বহরমপুরে পশ্চিমবঙ্গ স্বাধিকার রক্ষা মঞ্চের উদ্যেগে ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল ও ওয়াকফ বিল নিয়ে আলোচনাসভা
হাসানবাসির ,৩১ শে আগস্ট, বহরমপুর:,গত ২২শে মে ২০২৪ . মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট ২০১০ সালের পর সমস্ত ও বি সি সার্টিফিকেট বাতিল করেছে। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ স্বাধিকার রক্ষা মঞ্চের আহবানে ,বহরমপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অডিটোরিয়ামে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা । পশ্চিমবঙ্গ স্বাধিকার রক্ষা মঞ্চের স্থায়ী সভাপতি এবং আজকের সভার সভাপতি ডাক্তার মীর হাসনাত আলী, তার স্বাগত ভাষণে বলেন যে আজকের এই আলোচনা সভার উদ্দেশ্য এবং স্বাধিকার রক্ষা মঞ্চের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন । মূল আলোচকরা ছিলেন, কলকাতা ক্ষুদিরাম বসু সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর আফসার আলী মহাশয়, খিদিরপুর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ শামসুল আলম, নলহাটি কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম, নলহাটি কলেজের অধ্যাপক সুজন মন্ডল। বক্তারা তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে সংরক্ষণ কোন সামাজিক প্রেক্ষিতে ভারতবর্ষে প্রয়োজন হয়েছিল এবং এই সংরক্ষণের আওতায় কারা এসেছিল তা বিস্তারিতভাবে এবং তথ্য সহকারে আলোচনা করেন।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে আরো বলেন যে মুসলমান সম্প্রদায় আর্থিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও দেশভাগের পর কোনো সরকারই মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেনি। সুতরাং মুসলমান সম্প্রদায় চিরদিনই বঞ্চিত হয়েছে।
২০১০ সালের পর থেকে ওবিসি সংরক্ষণের আওতায় আসার ফলে মুসলমান ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা ও চাকরির ক্ষেত্রে কিছু কিছু সুযোগ পাচ্ছিল। ফলে খুব ধীরগতিতে হলেও এগুচ্ছিল । কিন্তু মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট ২০১০ সালের পর থেকে সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করায় সেই সুযোগগুলোর দরজা মুসলমানদের জন্য চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। যদিও সুপ্রিম কোর্টে এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার এবং মুসলমানদের কিছু সংস্থা আপিল করেছে, কিন্তু সেই রায় কোন দিকে যায় তা বলা কার্যত অসম্ভব। বক্তারা আরও বলেন যে ওবিসি সংরক্ষণ রাজ্য সরকার বিধানসভায় নতুন আইন এনে আবার মুসলমান সম্প্রদায়কে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় হিসাবে এই সংরক্ষণের আওতায় এনে তাদের ওবিসি সার্টিফিকেট প্রদান করা যেতে পারে। বক্তাদের বক্তব্য থেকে আরো উঠে আসে যে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি জনসচেতনতা করে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং মুসলমানদের যে পশ্চাৎপদতা তা থেকে সমাজকে উত্তোলনের দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষিত মানুষকে। ডক্টর সামসুল আলম বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে বর্তমানে বিচার ব্যবস্থার একটা বৃহৎ অংশ পক্ষপাত দুষ্ট রায় দিচ্ছে এবং তার অনেক উদাহরণ তিনি তুলে ধরেন। সুতরাং সর্বোচ্চ কোর্টে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।
তাই সময় নষ্ট না করে শান্তিপূর্ণভাবে এবং সংগঠিতভাবে মুসলমান সম্প্রদায়কে রাস্তায় নেমে শাসকের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে করে শাসক বাধ্য হয় আবার তার আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন এনে এই সংরক্ষণ পুনরায় চালু করা।
পরিশেষে দুঃখ করে বলতে হয় যে যাদের জন্য আজকের এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল সেই শিক্ষিত যুবক-যুবতী এবং ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে যারা চাকরি করছেন, তাদের অনেকবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও আজকের সভায় ব্যাপকভাবে হাজির হয়নি। এটা অত্যন্ত বেদনার এবং আক্ষেপের। এই সম্প্রদায়ের ঘুম কবে যে ভাঙবে তা হয়তো স্বয়ং আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।
আজকের সভার সভাপতি ছিলেন ডাক্তার মীর হাসনাত আলী এবং অনুষ্ঠানটি সাবলীল ভাবে সঞ্চালনা করেন শিক্ষক এবং মানবাধিকার কর্মী সামসুল হালসানা সহযোগিতায় খাইরুল ইসলাম,ডাঃ এম আর ফিজা,আনিসুর রহমান। এছাড়াও সার্বিকভাবে ইউনাউটেড গার্ডিয়ান কাউন্সিল সহযোগিতা করেন ।