গোটা দেশ আন্দোলনে ,বিশ্বের বিশটির বেশী দেশে সি এ এ বিরোধী আন্দোলন হয়েছে। এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছে রাষ্ট্রপুজ্ঞ। সিএএ নিয়ে এবার সাঁড়াশি চাপে মোদি সরকার। ঘরের সঙ্গে এবার আন্তর্জাতিক স্তরেও এই আইন নিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছে বিজেপি। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পর্ষদ বা ইউএনএইচআরসি সিএএ–তে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষদের বাদ দেওয়ার বিরোধিতা করে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল। এই মামলায় ইউএনএইচআরসি নিজেদের আবেদনকারী করতে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে বলেছে, ধর্মের ভিত্তিতে আইনে যে বিভাজন করা হয়েছে তা যথাযথ যুক্তিগ্রাহ্য বা মান্য নয়।
তবে নিজেদের পিঠ বাঁচাতে ভারতও এব্যাপারে তৎক্ষণাৎ জবাব দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে কড়া ভাষায় বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সিএএ সম্পূর্ণ রূপে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভারতের সংসদের আইন তৈরির সার্বভৌম অধিকার আছে। তাই ভারতের সার্বভৌমত্বের মধ্যে কোনও বিদেশি দলের ঢোকা উচিত নয়। মন্ত্রক বিবৃতিতে আরও সাফাই দিয়েছে যে, প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রের অ–মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার এই আইন সাংবিধানিকভাবে বৈধ এবং মানবাধিকারের মূল্যবোধ ধরে রেখেই করা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘দেশভাগের সময় যে মানবাধিকারের প্রশ্ন উঠেছিল সেসময় আমাদের করা জাতীয় প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন এটা।’
বিদেশ মন্ত্রকের এই দাবির পাল্টা হিসেবে ইউএনএইচআরসি বলেছে, সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতের প্রতিবেশী মুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে বহু আহমদি, হাজারা, শিয়া আছেন, যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বী হলেও সেখানে সংখ্যালঘু। সুপ্রিম কোর্টে ইউএনএইচআরসি–র প্রশ্ন, সিএএ–র প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ওই সব সংখ্যালঘু মুসলিমদেরও তাহলে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কী হবে। ইউএনএইচআরসি–র এই মন্তব্যের অবশ্য কোনও পাল্টা জবাব দিতে পারেনি বিদেশ মন্ত্রক।
তড়িঘড়ি সিএএ লাগু করে দিয়েছিল মোদি সরকার। কিন্তু কথায় বলে সবুরে মেওয়া ফলে। সেই পুরনো প্রবাদবাক্যটা বোধহয় আরেকবার স্মরণ করে নেওয়া উচিত ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের। আগে থেকেই বিক্ষোভ চলছিল। সিএএ আইন হতেই অবস্থান বিক্ষোভ, অবরোধ, মিছিল, প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশ। আর বিজেপি সমর্থকরা এর পক্ষে পাল্টা বিক্ষোভ শুরু করায় সেই উত্তাপ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন প্রান্তে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসার মূল কারণও সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ। ফলে মুখে স্বীকার না করলেও সিএএ নিয়ে যে ঘরে–বাইরে চাপ বাড়ছে মোদি সরকারের উপর তা একরকম স্পষ্ট বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।