ওয়েব ডেস্ক :- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মৃত্যুশয্যায় শায়িত, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি, দেরিই হয়ে গেছে। হয়তো দিন কয়েক আগে নীলরতন সরকারের কাছে নিয়ে গিয়ে ফেললে বাঁচানো যেত, নিয়ে যাওয়ার আগ মুহুর্তে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় গভীর বেদনায় মানিকের স্ত্রীকে বলেছিলেন – “এমন অবস্থা, আগে টেলিফোন করেননি কেন?”
অত আশঙ্কা ও দুঃখের ভিতরেও মলিন হেসে ভদ্রমহিলা অস্ফুট উত্তর দিয়েছিলেন – “তাতে যে পাঁচ আনা পয়সা লাগে ভাই।”
ভাবলে এই দুঃসহ ছবি রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মত। বিশ বছরের সাহিত্যজীবনে চল্লিশটা উপন্যাস, দু’শ তেইশটি গল্প, একটি নাটক ও কিছু কবিতা প্রবন্ধ দিয়ে সাহিত্যজগৎকে যিনি ভরিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি শেষজীবনে ঠাই নিলেন বস্তিতে। জীবনযুদ্ধে পর্যুদস্ত, বিপন্ন, নিরাশ্রিত মানুষটি আটচল্লিশ বছরের স্বল্পায়ু জীবনের সবটুকু দেখে ফেলেছিলেন।
নিকেলের চশমা, মলিন বেশ-বাস, দীর্ঘকায় শীর্ণ কালো ঋজু আত্মদর্পী মানুষটা শেষকালে বলতে বাধ্য হয়েছিলেন – “দুটি ডাল-ভাতের সংস্থান না রেখে বাঙলা দেশে কেউ যেন সাহিত্য করতে না যায়।”
মানিক- এক নিদারুন ট্রাজেডির মহানায়কের নামই বটে।
এক “পদ্মা নদীর মাঝি” কিংবা “পুতুল নাচের ইতিকথা” উপন্যাস লিখেই বাংলা সাহিত্যে অমর হওয়া যায়। আর মানিক বন্দোপাধ্যায় সেখানে দুই দুইটা মাস্টারপিস উপন্যাস লিখেছিলেন।
শুভ জন্মদিন মানিক বন্দোপাধ্যয়