সুরজিৎ দে ,অয়ন বাংলা নিউজ,আজিমগঞ্জ:-
আজিমগঞ্জের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের সমস্যার অবসান ঘটতে চলেছে! অবশেষে মিটতে চলেছে আজিমগঞ্জ জংশনের রেললাইন পারাপারের সমস্যা। আন্ডারপাস তৈরি হবে আজিমগঞ্জ স্টেশনে। রবিবার স্টেশন চত্বর পরিদর্শনের পর এমনটাই জানালেন পূর্ব রেলের আধিকারিক অনিল প্রসাদ রবিদাস। মাস খানেকের মধ্যেই আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রেল কর্তৃপক্ষের এই আশ্বাসবাণীতে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্গত আজিমগঞ্জ জংশন সহ একাধিক এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়ারা একটি সমস্যার সম্মুখীন এ পড়ে,,সেটি হলো রেলগেট নিয়ে,, অনবরত ডাউনলাইন এবং আপলাইন দিয়ে ট্রেন পাস হয়,, তার জন্য ঘনঘন রেলগেট পড়তে থাকে,, সেই সময়ই অনেক স্কুলপড়ুয়া থেকে শুরু করে নৌকা পার হয়ে যাওয়ার যাত্রীরা সকলকেই বেশ কিছুক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় রেল গেট এ,, এই বিষয়টি নিয়ে অনেকে রেল এবং রাজ্য সরকারকে জানান,, সেই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হন জিয়াগঞ্জ আজিমগঞ্জ পৌরসভা,, পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ পৌরসভার তরফ থেকে জেলা শাসকের কাছে একটি লিখিত আবেদনপত্র দেন,, তারপর কথা হয় রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে,, কেন্দ্র সরকার রাজ্য এবং সরকারের আধিকারিকরা একসঙ্গে সেই এলাকায় গিয়ে বিষয়টিকে খতিয়ে দেখেন। এবং বিকল্প পথ কি বার করা যায় সেটাও তারা ভেবে দেখবেন। পূর্বের পরিকল্পনামতো রেল এর আধিকারিক ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকরা এক সঙ্গে মিলিত হয়ে আজিম গঞ্জের বাসুলি তলা রেলগেট এবং সিটি রেলগেট এলাকাগুলিতে ঘুরে দেখেন,, সেখানে উপস্থিত ছিলেন আজিমগঞ্জ জংশন স্টেশনের এ. ই. এন অনিল প্রসাদ রবিদাস,, মুর্শিদাবাদ জেলার আর. টি .ও শুভেন্দু,, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পৌরসভার পৌর পিতা প্রসেনজিৎ ঘোষ সহ বিভিন্ন আধিকারিক এবং আজিমগঞ্জ বিশিষ্ট কিছু ব্যক্তি বর্গ গন। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পৌরসভার তরফ থেকে সাবওয়ে করার মতামত দেওয়া হয় তাতে সাড়া মেলে রেলের আধিকারিকদের,, এবং মাপজোপ করা হয়। আগামী সাত দিনের মধ্যেই রিপোর্ট পাঠানো হবে এবং রেলের তরফ থেকে ব্যবস্থা নিয়ে কাজ শুরু করা হবে। এই খুশির খবর শোনার পর আজিমগঞ্জ সহ একাধিক এরিয়ার বাসিন্দারা খুব খুশি হন।
পূর্ব রেলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল আজিমগঞ্জ জংশন। কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার বহু দূরপাল্লার ট্রেন (Train) চলাচল করে এই স্টেশনের উপর দিয়ে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই জংশন স্টেশনেও রেললাইন টপকে পার হওয়া ছাড়া লাইন পারাপারের অন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেই। ফলে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় ভুগছেন স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়া, এমনকি মুমূর্ষু রোগীরাও। তাদের অভিযোগ, একবার রেলগেট পড়লে অন্তত আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তীব্র যানজটে নাজেহাল অবস্থায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানের জন্য বহুবার আন্দোলনে নেমেছিলেন আজিমগঞ্জের বাসিন্দারা। রেল অবরোধ থেকে শুরু করে রেল দফতরে গণস্বাক্ষর দেওয়া, স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু সুরাহা হয়নি। অবশেষে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুর কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগ মিটতে চলেছে।
এদিন পরিদর্শকদের দলে ছিলেন পূর্ব রেলের আধিকারিক অনিল প্রসাদ রবিদাস, মুর্শিদাবাদ জেলার RTO শুভেন্দু বিশ্বাস, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ সহ রেলের পদস্থ কর্তারা। তাঁরা আজিমগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন বাসুলিতলা রেলগেট এবং সিটি রেলগেট এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন। তারপর বাসুলিতলা রেলগেট এলাকাতেই আন্ডারপাস করার কথা জানান পূর্ব রেলের আধিকারিক অনিল প্রসাদ রবিদাস। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “বাসুলিতলা রেলগেটের পাশেই আন্ডারপাস হবে। ফলে রেললাইন টপকে আর পার হতে হবে না।” একমাসের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রেল আধিকারিকদের এদিনের ঘোষণায় খুশি সাধারণ মানুষ। যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন আজিমগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা।