অবশেষে ১৯,০৬,৬৫৭ জন মানুষের নাম বাদ অসমের নাগরিক পঞ্জীকরণের (এনআরসি-র) চূড়ান্ত তালিকায়

Spread the love

: বাতিল মানুষ

অয়ন বাংলা,নিউজ ডেস্ক:- ১৯,০৬,৬৫৭। অসমের নাগরিক পঞ্জীকরণের (এনআরসি-র) চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষদের সংখ্যা। শুধুই সংখ্যা। মানুষ তো নয়!

শেষ প্রকাশিত খসড়া-য় ছিলেন না প্রায় ৪১ লক্ষ মানুষ। ভারতীয় নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পাওয়ার পরীক্ষায় ‘পাশ’ করেছেন ২১ লক্ষ। বাকিরা ‘ফেল’। যদিও এর পরেও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট আছে। তারপর? রাষ্ট্রের কাছে কোনও উত্তর নেই।

খসড়া-য় যাঁদের নাম ছিল না, চূড়ান্ত তালিকায় যাঁদের নাম নেই — আপাতনিরাপদ দূরত্ব থেকে ওই মানুষদের হতাশার, চোখের জলের, মৃত্যুসম উৎকন্ঠার, হত্যার অধিক যন্ত্রণার সহভাগী হওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। মানসিক উদ্বেগ সহ্য করতে না পেরে ইতিমধ্যেই যাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন, তাঁরা অবশ্য ‘বেঁচে’ গেছেন।

চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ-পড়া মানুষদের অধিকাংশই সমাজের প্রান্তবাসী। নিম্নবিত্ত, আর্থিক সঙ্গতিহীন। বৈধ নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্যে ‘সেবা-কেন্দ্রে’ বারবার ছোটাছুটির, ট্রাইব্যুনাল-হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের খরচ ওঁরা কীভাবে জোগাড় করেছেন, ভবিষ্যতে করবেন, সে ওঁরাই জানেন। জানা যাচ্ছে, শুধু ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতেই ব্যক্তি-পিছু ৫০ হাজার টাকা লাগবে।

উপমহাদেশ বিভাজনের ক্ষমাহীন পাপের শিকার, রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে ‘বাতিল’ ওই মানুষেরা। যদিও এতে ওঁদের কোনও ভূমিকা ছিল না।

উপমহাদেশের অধিবাসী একজনকেও ‘বিদেশি’ মনে করি না, বর্তমানে তিনি যে রাষ্ট্রের নাগরিকই হয়ে থাকুন না কেন। রাষ্ট্রীয় অথবা আঞ্চলিক, জাতীয় অথবা খণ্ড, এমনকি ভাষা-ভিত্তিক, যে কোনও জাতীয়তাবাদকেই প্রত্যাখ্যান করি। ভৌগোলিক মানচিত্র-নির্ভর রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের ধারণা ও কাঁটাতারের সীমান্তকেও। রাষ্ট্রকে হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর, নৃশংস একটি প্রতিষ্ঠান বলেই মনে করি।

ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ছাড়া অসমের ওই ‘বাতিল’ মানুষদের জন্যে আর কিই বা করতে পারে এই অক্ষম মানুষটা!

#পুনশ্চঃ এনআরসি তালিকা থেকে বাদ-পড়া ওই মানুষদের যাঁরা ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে হিন্দু অথবা মুসলমান বলে চিহ্নিত করতে চান, তাঁরা নিশ্চিতভাবেই হিন্দু চাড্ডি অথবা ইসলামি ছাগু সম্প্রদায়ের। এবং অবশ্যই ‘মানুষ’ নন।
[31/08 14:15] ABN news: C ফাইনাল লিস্টঃ বাদ গেল ১৯ লক্ষ এর বেশী।
অবশেষে প্রকাশিত হল বহুচর্চিত আসামের এনআরসির ফাইনাল লিস্ট। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে মোট ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬ শো ৫৭ জন। গতবছরের শেষে ফাইনাল লিস্টে ৪০ লাখ ৭ হাজার বাদ গিয়েছিল। ক্লেইমস এণ্ড অবজেকশনের পরে এখন এই সংখ্যাটি এসে দাঁড়িয়েছে। যারা বাদ পড়েছেন তাঁরা ফরেনাল ট্রাইবুনালে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্য এনআরসির কোঅরডিনেটর প্রতিক হাজেলা।

ল্লেখ্য এনআরসি তে নাম বাদ পরার পর পুনরায় তালিকায় নাম তোলার জন্য প্রায় ৪ লাখ মানুষ আবেদনই করেননি। কিন্তু এবার ১২০ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে বৈদেশিক ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার জন্য। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে সমস্তরকম সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

লিস্ট বেরনোর পর থেকেই বিশাল সংখ্যক মানুষ এনআরসির সাইটে সার্চ করার ফলে অফিসিয়াল সাইটটি ক্রাশ করেছে বলেও রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে।
বাতিল মানুষ

১৯,০৬,৬৫৭। অসমের নাগরিক পঞ্জীকরণের (এনআরসি-র) চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষদের সংখ্যা। শুধুই সংখ্যা। মানুষ তো নয়!

শেষ প্রকাশিত খসড়া-য় ছিলেন না প্রায় ৪১ লক্ষ মানুষ। ভারতীয় নাগরিকত্বের স্বীকৃতি পাওয়ার পরীক্ষায় ‘পাশ’ করেছেন ২১ লক্ষ। বাকিরা ‘ফেল’। যদিও এর পরেও বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট আছে। তারপর? রাষ্ট্রের কাছে কোনও উত্তর নেই।

খসড়া-য় যাঁদের নাম ছিল না, চূড়ান্ত তালিকায় যাঁদের নাম নেই — আপাতনিরাপদ দূরত্ব থেকে ওই মানুষদের হতাশার, চোখের জলের, মৃত্যুসম উৎকন্ঠার, হত্যার অধিক যন্ত্রণার সহভাগী হওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। মানসিক উদ্বেগ সহ্য করতে না পেরে ইতিমধ্যেই যাঁরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন, তাঁরা অবশ্য ‘বেঁচে’ গেছেন।

চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ-পড়া মানুষদের অধিকাংশই সমাজের প্রান্তবাসী। নিম্নবিত্ত, আর্থিক সঙ্গতিহীন। বৈধ নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্যে ‘সেবা-কেন্দ্রে’ বারবার ছোটাছুটির, ট্রাইব্যুনাল-হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের খরচ ওঁরা কীভাবে জোগাড় করেছেন, ভবিষ্যতে করবেন, সে ওঁরাই জানেন। জানা যাচ্ছে, শুধু ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতেই ব্যক্তি-পিছু ৫০ হাজার টাকা লাগবে।

উপমহাদেশ বিভাজনের ক্ষমাহীন পাপের শিকার, রাষ্ট্রের দৃষ্টিতে ‘বাতিল’ ওই মানুষেরা। যদিও এতে ওঁদের কোনও ভূমিকা ছিল না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.