আন্তর্জাতিক ডেস্ক:- রাশিয়ার পুতিন বিরোধী সমালোচক নার্ভ এজেন্ট নভিচক হামলার শিকার হয়েছেন বলে মনে করছেন জার্মানি । রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি ।অবশেষে সত্যি হল আশঙ্কা। সোভিয়েত জমানার ভয়াবহ নার্ভ এজেন্ট নভিচক হামলার শিকার হয়েছেন রাশিয়ার বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনি । আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে এমনটাই দাবি করেছে জার্মানির।
বুধবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেলের মুখপাত্র স্টিফেন সেইবার্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নাভালনির শরীর থেকে নেওয়া একাধিক নমুনায় নভিচক গোষ্ঠীর নার্ভ এজেন্টের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। জার্মান সেনার একটি গবেষণাগারে ওই স্যাম্পলগুলি বারবার পরীক্ষা করে এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
এদিকে, শুধু বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি জার্মান প্রশাসন। এভাবে বিরোধী আওয়াজ দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে রীতিমতো তোপও দেগেছে বার্লিন। এই বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে জার্মান সরকারের মুখপাত্র সেইবার্ট সাফ বলেন, “রাশিয়ায় অ্যালেক্সেই নাভালনির উপর এহেন হামলা খুবই ন্যক্কারজনক। আমরা এই ঘটনার তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই গোটা ঘটনার উপর দ্রুত আলোকপাত করার জন্য আমরা রুশ সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।”
রুশ সংবাদ সংস্থা TASS সূত্রে খবর, নাভালনির শরীরে বিষ পাওয়ার কথা জার্মানি জানায়নি বলেই দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ। এছাড়া, নাভালনির উপর হামলার কথাও উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। কিন্তু রুশ সাফাইয়ে মোটেও মন গলছে না জার্মানির। কড়া ভাষায় চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল বলেন, “অ্যালেক্সেই নাভালনির উপর নার্ভ এজেন্ট দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। একজন বিরোধী রুশ নেতার উপর এমন হামলা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।”
উল্লেখ্য, গত ২০ তারিখ সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমানে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। নাভালনি ঘনিষ্ঠদের প্রাথমিক ধারণা, টমস্ক বিমানবন্দরে তাঁর চায়ে বিষ মেশানো হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, নাভালনির স্নায়ুতন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। কোমায় আচ্ছন্ন হন তিনি। সেটা বিষের প্রভাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। এরপর নাভালনির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় জার্মানির বার্লিনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষানিরীক্ষার পর বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন।
ক্রেমলিনের প্রবল সমালোচক তথা পুতিন বিরোধী নাভালনির উপর এর আগেও বিষপ্রয়োগের চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২০১১ সালে ‘Anti-Corruption Foundation’ নামের একটি দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন নাভালনি। রুশ প্রশাসনে ভয়ানক দুর্নীতি তথা প্রেসিডেন্ট পুতিনের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে তাঁর সংস্থাটি। ফলে বিরোধীদের অভিযোগ, স্বাভাবিকভাবেই শাসনতন্ত্রের নিশানায় রয়েছেন নাভালনি।