ভিন্ন বর্ণে বিয়ে ঘরে বন্দি করে প্রেট্রল দিয়ে জ্বালিয়ে হত্যা গোটা দেশে নিন্দার ঝড়

Spread the love

অয়ন বাংলা ,নিউজ ডেস্ক:-এক ভয়াবহ হত্যাকান্ড, সমাজ আজ কোন পথে ।
মাত্র ছয় মাস আগেই মঙ্গেশকে ভালবেসে বিয়ে করেছিল উনিশ বছরের রুক্মিণী। কিন্তু মঙ্গেশ ছিল ভিন্ন বর্ণের,তাই রুক্মিণীর পরিবার ওই বিয়ে মেনে নেয় নি। এতটাই ক্ষেপে গিয়েছিল রুক্মিণীর পরিবার, যে তার বাবা, কাকা আর মামা মিলে রুক্মিণী আর তার স্বামীকে বাড়িতে ডেকে এনে ঘরে বন্দি করে গায়ে আগুল লাগিয়ে দেয়।এমনি চাঞ্চল্যকর ঘটানাটি ঘটেছে মাহারাষ্ট্রে।

মহারাষ্ট্রে আহমেদনগর জেলার এই ভয়াবহ ঘটনায় আরও একবার ‘অনার কিলিং’-এর বিষয়টি সামনে এসেছে। রুক্মিণীর পরিবার তাদের বিয়েতে মত না দিলেও মঙ্গেশের বাড়ি থেকে মেনে নেওয়া হয়েছিল এই বিয়ে।

মঙ্গেশের ভাই মহেশ রণসিংহ জানায়, “বিয়েতে রুক্মিণীর বাড়ি থেকে শুধু তার মা এসেছিলেন,ওর বাবা বা মামা কেও আসেনি”।মহেশ আরো জানায়, “রুক্মিণী বা মঙ্গেশের সঙ্গে রাস্তায় ওদের বাড়ির কারও দেখা হলেই হুমকি দেওয়া হত।ফেব্রুয়ারি মাসে এই হুমকির ব্যাপারটা জানিয়ে রুক্মিণী আর মঙ্গেশ থানায় অভিযোগও জানিয়েছিল।”

এই অশান্তির মধ্যেই রুক্মিণীর বাবা-মা ৩০শে এপ্রিল তাকে বাড়িতে ডাকেন।
কিন্তু বাড়িতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রুক্মিণীর ওপরে চড়াও হয় তার বাপের বাড়ির লোকেরা।ব্যাপক মারা হয় তাকে।সেই রাতেই রুক্মিণী স্বামীকে ফোন করে জানায় যে তার পরিবারের লোকেরা তাকে মেরেছে।স্বামীকে অনুরোধ করে সেখান থেকে তাকে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে যেতে। পরের দিন সকালেই মঙ্গেশ রুক্মিণীদের বাড়িতে যায়।

তার আগেই উত্তরপ্রদেশ থেকে রুক্মিণীর কাকা আর মামা সেখানে পৌঁছিয়ে যায়।বাড়িতে তুমুল অশান্তি শুরু হয়,আর তার মধ্যেই মঙ্গেশ আর রুক্মিণী – দুজনকেই মারধর করে রুক্মিণীর কাকা আর মামা।তারপরে দুজনকে একসঙ্গে একটা দড়ি দিয়ে বেঁধে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পরে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

মঙ্গেশ রণসিংহ বলছিলেন, “ঘর থেকে তীব্র চিৎকার শুনে পড়শিরা ওই বাড়িতে গিয়ে দরজা খুলে রুক্মিণী আর মঙ্গেশকে উদ্ধার করেন। তারাই অ্যাম্বুলেন্স ডেকে পুনের এক হাসপাতালে ভর্তি করান।” হাসপাতালে ভর্তি করার সময়ে রুক্মিণীর শরীরের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। মঙ্গেশের শরীরের প্রায় ৪৫ শতাংশ জ্বলে গিয়েছিল। তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ৫ই মে রুক্মিণী মারা যায়।

পুলিশ রুক্মিণীর কাকা সুরেন্দ্র ভারতী, আর মামা ঘনশ্যামকে গ্রেপ্তার করেছে। আহমেদনগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট মনীষ কলভানিয়া জানিয়েছেন, “রুক্মিণীর বাবা রামা রামফল ভারতী পালিয়ে গেছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনাস্থল থেকে এক বোতল পেট্রোল উদ্ধার করা গেছে।”

এই ঘটনা সাড়া ফেলে দিয়েছে দেশ জুড়ে।রুক্মিণীর হত্যার প্রতিবাদে সবর হয়ে উঠছে গোটা দেশ।এর আগেও এই ‘অনার কিলিং’ এর সাক্ষী হয়েছিল এই দেশ।আবার দেখলো সারা ভারতবর্ষ।এই অনার কিলিং এর নামে ভয়াবহ হত্যাকান্ড ,এই আধুনিক যুগেও এই প্রশ্ন এখন গোটা দেশ জুড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.