নিউজ ডেস্ক:- এবার চলছে কাগজ আমি দেখাব নার রাজনীতি তথ্য জানার অধিকার আইনে একের পর এক প্রশ্ন জমা পড়ছে বিজেপি নেতৃত্বদের নাগরিকত্বের প্রমাণ জানতে৷ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ছাড় মেলেনি স্বয়ং রাষ্ট্রপতিরও৷ কিন্তু, এর ফলে দেখা যাচ্ছে ‘কাগজ আমরা দেখাবো না’ বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে সেইসব নাগরিকদের দিকে, যাঁরা ইতিমধ্যেই এই দাবিতে সরব হয়েছেন৷ তবে সাধারণ নাগরিকও ছেড়ে কথা বলছেন না৷ প্রশ্ন করছেন, সরকার কি ভয়ে ‘কাগজ দেখাবো না’ প্রকল্প চালু করে দিয়েছে? প্রধানমন্ত্রীর দফতর উত্তর দিয়েছে উনি জন্মসূত্রে নাগরিক, কিন্তু ১৯৫৫-র আইন অনুসারে ওনার নাকি কোনও ‘কাগজ’ বা নথির প্রয়োজন নেই৷ তাই জন্মের কাগজও দেখানও হল না৷
এদিকে দিলীপ ঘোষ, বিপ্লব দেব আর গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানী কি আদৌ নাগরিক? আরটিআই-এর উত্তরে পরিষ্কার লেখা রয়েছে ‘NIL’৷ যা যথেষ্টই সন্দেহজনক৷ তবে এর পক্ষে সাফাই দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তর দিয়েছে যে তারা নাগরিকত্বের প্রামান্য কাগজ রাখে বটে, কিন্তু এই নেতামন্ত্রীদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর ওদের কাছে নেই৷ অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির দফতর বলেই দিয়েছে প্রশ্নতে ত্রুটি রয়েছে তাই উত্তরই দেওয়া যাবে না৷ প্রশ্ন উঠছে তারা জনগণের কাছে কাগজ চাইছে যাদের নিজেদের কাগজের ঠিক নেই? পালিয়ে বেড়াচ্ছে উত্তর দেবে না বলে?
‘উই দ্য পিপল অফ ইন্ডিয়া’ অর্থাৎ আমরা ‘ভারতের জনগণ’ অর্থাৎ ‘আমরা ভারতের নাগরিক’৷ তিনটি আইনের মাধ্যমে এই ‘নাগরিকত্ব’কে সংজ্ঞায়িত, চিহ্নিত, যাচাইকৃত ও অনুপ্রবেশকারীদের থেকে স্বতন্ত্র করা হয়েছে৷ প্রথম আইনটি, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন (বহুবার সংশোধিত, সাম্প্রতি সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সর্বশেষ সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছে)৷ দ্বিতীয়টি, ১৯৪৬ সালের বিদেশী আইন এবং তৃতীয়টি হল ১৯২০ সালের পাসপোর্ট আইন৷
ভারতে বসবাসরত সেই বাসিন্দা যাঁরা ভারতীয় নন তাঁরা প্রত্যেকেই অনুপ্রবেশকারী, যদি তাঁরা পর্যটক বা কূটনীতিক না হয়ে থাকেন৷ কারণ ভারতের শরণার্থী নির্ধারণের আইন নেই৷ তিব্বতি, শ্রীলঙ্কার তামিল এবং কয়েকটি বিদেশী গোষ্ঠীর মানুষ শরণার্থী, যেহেতু তৎকালীন সরকার তাদের এই মর্যাদা দিয়েছিল৷
বিদেশী আইনের আওতায় সমস্ত অনুপ্রবেশকারী বা অবৈধ শরণার্থীদের ভারত থেকে বহিষ্কার করা সরকারের কর্তব্য৷ যেহেতু তেমন কোনো আইন এদেশে নেই তাই ভারতে কতজন অবৈধ শরণার্থী বসবাস করছেন তার সঠিক কোন সঠিক পরিসংখ্যানও নেই৷ অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা নির্ধারণ করা আর ভারতীয় অর্থনীতিতে প্রচলিত কালো টাকার পরিমাণ অনুমান করার একই – যেখানে অর্থের উপস্থিতি রয়েছে, তবে তা সরকারী হিসেবের বাইরে এবং তাই এটি শুধুই অনুমান করা যায়৷ তাই আনুমানিক ভিত্তিতে অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করতে দেশের কোটি কোটি নাগরিকদের চূড়ান্ত হয়রানি করে আসলে কি করতে চাইছে কেন্দ্র, তার সবটাই চূড়ান্ত সন্দেহজনক বলেই মনে করছে শিক্ষিত নাগরিক সমাজ৷