খাবির হত্যা: বহরমপুরের প্রতিবাদী কন্ঠ নিশ্চুপ
কোথাও কোন অন্যায়, বেআইনি, রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের ঘটনা ঘটলে বহরমপুরবাসীর প্রতিবাদ করার ইতিহাস – ঐতিহ্য সমৃদ্ধ। তা সে ঘটনা জেলা ছাড়িয়ে রাজ্য ,দেশ এমনকি বিদেশে ঘটলেও। গত এক বছরের মধ্যে দেশে যেখানেই দলিত ও মুসলিমদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে সব ক্ষেত্রেই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে বহরমপুর। সাথ দিয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বিশিষ্ট মানুষজন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন সকলেই নিজের মত করে প্রতিবাদ সংগঠিত করেছে। কিন্তু খুব আশ্চর্য জনক ভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে বহরমপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র লালদীঘিতে খাবির হত্যার ক্ষেত্রে বহরমপুরের প্রতিবাদী কন্ঠস্বর উধাও। এক সপ্তাহ হয়ে গেল এখনও পর্যন্ত কেউ রা কাড়েনি। বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে এতটাই বিস্ময়কর ঠেকেছে যে বিষয়টি চায়ের দোকানে, রাস্তাঘাটে আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিনত হয়েছে। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে ” তা হলে কি খাবির কোন রাজনৈতিক দলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন না বলেই রাজনৈতিক দলগুলোর এই উদাসিনতা”? মানুষের মনে প্রশ্ন ” তা হলে কি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মানুষ বা নাগরিকের চেয়ে দলের কর্মীর দাম বেশি?” মানুষকে সবচেয়ে বেশি ধন্দে ফেলেছে শাসক দল তৃণমূলের ভূমিকা। তাদের দলের জনপ্রতিনিধিরা নাকি খাবিরের পরিবারের সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন চুপিসারে। অথচ যতটুকু জানা যাচ্ছে খাবিরের পরিবার , আত্মীয় স্বজন তৃণমূলেরই সমর্থক। জেলায় এপিডিআর,বন্দিমুক্তি কমিটির মত মানবাধিকার সংগঠনগুলি বিভিন্ন ইস্যুতে ময়দানে নামে। অথচ এই ইস্যুতে তাদেরও কোন দেখা নেই। মুর্শিদাবাদ জেলা সাংবাদিক সংঘকেও দেখা যায় এই ধরনের বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ সংগঠিত করতে। এদের ভূমিকাও জেলাবাসিকে হতাশ করছে। মুসলিম মহল্লাগুলো থেকে ফিসফিসানি কানে ভেসে আসছে ” তা হলে খুনিরা খাবিরকে যে কারণেই খুন করে থাকুক না কেন রাজনৈতিক দলগুলো, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিশ্বাস করছে খাবিরকে মুসলিম বলেই পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তাই তারা নিজেদের অজান্তেই তাদের সংকীর্ণ মানসিকতা প্রকাশ করে দিল” । তাদের নিরবতাই জনগণের একাংশকে এ ভাবে ভাবতে বাধ্য করছে।
সুফিয়া খাতুন,ভাকুড়ি, চালতিয়া, বহরমপুর, মুর্শিদাবাদ
মোবাইল ৯৯৩৩৭৬৭৮৮০