ওয়েব ডেস্ক : একদিন দুদিন নয়! ২৮ দিন ধরে সমুদ্রে ভেসে রইলেন তিনি। খাবার নেই। বৃষ্টির জল ছাড়া আর কিছু পান করার মতো নেই। এমন অবস্থায় ২৮ দিন। ভাবতে পারছেন! অসম্ভবকে সম্ভব করে তুললেন আন্দামানের যুবক অমৃত কুজুর। তাঁর সঙ্গে নৌকোয় পাড়ি দিয়েছিলেন আরেক যুবক দিব্যরঞ্জন। তাঁকে বাঁচাতে পারেননি অমৃত। আন্দামানের শহিদ দ্বীপের বাসিন্দা অমৃত ও দিব্যরঞ্জন। সমুদ্রে ভাসমান জাহাজে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস যোগান দিয়ে আয়ের উদ্দেশে নৌকা ভাসিয়েছিলেন দুজনে মিলে। কিন্তু মাঝসমুদ্রে তাঁদের নৌকা ভয়ঙ্কর ঝড়ের মুখে পড়ে। পাল ছিড়ে যাওয়া নৌকা এদিক-ওদিক দিকশূন্যভাবে ভেসে যেতে থাকে। নৌকায় জল ঢুকে সমস্ত মাল ভেসে যায়। ৪৯ বছরের অমৃত বলেছেন, ঈশ্বরের দয়ায় ফিরতে পেরেছি। বন্ধুকে বাঁচাতে পারলাম না। এটাই যা বড় আফসোস।
ওড়িশার খিরিশাহি গ্রামের উপকূলে এসে ঠেকে অমৃতের নৌকা। গ্রামবাসীরা যখন তাঁকে উদ্ধার করে তখন তাঁর কথা বলার মতো অবস্থাও ছিল না। কোনওরকমে বেঁচে ছিলেন তিনি। জানা যায় ওড়িশা উপকূল থেকে ১৩০০ কিমি দূরে নৌকা ভাসিয়েছিলেন অমৃত। ২৮ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করেছিলেন। শুরুতে সব কিছু স্বাভাবিক ছিল। এর পর ঝড়ের মুখে পড়ে তাঁর নৌকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নৌকায় পাঁচ লাখ টাকার জিনিসপত্র মজুত করেছিলেন অমৃত। সবই ভেসে যায়। ওয়ারলেস কানেকশন নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর সমস্যা আরও বেড়ে যায়। মায়ানমারের একটি নৌবাহিনীর জাহাজ তাঁদের খাবার ও জল দিয়ে সাহায্য করেছিল। কিন্তু তার পর তীরে ফিরে আসার সময় আরও একটি ঝড়ের মুখে পড়ে তাঁদের নৌকা। এর পর উদ্দেশ্যহীনভাবে ভেসে যায় অমৃতের নৌকা। বৃষ্টির জল ঢুকতে শুরু করে নৌকায়। মনের জোরে ২৮ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসতে থাকে অমৃত। তবে দিব্যরঞ্জন যুঝতে পারেননি। অমৃত বৃষ্টির জল খেয়ে বেঁচে ছিলেন। মনের জোর থাকলে সবই সম্ভব! প্রমাণ করলেন আন্দামানের এই যুবক।