ওয়েব ডেস্ক:- সারা দেশে এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫,১৯৪-এ পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও গ্রামীণ বিষয়ক সচিব মিলে করোনাভাইরাস ও বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে একটি বিশদ উপস্থাপনাও তৈরি করেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন যে, ১৪ এপ্রিল লকডাউন শেষ করা সম্ভব হবে না। সব দলের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে মোদি বলেছিলেন যে তিনি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন অবশ্যই। তবে সম্ভবত লকডাউন এত তাড়াতাড়ি শেষ হতে পারে বলে মনে হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “COVID-19-এর পরে জীবন আর আগের মতো হবে না, হয় তা প্রাক-করোনা এবং উত্তর-করোনো হবে।” প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে রাজনৈতিক নেতাদের বলেন, “ব্যাপকভাবে আচরণমূলক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত পরিবর্তন সাধন করতে হবে।”
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই নিয়ে আলোচনা করতেই মোদি এই বৈঠকটি ডাকেন। সারা দেশে এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫,১৯৪-এ পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও গ্রামীণ বিষয়ক সচিব মিলে করোনাভাইরাস ও বর্তমান পরিস্থিতি বিষয়ে একটি বিশদ উপস্থাপনাও তৈরি করেন। COVID-19 মহামারী রোধে ১৩০ কোটি মানুষ এখন লকডাউনে রয়েছেন, যা ১৪ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা এবং প্রধানমন্ত্রী এই লকডাউন আরও বাড়ানোর হবে কিনা সেই বিষয়ে এই সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত নেবেন। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শনিবার তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠক করবেন।
ভাইরাসের দ্রুত বিস্তার রুখতে এবং আগামী সপ্তাহগুলিতে এই সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আগাম সতর্কতা হিসেবেই অনেক রাজ্য লকডাউন সম্প্রসারণের আবেদন করেছে। হাজার হাজার অভিবাসী শ্রমিকের সঙ্কট, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এবং বাণিজ্যিক লোকসান এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম এই অর্থনীতির কিছু অংশ চালু করার সরকারের উপরও চাপ ফেলছে। আলোচ্য পরিকল্পনাগুলির মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাস হটস্পটগুলি সিল করা এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সীমাবদ্ধতা কমিয়ে আনা। মন্ত্রীদের আরও পরামর্শ যে, স্কুল, কলেজ এবং ধর্মীয় স্থানগুলিও আরও কয়েক সপ্তাহ বন্ধ রাখা হোক। দেশে রেল, বাস, মেট্রো পরিষেবাও আপাতত চালু না হওয়ারই ইঙ্গিত মিলেছে।
কংগ্রেসের গোলাম নবী আজাদ, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত এই ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন। গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধি এবং পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিরোধী নেতাদের ফোন করেন এবং পরামর্শ চান। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল এবং প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও এইচডি দেবেগৌড়ার সঙ্গেও কথা বলেছেন মোদি।
বুধবার করোনা ভাইরাস ও তার মোকাবিলা নিয়ে সর্বদলীয় এক বৈঠকে একথা বলেছেন মোদী। সূত্রের খবর, তিনি বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে ১৪ এপ্রিল হয়ত লকডাউন তোলা সম্ভব নয়।’
এদিন তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস শেষ হয়ে গেলেও সবকিছু আর আগের মত হবে না। প্রি-করোনা এবং পোস্ট করোনা স্টেজ থাকবে।’ সামাজিক ও ব্যবহারিক বেশ কিছু পরিবর্তন হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
২৫ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এই লকডাউন। ৩ সপ্তাহ, ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই লকডাউন চলার কথা। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমনটাই জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অনেক বিশেষজ্ঞ মানুষই মনে করছে লকডাউন আরও বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এখন সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।