যশস্বী জয়সোয়াল।।
নাদিম খাান ,মুম্বাই:-
ভদোহী ,, উত্তরপ্রদেশের ১১ বছরের ছেলেটি,, ক্রিকেটকে ভালোবেসে ঘর ছেড়ে পাড়ি দিয়ে-
ছিলেন সুদূর মুম্বাই শহরে।।
মুম্বাই যাওয়ার পর,, একের পর এক সমস্যা।।
আগে প্রাণে বাঁচতে হবে,, তাই ছেলেটি একটি
ডেয়ারি ফার্মে কাজ জুটিয়ে নেন। যাঁর ধ্যান-
জ্ঞান,, স্বপ্ন সবকিছুই ক্রিকেট-কে ঘিরে,, তিনি
ডেয়ারির চার দেওয়ালে নিজেকে বন্দী রাখবেন
কিভাবে ??
প্রায়শই ছুটি করতেন,, তাই দেখে ডেয়ারি
কতৃপক্ষ তাঁকে চাকরি থেকে বের করে
দিলেন।
কখনো ফুটপাতে,, কখনো ফ্লাইওভারের নিচে
রাত কাটানো,, দিনের কিছুটা সময়,, এক
ফুচকা-ওয়ালায় হেল্পার হিসাবে কাজ,, বাকি
সময়টুকু ক্রিকেটে মনোনিবেশ।।
এতো কষ্টের পরেও,, ছেলেটা নিজের বাড়িতে
কখনো জানতেই দিতেন না,, তাঁর কষ্টময়
জীবনের কথা। পাছে মুম্বাই ছেড়ে ফিরে যেতে
হয়,, নিজের ক্রিকেটার হবার স্বপ্ন জলাঞ্জলী
দিয়ে।।
আই এই মাঠ,, কাল সেই মাঠ,, এভাবেই চলছে
ছেলেটির জীবন। একদিন মুম্বাই এর “মুসলিম
ইউনাইটেড ক্লাবের” মাঠে কোনো এক কম্পিটিশনে
খেলে চলছেন,, ছেলেটি।। চিফ-গেষ্ট হিসাবে
উপস্থিত ছিলেন,,, মুম্বাই এর প্রাক্তন ক্রিকেট
তারকা “ওয়াসীম জাফর।”
ওয়াসীম জাফর ছেলেটির ব্যাটিং দেখে অবাক।
নিজে দায়িত্ব নিয়ে যশস্বী-র থাকার ব্যাবস্থা
করে দিলেন,, মুসলিম ইউনাইটেড ক্লাবের
তাঁবুতে। সঙ্গে ক্রিকেট খেলার যাবতীয় সরঞ্জাম
কিনে দিলেন। নিজে টেকনিক্যাল দিকগুলো
শিখিয়ে দিলেন। এছাড়া MUC ক্লাবের কোচকে
অনুরোধ করলেন,, ছেলেটির প্রতি বাড়তি
নজর রাখতে।
এভাবেই কেটে গোলো,, ৬ টি বছর। ওয়াসীম
জাফরের চেষ্টায়,, ছেলেটি মুম্বাই ক্রিকেট দলে
জায়গা করে নিলেন।।
গতকাল বিজয় হাজারে ট্রফিতে ,,মুম্বাই ক্রিকেট
দলের হয়ে প্রথমবার মাঠে নেমেছিলেন,, ছেলেটি,,
ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে। এবং জীবনের প্রথম ম্যাচেই,,
বাজিমাত করে দিলেন,, যশস্বী জয়সোয়াল।।
৫০ ওভারের ম্যাচ। মাত্র ১৫৩ বল খেলে,, ২০৩
রানের একটা ঝকঝকে ইনিংস উপহার দিলেন।।
পৃথিবীর প্রথম আন্ডার 17,, হিসাবে ডবল-সেন্চুরির
রেকর্ড তাঁর পকেটে।
কেমলমাত্র প্রতিভা থাকাটাই যথেষ্ট নয়। তার
সঙ্গে পরিশ্রম যোগ হলে,, তবেই স্বপ্ন সফল হবে।।
আর থাকতে হবে,, যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির
মোকাবেলা করার মতো যোগ্যতা। তাহলে,,, সফল
হওয়া কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা।।
যশস্বী জয়সোয়াল কে সুন্দর এবং সফল
ভবিষ্যতে-র অশেষ শুভেচ্ছা। আশা রাখবো,,
ভবিষ্যতে ভারতীয় ক্রিকেটে একজন নতুন
তারকা-র আবির্ভাব হতে চলেছে।।
★★★★
নাদিম খান।
মুম্বাই।