“দাড়ি” কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা?

Spread the love

লিখছেন—ডাঃ ইয়ার আলী

মেডিকাল অফিসার, ওয়েষ্ট বেঙ্গল হেল্থ সার্ভিস৷

 

“দাড়ি ” হল সৃষ্টিকর্তা নির্ধারিত এমন একটি সৌন্দর্যায়ন যা শুধুমাত্র পুরুষদেরই জন্য খাশ! বিভিন্ন অসুখ যেমন— হিরসুটিজম, হাইপারট্রিকোসিস, পিসিওএস প্রভৃতি ছাড়া পুরুষদের স্বাভাবিক দাড়ি হবেই বয়োঃসন্ধি পার হলেই; অপরদিকে, মহিলাদের দাড়ি হবেই না৷ এটাই হল সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির প্রজ্ঞা ও সুন্দরতম গঠণ৷
বেশকিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ডে গুটিকয়েক অমুসলিম এর দাড়ি ও কুকুরের পশম নিয়ে যে তুলনামূলক গবেষণা(যা নিতান্তই ভূল ও পেড )বিবিসি নিউজে প্রকাশিত হয়েছে —তাকে খন্ডন করতে ও প্রকৃত সত্যকে উন্মোচন করতেই এই প্রতিবেদন৷

দাড়ি রাখা যেমন ইসলামে সহিহ হাদিস দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে, তেমনি এর যত্ন নেওয়ার ব্যাপারেও নির্দেশ আছে৷ গোঁফকে ছাট করে দাড়িকে ছেড়ে দিতে যেমন আদেশ করা হয়েছে, তেমনি নিয়মিত গোসল, ওযু তে দাড়িকে আলাদাভাবে ধৌত করার নির্দেশ বর্ণিত হয়েছে৷ উপরন্তূ, নিয়মিত দাড়িকে চিরুনি করে , যায়তুন তেল দিয়ে( যেটা অত্যন্ত শক্তিধর এন্টি ব্যাক্টেরিয়াল, এন্টি ভাইরাল, এন্টি ফাংগাল – বহু গবেষণায় ও বাস্তবতায় প্রমাণিত) যত্ন নেওয়ার ব্যাপারেও মানবতার মুক্তির দূত হজরত মুহম্মদ (সঃ) প্রমাণ ও নির্দেশ দিয়ে গেছেন৷

দেহের ইষ্ট্রোজেন বা প্রজেষ্টরন নয়, বরং টেষ্টোষ্টেরন এর উপস্থিতি ও পরিমিত কাজের জন্যই দাড়ি গোঁফ গজায়৷ সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ঠগুলি এদের জন্যই প্রকাশ পায়৷ দেহের ইমিউনিটি অনুযায়ী ত্বকের যেকোন জায়গায় বিভিন্নরকম জীবাণু বৃদ্ধি পেতে পারে; তবে হেয়ার ফলিকল সমৃদ্ধ এলাকাগুলি বেশী সংক্রমন প্রবণ৷ এক্ষেত্রে বোগল, নাভির নিচে, স্ক্যাল্পেও সংক্রমণ হতে পারে৷ নিয়মিত মাথার চুল কাটা বা যত্ন নেওয়ার আদেশ ইসলামে আছে৷ বোগল বা নাভির নিচের চুলকে নির্দিষ্টভাবে ৪০ দিনের মধ্যেই ছেঁটে ফেলা বা উপড়ে ফেলার নির্দেশ জোরালোভাবে ইসলামে বলা হয়েছে৷ যাতে, বিভিন্ন সংক্রামক জীবাণুগুলি দেহের অযাচিত ক্ষতিসাধন করতে না পারে৷
তাহলে, নিশ্চয় অনুধাবন করতে পারছেন যে, দাড়ি রাখাটা যেমন জরুরী , তেমনি এর যত্ন নেওয়াটাও জরুরী৷
দাড়ির কতকগুলি বাস্তব ও বৈজ্ঞানিক উপকারঃ
১) মুখমন্ডলের ত্বক খুবই পাতলা৷ নিয়মিত ব্লেড দিয়ে সেভ করলে, সেলুলার ইন্টেগ্রিটি নষ্ট হয় ;ফলতঃ মুখমন্ডলের ত্বকে খুবই সহজেই বিভিন্ন মাইক্রোবস প্রবেশ করে যায়৷ বিভিন্ন রাস বা হেডেক, মাইগ্রেন, সাইনাসের প্রবলেম বেশী হয়৷
২)দাড়ি নিজেই মুখমন্ডলের ত্বককে এক্মটার্নাল মাইক্রোট্রমা যেমন—UV রে, ডাইরেক্ট এয়ার ব্লো, ডাষ্ট প্রভৃতি থেকে রক্ষা করে৷
৩) ইমিউনিটি স্ট্রং থাকে ফলে, কোল্ড, হেডেক কম হয়৷
৪) মুখমন্ডলের ত্বকের ঈমিউনিটি ও ইন্টেগ্রিটি ঠিক থাকার জন্য মুখমন্ডলের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পায়৷

তাই, অহেতুক দাড়ি নিয়ে যারা অসত্য তথ্য ও ভূল গবেষণা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন, তারা আর কেউ নয়; তারা হল— অপরূপ অবয়বে ও সৌন্দর্য দিয়ে সৃষ্টি মানুষের সৃষ্টিকর্তার অভিসপ্ত অথবা বিভ্রান্ত জাতি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.