অয়ন বাংলা,নিউজ ডেস্ক:- নজির বিহীণভাবে বিধানসভায় বিরোধী শাসক তরজা। শাসক বিরোধী তরজায় উত্তপ্ত রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন। আজ পরিবহন দপ্তরের প্রশ্নোত্তর পর্বকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও শাসকদলের বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতি বাঁধার উপক্রম হয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওয়েলে নেমে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।
এদিন প্রশ্নোত্তর পর্বে মুর্শিদাবাদের বড়োঞা-র বিধায়ক প্রতিমা রজক অভিযোগ করেন, পরিবহণ দফতরের অধীনে এনবিএসটিসি তথা উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমে নিয়োগ হচ্ছে শুনছি। এটা কি স্থায়ী চাকরি? চাকরি দেওয়ার পরিবর্তে টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ কথা শুনেই শোরগোল শুরু হয় সরকারপক্ষের বিধায়কদের মধ্যে।
পরিবহণ মন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর কাছে এরকম কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু সেখানেই তিনি থামেননি। বলেন, এরকম কোনও অভিযোগ থাকলে আপনি প্রমাণ করে দেখান। নইলে ক্ষমা চাইতে হবে আপনাকে।
পরিবহণ মন্ত্রী এ কথা বলার পরই উঠে দাঁড়ান মুর্শিদাবাদ জেলার অপর কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রীর দিকে আঙুল উঁচিয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। তারপর ওয়েলে নেমে তেড়ে যান মন্ত্রীর দিকে। তার দেখাদেখি বিরোধী শিবিরের আরও কয়েকজন বিধায়কও ওয়েলে নেমে পড়েন। শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে হাতাহাতি হওয়ার উপক্রম হয়।
কংগ্রেস বিধায়কদের এই আগ্রাসন দেখে আরও চটে যান পরিবহণ মন্ত্রী। তিনি বিধানসভায় দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক আক্রমণে নেমে পড়েন তাঁদের।
দলীয় তরফে মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষক হলেন শুভেন্দু। এ বার লোকসভা ভোটে তাঁর নেতৃত্বেই জেলায় দুটি আসন জিতেছে বাংলার শাসক দল। বিধানসভাওয়াড়ি ফল হিসাব করলে দেখা যাবে জেলায় ১৪টি বিধানসভা আসন জিতে নিয়েছে তৃণমূল। রাগ সামলাতে না পেরে তিনি সভায় বলেন, “মুর্শিদাবাদ ফাঁকা করে দেব, একটা আসনেও আপনারা জিতবেন না”।
মন্ত্রীর এ কথা আগুনে ঘি পড়ে। আরও তেড়েফুঁড়ে ওঠেন কংগ্রেস বিধায়করা। তা দেখে ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে পূর্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও পুর মন্ত্রী ফিরহাদ ওয়েলে নেমে এর পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। শেষ মেশ ওয়েলে নেমে আসেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হলে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সভার মধ্যে এই ধরনের অশান্তির পরিবেশ একেবারেই কাম্য নয়। আমি বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকে বলব, কোনও বিধায়ক এ ভাবে মন্ত্রীর দিকে তেড়ে যাচ্ছেন, মারতে উদ্যত হচ্ছেন এটা উচিত নয়। আপনারা দেখুন। আবার মন্ত্রীকে বলব, উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সংযত হন। আপনি কংগ্রেস বিধায়ককে ক্ষমা চাওয়ার যে কথা বলেছেন তা রেকর্ডে রাখছি না”।