বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় মাঝ সমুদ্রে ভাসছেন জাহাজের ২ লাখ কর্মী
দেশ,
নিউজ ডেস্ক: – করোনা আবহে গোটা বিশ্ব আজ ছন্নছাড়া ,চারিদিকে এক নিদারুন অসহায়তা এই রকম এক পরিস্থিতিতে মাঝ সমুদ্রে প্রায় দু লক্ষ নাবিক স্ক্রু কর্মীরা ভেসে চলেছে । শেষ মাটিতে পা রেখেছিলাম ফেব্রুয়ারি মাসে। তারপরে আর কোনো ভূভাগে ঠায় মেলেনি। সংবাদ সংস্থা এএফপির সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে এমনটাই জানিয়েছেন তেজস্বী দুজেসা। বাড়ি ফেরার জন্য মন টানিয়ে আছে। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারির কারণে জলসীমা বন্ধ। ফলে বিশ্বজুড়ে প্রায় দুই লাখ মানুষ, মাঝ সমুদ্রে জাহাজে ভাসছে। তাাঁরা কেউ নাবিক,কেউ,কুক,সহ জাহাজের বিভিন্ন পদে কর্মরত।
তেজস্বীদের এই দলে কার্গো জাহাজের প্রকৌশলী থেকে শুরু করে প্রায় ৪০০ কাছাকাছি কর্মী রয়েছেন। ইতিমধ্যেই জাহাজে কাজ করেন, এমন বেশ কয়েকজন আত্মহত্যা করেছেন। বিশ্বজুড়ে জাহাজের কর্মীদের আটকে পড়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। করোনার সংক্রমণ ব্যাপক আকার ধারণ করার আগে এই কর্মীরা জাহাজে চেপে যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বিভিন্ন দেশ তাদের স্থল, জল ও আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে অনেক জাহাজ কর্মীরদের কাজ শেষ হলেও তাঁরা আর দেশে ঢুকতে পারছেন না।
এই পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে সংবাদ সংস্থা এএফপির সঙ্গে কথা বলেন তেজস্বী। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেকে ধরে রেখেছি। কারণ, আমার আসলে কিছু করার নেই।’ একটি কার্গো জাহাজে কাজ করি। আমার ডিউটি শেষ তবুও ঘরে ফিরতে পারছি না। মাঝ সমুদ্রে বিশাল জলরাশির মধ্যেই থাকতে হচ্ছে। তবে আমার মতো প্রায় ৩০ হাজার ভারতীয় কর্মী এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। মহামারির কয়েক মাস আগেই তাঁরা জাহাজ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন। তেজস্বী বলেন, ‘সর্বশেষ ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই জাহাজ থেকে মাটিতে পা রেখেছিলাম গত ফেব্রুয়ারি মাসে।’ জাহাজের কর্মীরা সাধারণত ছয় থেকে আট মাস টানা কাজ করে থাকেন। এরপর আরেক দল কর্মীর কাছে জাহাজ বুঝিয়ে দিয়ে জাহাজ থেকে নামতে পারেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে এবার সেটা সম্ভব হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের বাড়ি ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্যে একটি আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে সম্প্রতি। সারা বিশ্বে যে পরিমাণ জাহাজকর্মী রয়েছেন, তার এক-চতুর্থাংশ ফিলিপাইনের নাগরিক।
জানা গেছে, দেশটির প্রায় ৮০ হাজার জাহাজকর্মী এখনো সমুদ্রে আটকা পড়ে আছেন। এমন অনিশ্চয়তার কারণে সমুদ্রে আটকা পড়ে থাকা বেশ কয়েকজন আত্মহত্যা করেছেন। ফ্লোরিডার পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে ফিলিপাইনের এক নাগরিক আত্মহত্যা করেছেন। এসব ঘটনার পর জাহাজ পরিচালনা করেন, এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
চারিদিকেই শুধু জলরাশি ইচ্ছে থাকলে ঘরে ফিরতে পারছেন হাজার হাজার অসহায় ঐ নাবিকগুলি ।
সৌজন্য :- bbp news