আসুন হাজী মহম্মদ মহসিন এর সমন্ধে কিছু জেনে নিই

Spread the love

ওয়েব ডেস্ক,অয়ন বাংলা:- বাংলার বিখ্যাত মণীষি ,বাংলার বিখ্যাত দানবীর হাজী মহম্মদ মহসীন এর জীবনী নিয়ে কিছু কথা । মুহাম্মদ মহসিন ১৭৩২ সালে হুগলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজি ফয়জুল্লাহ ও মা জয়নাব খানম। ফয়জুল্লাহ ছিলেন একজন ধনী জায়গিরদার। তিনি ইরান থেকে বাংলায় এসেছিলেন। জয়নব ছিলেন ফয়জুল্লাহর দ্বিতীয় স্ত্রী। জয়নবেরও পূর্বে বিয়ে হয়েছিল। মন্নুজান খানম নামে তার ও তার সাবেক স্বামী আগা মোতাহারের একটি মেয়ে ছিল। আগা মোতাহারও বিপুল সম্পদের মালিক ছিলেন। হুগলি, যশোর, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ায় তার জায়গির ছিল। আগা মোতাহারের সম্পত্তি তার মেয়ে মন্নুজান উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জন করেছিলেন।

গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে মহসিন ও তার সৎ বোন মন্নুজান শিক্ষার্জন করেছেন। পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজধানী মুর্শিদাবাদ যান। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি দেশভ্রমণের সফরে বের হন। সফরকালে তিনি হজ পালন করেন। তিনি মক্কা, মদিনা, কুফা, কারবালাসহ ইরান, ইরাক, আরব, তুরস্ক এমন নানা স্থান সফর করেছেন। সফর শেষে দীর্ঘ ২৭ বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার পর তিনি তার বিধবা বোনের সম্পদ দেখাশোনা শুরু করেন। মন্নুজানের স্বামী মির্জা সালাহউদ্দিন ছিলেন হুগলির নায়েব ফৌজদার।
১৮০৩ সালে মন্নুজানের মৃত্যুর পর মহসিন তার উত্তরাধিকারী হিসেবে সম্পদের মালিক হন। মহসিন খুব ধার্মিক ছিলেন এবং সহজসরল জীবনযাপন করতেন। তিনি চিরকুমার ছিলেন। বিপুল সম্পদ তিনি দানসদকায় ব্যয় করতেন। ১৭৬৯-৭০ সালের সরকারি দলিল অনুযায়ী তৎকালীন দুর্ভিক্ষের সময় তিনি অনেক লঙ্গরখানা স্থাপন করেন এবং সরকারি তহবিলে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।১৮০৬ সালে তিনি মহসিন ফান্ড নামক তহবিল প্রতিষ্ঠা করে তাতে দুইজন মোতাওয়াল্লি নিয়োগ করেন। ব্যয়নির্বাহের জন্য সম্পত্তিকে নয়ভাগে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি ভাগ ধর্মীয় কর্মকাণ্ড, চারটি ভাগ পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য কর্মকাণ্ড এবং দুইটি ভাগ মোতাওয়াল্লিদের পারিশ্রমিকের জন্য বরাদ্দ করা হয়।

হাজি মুহাম্মদ মহসিন ১৮১২ সালে হুগলিতে ইন্তেকাল করেন। তাকে হুগলি ইমামবাড়ায় দাফন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.