রাণী,,
জীবজন্তু রয়েছে,, যাদের বোধ-বিচার বলে
কিছুই নেই। বেঁচে থাকার অধিকার,, তাদের ও
রয়েছে। আমাদের অন্যায়ের মাসুল,, তারা
চুকিয়ে যাবে কেনো ?? একবার ভেবে দেখবেন।

যাইহোক,, আমি নিশ্চিত,, বিশ্বের বড়ো বড়ো
পরিবেশবিদ,, বিজ্ঞানী এবং উন্নত দেশগুলো
এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা,, গবেষণা করে চলেছে।।

কিন্তু,,, যদি …
আগামী দশ পনেরো বছরের মধ্যে,, কোনো
বৈপ্লবিক পরিবর্তন না ঘটে,, তাহলে নিশ্চিত
ভাবেই,, আমারা এক অকল্পনীয় ক্ষতির
সম্মুখীন হতে চলেছি।

(নিজে প্লাস্টিক এবং পলিথিন ব্যাবহার
বর্জন করুন,, অন্যকে ব্যাবহার করতে
দেখলেই,, প্রতিবাদ করুন। সঙ্গে জলের
বোতল রাখুন।কোল্ড ড্রিংকস এবং ডাব
খাওয়ার সময়, ষ্ট্র ব্যাবহার করবেন না।)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.