বড়িশা জনকল্যাণ মোড়ে ব্যবসা বন্ধ করার জন্য হুমকির অভিযোগ
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : দীর্ঘদিন লকডাউনের বন্ধের জেরে ব্যবসা বানিজ্য এখন বিপর্যয়ের মুখে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই তাদের ছোটখাটো ব্যবসার অভিমুখ পরিবর্তন করে অন্য কোনও ব্যবসাকে জীবিকা করতে বাধ্য হয়েছে। অন্যথায় দু মুঠো অন্ন সংস্থান করা তাদের পক্ষে দূরূহ হয়ে উঠতো বলেই অধিকাংশ মানুষের ধারণা। লকডাউনের মধ্যে গাড়িঘোড়া বন্ধ থাকায় অন্যান্য অনেকের মতোই টাটা সুমো গাড়ির চালক বড়িশার প্রদীপ সাউও কর্মহীন হয়ে পড়ে। আর্থিক অনটনের মধ্যে সম্প্রতি আন লকডাউনে সে বাধ্য হয়ে বাড়িশা জনকল্যাণ মোড়ের (বাইপাসের) ফুটপাথে ঘুগনি, আলুর দম বিক্রি শুরু করে। ঠিক এরই মধ্যে একদিন এলো প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের এক নেতার হুমকি “এখানে এভাবে তোকে ব্যবসা করতে দেবো না।” এমন কি তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, আন লকডাউন বন্ধে গাড়ির চালক প্রদীপ সাউ ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত জনকল্যাণ মোড়ে (জেমস লঙ সরণী) বাইপাসে ফুটপাথেই সে তার টাটা সুমো গাড়ির মধ্যেই ঘুগনি, আলুর দম, মুড়ি ইত্যাদি বিক্রির ব্যবসা শুরু করেছিল। কিন্তু প্রভাবশালী ওই নেতার “দেখে নেওয়ার” হুমকী আসার পর থেকে সে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বলে তার অভিযোগ।
প্রদীপের অভিযোগ, ওই নেতার কথা না শোনায় সম্প্রতি তাকে সখেরবাজার পার্টি অফিসেও ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেও তাকে কড়া বার্তা দেন ওই নেতা। প্রদীপ জানিয়েছে, লকডাউনের আগেও সে যখন সুমো গাড়ি চালাতো, তখন জনকল্যাণ মোড়ে (বাইপাসে) ফুটপাথেই তার গাড়িটি গ্যারেজ করতো। এনিয়ে প্রতিবেশীরা কেউ কোনোদিন আপত্তি করেননি। উল্টে তারা তাকে সুনজরে দেখতেন। কারন রাত বেরাতে এলাকার করো কোনও আপদ বিপদ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডাক পড়তো প্রদীপের।
১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সেই একই জায়গায় তার গাড়ির মধ্যে ঘুগনির ব্যবসার জন্য ওই নেতা কেন তাকে হুমকি দিচ্ছেন সেটাই তার বোধগম্য হচ্ছেনা বলে তার অভিযোগ। এইসঙ্গেই প্রদীপ সাউ জানায়, এই ব্যবসা তুলে দিলে সে না খেয়ে মরবে। কারন অন্য কোনও ব্যবসা করার মতো পুঁজিও তার কাছে নেই। প্রতিবেদকের (সাংবাদিকের) এক প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, “লকডাউনের পর এই আন লকডাউনেও কেউ গাড়ি ভাড়া নিচ্ছেনা। এই ঘুগনীর ব্যবসাটা তুলে দিলে আমি অনাহারে মারা যাবো।”
এব্যাপারে ওই নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার ফোনের লাইন পাওয়া যায়নি। বারংবার জানানো হয় “নেটওয়ার্ক বিজি”। যেহেতু ওই নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি, তাই নেতার নামটা এখানে উল্লেখ হলোনা। এব্যাপারে অবশ্যই আমরা ওই নেতার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করবো। কারন কোনও ভূল বোঝাবুঝি কিংবা কোনও গুরুত্বপূর্ণ কারণে হয়তো ওই নেতা প্রদীপকে ওই জায়গায় ব্যবসা করতে আপত্তি তুলেছেন। যোগাযোগের পরই এর প্রকৃত কারণটা অবশ্যই জানা যাবে। বিতর্কেরও অবসান ঘটবে।