হিন্দু ছেলে মুসলিম সেজে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে ইয়াবা দিয়ে মুসলিম নারীকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ধরা :
এম. ইউছুফ ,অয়ন বাংলা :
পরিচয় গোপন রেখে হিন্দু যুবক মুসলিম সেজে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই পুলিশের কাছে ধরা পড়ে ভন্ড প্রেমিক নয়ন ভট্টাচার্য্য। সোমবার (৪ নভেম্বর) বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জেলার বাকলিয়া থানা পুলিশ শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটির এমএস টাওয়ার থেকে এ প্রতারককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার নয়ন ভট্টাচার্য প্রকাশ মাসুদ রানা রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া পথেরহাট এলাকার স্বপন ভট্টাচার্যের ছেলে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রোজিনা আক্তার নামের (৩৫) এক নারীর সঙ্গে তার স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে। পরে তিনি তার সন্তান নিয়ে থাকতেন। ২০১৭ সালে নয়ন ভট্টাচার্য সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই নারীর সম্পত্তি ও টাকা আত্মসাতের লক্ষে নয়ন ভট্টাচার্য তার পরিচয় গোপন রেখে মাসুদ রানা নামে বিয়ের ভুয়া এফিডেভিট তৈরি করে একসঙ্গে বসবাস করে আসছিলেন। নয়ন ভট্টাচার্য বিবাহিত ও তার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। নয়ন ভট্টাচার্যের স্ত্রী-সন্তান চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় থাকেন।
বিয়ের পর মোহাম্মদ মাসুদ রানা প্রকাশ স্বপন ভট্টাচার্য রোজিনার জন্য জায়গা ও দোকান কেনার নাম করে বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে টাকা ও তার স্বর্ণ নিয়ে বিক্রয় করে টাকা আত্নসাৎ করে। গত মাস খানিক পূর্বে তার স্ত্রী রোজিনা আক্তার জানতে পারে যে, সে একজন হিন্দু এবং তার নাম নয়ন ভট্টাচার্য ও তার আগের একজন স্ত্রী আছে এবং তাহার দুইটি কন্যা সন্তান আছে।
রোজিনা আক্তার বুঝতে পারে যে, সে তার টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাত করার জন্য মিথ্যা মুসলিম নাম পরিচয় ধারন করে বিবাহের নাটক করে। পর রোজিনা টাকা ফেরত চাইলে সে টাকা আজ দিবে কাল দিবে বলিয়া টালবাহানা করে।
এক পর্যায়ে রোববার (৩ নভেম্বর) ওই নারীকে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা দেয় নয়ন ভট্টাচার্য। সকালে ওই নারীর বাসায় যান নয়ন ভট্টাচার্য। এ সময় বাসায় নাস্তাও খান তিনি। পরে চলে আসার সময় ওয়ারড্রবের ড্রয়ারে ২৯০ পিস ইয়াবা রেখে চলে আসেন। পরে বাসা থেকে বের হয়ে স্থানীয় বাকলিয়া থানা পুলিশকে নয়ন ভট্টাচার্য খবর দেন যে, শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটির এমএস টাওয়ারের একটি বাসায় ইয়াবা রয়েছে। পর পুলিশ নয়ন ভট্টাচার্যকে নিয়ে ওই বাসায় ইয়াবা উদ্ধারে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পুলিশ ইয়াবা খুঁজে না পাওয়ায় চলে আসতে চায়। তখন নয়ন ভট্টাচার্য নিজে বাসার ওয়ারড্রবের ড্রয়ার খুলে ২৯০ পিস ইয়াবা বের করে দেয়।
বাকলিয়া থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দিন জানান, পাওনা টাকা পরিশোধ না করে উল্টো ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন নয়ন ভট্টাচার্য প্রকাশ মাসুদ রানা নামে এক প্রতারক। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী নারী ও পুলিশ বাদি হয়ে পৃথক মামলা দায়ের করেছে।
ওসি মো.নেজাম উদ্দিন জানান, নয়ন ভট্টাচার্য একজন প্রতারক। নয়নের সঙ্গে ভুক্তভোগী ওই নারীর পরিচয় সাড়ে তিন বছর ধরে। আদালতে নিজের নাম মাসুদ রানা উল্লেখ করে ওই নারীর সঙ্গে বৈবাহিক সর্ম্পক রয়েছে বলে একটি এফিডেভিট করেন। দীর্ঘদিন ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করেন। এ সময় ওই নারীর কাছ থেকে বিভিন্ন সময় টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ইয়াবা রেখে ফাঁসানোর চেষ্টার কথা স্বীকার করে নয়ন ভট্টাচার্য।