রাজ্যের গণ আন্দোলন এবং মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকা : পরিণতি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মত হতে পারে

Spread the love

পাঠকের কলমে:- রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও মুসলিমদের অবস্থান বিশ্লেষণ করে একটা দিক উঠে আসছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অবস্থান নিয়ে একটু হলেও সন্দেহের দানা বেঁধেছে রাজ্যের মুসলিমদের সিংহভাগ অংশে কারন শাসক হিসাবে এই আইনের বিরুদ্ধে আজও কোন আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করে নি। তবে তারা আশার আলো দেখছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই আইনে সরাসরি সংসদে দাঁড়িয়ে ধর্মীয় বিভাজন করে মুসলিমদের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় বাদ দিলেও দেশজুড়ে একটা বড়ো অংশের অমুসলিম বুদ্ধিজীবী ছাত্র যুব এই অসাংবিধানিক আইনের বিরুদ্ধে অরাজনৈতিক ভাবে ধারাবাহিক আন্দোলন করে চলেছে।

অভিজ্ঞ মহলের ধারণা ও বিশ্বস্ত সূত্র মতে জানা গেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ক্ষমতায় আসার পূর্বে থেকে কিছু মাস পূর্ব পর্যন্ত রাজ্যের মুসলিমদের আন্দোলন ও চাওয়া পাওয়া নিজেই বিচার বিশ্লেষণ করতেন। কিন্তু ইদানিং তিনি রাজ্যের মধ্যে আরএসএস পন্থী, গেরুয়া, সাম্প্রদায়িক পুলিশ ও গোয়ান্দাদের চোখে মুসলিম নেতৃত্ব ও আন্দোলন নজরদারি করছে। যারফলে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা রাজ্যের শান্তিপূর্ন আন্দোলন সংগঠিত করতে দিচ্ছেন না। এবং এলাকা ভিত্তিক বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনের নেতৃত্বদের সেই গেরুয়া পন্থী পুলিশ আধিকারিকদের অঙ্গুলি হেলনে পুলিশী হয়রানি করছে, বা মুসলিম এলাকায় আন্দোলনকারীদের দোষারোপ করতে পুলিশকে সরাসরি মাঠে নামিয়ে গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছে। বেশকিছু স্থানে বেছে বেছে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করা মুসলিম সংগঠকদের ধরে ধরে বিভিন্ন ভাবে প্রশাসনিক হয়রানি ও গ্রেফতারও করছে।

এ প্রসঙ্গে খুব মিল পাওয়া যাচ্ছে যে একসময় রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এমনি আরএসএস পন্থী সাম্প্রদায়িক পুলিশের পাল্লায় পড়ে মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় বলে বক্তব্য দিয়ে বসেন। যা আজও পর্যন্ত এমন প্রমাণ একটিও পাওয়া যায় নি যে রাজ্যের কোন মাদ্রাসায় জঙ্গি কার্যকলাপ হয়। সে সময় মুসলিম যুবকদের সিমি সহ বিভিন্ন দেশবিরোধী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছে বলে মিথ্যা কেস দিয়ে জেলবন্দী করেছিল। যারা বিভিন্ন সময়ে অপকর্মে যুক্ত থাকার প্রমাণ না থাকায় ছাড়াও পেয়েছে। কিন্তু বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সেই গেরুয়া পুলিশের চোখ দিয়ে দেখা মাদ্রাসা মুসলিমদের ভুল ভাবনা ও সিদ্ধান্ত একসময়ে পুরো মুসলিম সমাজের উপর প্রভাব ফেলে। এবং তা তাদের পতন সুনিশ্চিত করে।

অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে মমতা ব্যানার্জি যদি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো একি পথে হেঁটে গেরুয়া গোয়েন্দাদের চোখে মুসলিমদের আন্দোলন বিশ্লেষণ করে রাজ্যের মুসলিমদের গনতান্ত্রিক আন্দোলন ও মতামত প্রকাশে কড়াকড়ি করে ও মুসলিম যুবকদের প্রতি অত্যাচার ও প্রশাসনিক হয়রানি করে তবে নিজের একেবারেই অজান্তেই মুসলিম সমাজ মমতা ব্যানার্জির প্রতি আস্থা হারাবেন ও শেষ পর্যন্ত পতন ও ডেকে আনতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উচিত গেরুয়া পুলিশ ও গোয়েন্দাদের চোখে মুসলিমদের বিশ্লেষণ না করে ধর্মনিরপেক্ষ চোখে মুসলিমদের দেখুন না হলে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো পরিণতি হতে শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

বিনীত
আদি আহমেদ
কোলকাতা

(মতামত পাঠকের )

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.