আবহাওয়া হল একটি পরিবেশীয় অবস্থা যেটা বাতাস, বাতাসে জলীয় বাষ্প,তাপমাত্রা —এদের পারস্পরিক সহাবস্থানের অবস্থা৷ এই অবস্থা আবার নির্ভর করে সূর্যের আপেক্ষিক দূরত্বগত অবস্থান, বায়ুস্তরের ঘনত্ব, বায়ুতে অবস্থিত বিভিন্ন অনুর পরিমাণের উপর৷ নিবিড়ভাবে রেডিয়েশন, গ্রীনহাউস এফেক্ট,অসহনীয় দূষণের বাড়াবাড়িতে আবহাওয়া বিগত কয়েক বছর যাবৎ অনির্দিষ্টভাবে পরিবর্তনশীল৷ গতানুগতিক আবহাওয়ার প্রভাব আর সেরকম লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা৷
এখন, চলছে প্রচন্ড তাপপ্রবাহ! কোথাও কোথাও ৪০—৫৫ ॰ সেলসিয়াস ! এর কনসেকুয়েন্সি প্রভাব কী কী হতে পারে এবং কীভাবে সুস্থ থাকা যায়— সেটা নিয়েই আজকের লেখনি৷
কমবেশী প্রায় সকল মানুষই অল্পবিস্তর “ডিহাইড্রেশন” এ আক্রান্ত৷ সেটা অনেকাংশে কোন রকম সিম্পটম্পস বা লক্ষণ প্রকাশ পায়না৷ তবে, “ডিহাইড্রেশন” কে বৃদ্ধি করে এমন ফ্যাক্টরগুলি থাকলে, ক্রনিক ডিহাইড্রেশনের জন্য যে সব সমস্যা লক্ষিত হয় সেগুলি মৃত্যুর কারণও হতে পারে৷
ডিহাইড্রেশনে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যায়, রক্তের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদানগুলির পরিবহনের গতি কমে আসে৷ থিক ব্লাড সহজেই জমাট বেঁধে যায়৷ বিভিন্ন অর্গানগুলি পর্যাপ্ত হাইড্রেশনে না থাকার জন্য, অর্গানগুলির পরিমিত ও যথাযথ কাজে ব্যাঘাত ঘটে৷ অলরেডি ব্লাডে বিভিন্ন জার্ম থাকলে, সেগুলি অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেতে থাকে৷ ব্লাডে বিভিন্ন হেভি মেটালস থাকলে, ডিহাড্রেশনে বেশী ঘন হয়ে যাওয়ায় অক্সিডেটিড সেল ড্যামেজ বেশী হতে থাকে৷ অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে দেহের ও ব্লাডের রস বা জলটা বেশী বের হওয়ার জন্য উপরের সবগুলি ধাপে ধাপে হতে থাকবে৷
ফলতঃ প্রেসার বৃদ্ধি পাবে, স্ট্রোক বৃদ্ধি পাবে, গ্যাষ্ট্রাইটিস বৃদ্ধি পাবে, পেটের সমস্যা, প্রস্বাবে জ্বালা বা ইনফেকশন বৃদ্ধি পাবে, বডি হিট হবে, হাত পা অবশ বা ঝিমঝিম বৃদ্ধি পাবে, লেথার্জিক বা ক্লান্তিভাব বৃদ্ধি পাবে৷ ব্রেনফগ বৃদ্ধি পাবে, ঘুমের ব্যাঘাত হবে, মেয়েদের মাসিক বা সাদাস্রাবের সমস্যা বৃদ্ধি পাবে৷ জয়েন্ট পেন বা মাংসপেশীর ব্যাথা বৃদ্ধি পাবে৷ এই সবগুলি রক্তের ঘনত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকবে৷
অতএব, “ডিহাইড্রেশন” কে দূর করতে দুই প্রকার ব্যবস্থা আপনাকে নিতে হবে যাতে উপরের শারিরীক ক্ষতি থেকে নিজেদের প্রতিরোধ করা যায়—
১)রাস্ট্রীয়ভাবে, রেডিয়েশন দূষণ, গ্রীনহাউস প্রভাব কম করার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া৷
২)অতিরিক্ত হিটে কম এক্মপোজার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত ব্যবস্থা নেওয়া৷ এবং” ডিহাইড্রেশন” অবস্থাকে হাইড্রেশন অবস্থাতে আনার জন্য নিয়মিত নিম্নোক্ত খাদ্যগুলি মেনে চলা:—
বর্জনীয়ঃ হাইপ্রোটিন, হাইফ্যাটযুক্ত খাবার, সুগার, কার্বনেটেড লিকুইড প্রভৃতি
গ্রহনীয়ঃ প্লেন জল, লেবু জল, ওয়াটারি ফ্রুটস ( দৈনিক , সেহরি ও ইফতারে অবশ্যই খাবেন)
আপনাদের জন্য লিখেছেন— ডাঃ ইয়ার আলী, মেডিক্যাল অফিসার( পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য)