অনলাইনে ১৯৫২, ১৯৫৬, ১৯৬১, ১৯৬৬, ১৯৬৮, ১৯৭১ ও ১৯৭৫ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশের উদ্যেগ নিচ্ছে আর্কাইভ দফতর

Spread the love

ওয়েব ডেস্ক, ৬ অক্টোবরঃ অসমের এনআরসিতে ১৯ লক্ষ বাঙালির নাম না ওঠার বেশ আতঙ্কিত হয়ে পরেছে সেখান কার লোকজন। তারপর সেই অসম সীমান্ত লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। এই রাজ্যের আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি খাদ্য দপ্তরের উদ্যোগে রেশন কার্ড সংশোধন করার কাজ ও ভোটার কার্ড ভেরিফিকেশনের কাজ শুরু হয়। তারপর সেই কাজ করতে গিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিডিও অফিস গুলিতে সাধারন মানুষের ভিড়।

তার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় থেকে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। সাধারন মানুষের ধারনা এটা নাকি এন আর সির প্রাথমিক ধাপ। তারপরেও বিজেপির রাজ্যে স্তরের নেতারা সাধারন মানুষকে বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে ভয় দেখাচ্ছেন যে এন আর সি হলে এই রাজ্যের থেকে মুসলিম দের তাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে অভিযোগ। তাই মানুষ নিজের সমস্ত রকমের কাগজ পত্র ও প্রমান পত্র ঠিক করতে বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করছে। এমনকি জমির কাগজ ও পুরন ভোটার লিস্টের কাগজ আনতে কলকাতায় গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একনাগাড়ে প্রচার চালাচ্ছেন রাজ্যে এনআরসি হবে না। তবুও আতঙ্ক যাচ্ছে না। বিভিন্ন জেলার মানুষরা এসে ভিড় জমাচ্ছে ডিরেক্টরেট অফ আর্কাইভ দপ্তরে। বিভিন্ন জেলা থেকে লোক আসছেন দলে দলে। আর এই ভিড় সামাল দিতে এবার অনলাইনে ১৯৫২, ১৯৫৬, ১৯৬১, ১৯৬৬, ১৯৬৮, ১৯৭১ ও ১৯৭৫ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিচ্ছে আর্কাইভ দফতর। পুজোর ছুটির পরেই এই সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক আধিকারিক।

সার্টিফাই কপি অব ভোটার কপি পাওয়ার পদ্ধতি প্রসঙ্গে ওই আধিকারিক বলেন, ওই সাল গুলোর মধ্যে যে “ভোটার লিস্ট” আর্কাইভ দফতরে এসেছে সে তালিকা পাবেন আবেদনকারীরা। সার্টিফিকেট দফতরে এসেই নিতে হবে। তালিকায় নাম আছে কিনা সে বিষয়টি অনলাইনে খুঁজে নিতে পারবেন প্রার্থীরা। একইসঙ্গে সার্টিফাইড কপির জন্য আবেদনও অনলাইনে করা যাবে। আবেদনের জন্য ফি নেওয়ার বিষয়টিও ভাবনাচিন্তা চলছে। আবেদন করার পর আর্কাইভ দফতর ২০ থেকে ৩০ দিন সময় নেবে। সেই সময়ের মধ্যে সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে। সার্টিফিকেট নেওয়ার সময় লাগবে ৫ টাকা এবং ২ টাকা দামের কোর্ট ফি।

এই উদ্দ্যোগ প্রসঙ্গে ওই আধিকারিক বলেন, দপ্তরে কর্মী সংখ্যা খুব কম তাই এক দিনে কুড়ি থেকে ত্রিশ জনের বেশি মানুষকে সার্চিংয়ের সুযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পুজোর পরে আরো বেশি কাজের চাপ পড়বে। তাই অনলাইনে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তবে এখন সার্টিফাই কপি অফ ভোটারের আবেদন দপ্তরে এসে করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আর্কাইভ দফতরে এসে ফর্ম নিতে হবে। আবেদনকারীরা তা পূরণ করে জমা দেবে। একইসঙ্গে কুড়ি টাকা সার্চিং ফি জমা দিতে হবে। ভোটার তালিকায় নাম আছে কিনা তা জানার জন্যই এই ফি লাগবে। আবেদনকারীদের ভোটার তালিকায় নাম খুঁজতে হবে। তালিকায় নাম থাকলে সিরিয়াল নাম্বার ফাইল নাম্বার লিখে জমা দিতে হবে দফতরে। দফতরে সেই ফাইল নম্বর দেখে তা টাইপ করে সার্টিফিকেট প্রস্তুত করবে। সার্টিফিকেট তোলার জন্য আবেদন কারীরা কুড়ি থেকে ত্রিশ দিনের মধ্যে সার্টিফিকেট নেওয়া যাবে। সার্টিফিকেট নেওয়ার দিনে কোর্ট ফি স্টাম্পের সঙ্গে পাঁচ টাকা লাগবে।

প্রতিদিন কতজনকে দেওয়া হয় এ প্রসঙ্গে ওই আধিকারিক বলেন, এর জন্য কোন সরকারি নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। কোনদিন ২০টা কোনদিন তারও বেশি দেওয়া হচ্ছে। দফতরের কর্মী সংখ্যা খুবই কম। তাই গ্রুপ-ডি কর্মীদেরও এই কাজে সহযোগিতার জন্য লাগানো হয়েছে। আবেদনের সময় আবেদনকারীর ভোটার কার্ড প্যান কার্ড অথবা আধার কার্ড অবশ্যই সঙ্গে আনতে হবে। পাশাপাশি তার ফটোকপি ও লাগাতে পারে।

আবেদনকারী নিজে আসতে না পারলে যে আসবেন তার ঐ সমস্ত ডকুমেন্ট সঙ্গে আনতে হবে। বাবা বা মায়ের সার্টিফিকেট নিতে এলে ছেলে বা মেয়ে ভোটার কার্ড সঙ্গে আনবেন। দূর সম্পর্কের হলে ডকুমেন্ট এর পাশাপাশি অথরালাইজড লেটার আনতে হবে। কলকাতার মল্লিক বাজার সংলগ্ন কলামন্দির এর বিপরীত দিকে অর্থাৎ শেক্সপীয়ার সরণিতে ডাইরেক্টরেট অফ আর্কাইভ স্টেট-এর দফতরে এসে আবেদন জমা দেওয়া ও সার্টিফিকেট পাবেন আবেদনকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.