Asansol: সাক্ষীই দিলেন না সেই শান্তির প্রতীক ইমাম রাসিদি ! বললেন শান্তি থাকুক আসানসোলে
নিউজ ডেস্ক:- দাঙ্গার আগুনে হারিয়েছিলেন ১৬ বছরের ছেলেকে। কিন্তু প্রতিহিংসার বদলে ইমাম ইমদাদউল্লা রশিদ হাতজোড় করে অশান্ত আসানসোল বাসীকে শান্ত হওয়ার আর্তি জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, আর কোনও বাবাকে যেন সন্তানহারা হতে না হয়। তাঁর সেই আবেদনে শান্তি ফিরেছিল শিল্পাঞ্চলে। তার পর কেটে গিয়েছে চারটে বছর। আবারও মানবতার বার্তা দিলেন সেই ইমাম। ছেলের অপহরণ ও খুনের মামলায় আদালতে দুই ধৃতের বিরুদ্ধে সাক্ষীই দিলেন না ইমাম। আদালতকে জানালেন, তিনি তো দোষীদের নিজের চোখে দেখেননি। তাই মিথ্যা সাক্ষী সাজবেন কেন!
ভরা আদালতে ছেলের খুনে অভিযুক্তরা ছাড়া পেয়ে যাবে জেনেও সন্তানহারা বাবার এমন সাক্ষ্যে অবাক অনেকেই। আইনজীবীও বিস্মিত। যদিও নিজের অবস্থানকে ব্যতিক্রমী কিছু ভাবছেন না ইমাম। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন বলেছিলাম, আজও বলছি। যা নিজের চোখে দেখিনি, তার সাক্ষী কী ভাবে দেব!’’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের রামনবমীর দিন গোষ্ঠী সংঘর্ষ শুরু হয় আসানসোলের রানীগঞ্জে। রেললাইনের পাশে খুন হন বেশ কয়েক জন। মামলা করে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। দুই গোষ্ঠীরই বেশ কয়েক জন গ্রেফতার হন। বহুদিন সেই মামলা চলার পর শর্তসাপেক্ষে জামিন হয় অভিযুক্তদের। ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে কেউই বলেননি যে তাঁরা নিজের চোখে দেখেছেন কে বা কারা খুন করেছে।
ইমামের এই সাক্ষ্যের পর আসানসোল আদালত বেকসুর খালাস করে দশম শ্রেণির পড়ুয়া সিবগতউল্লা, অপহরণ ও খুনের মামলায় অভিযুক্ত পিন্টু যাদব ও বিনয় তিওয়ারিকে।
অভিযুক্তদের আইনজীবী শেখর কুণ্ডুর কথায়, ‘‘মামলায় অন্যতম সাক্ষী নিহতের বাবা ইমদাদউল্লা রশিদি আদালতে জানান, তিনি যেহেতু নিজের চোখে কাউকে খুন করতে দেখেননি তাই তিনি সাক্ষ্য কী করে দেবেন। তিনি ছাড়া যাঁরা সাক্ষী হিসেবে ছিলেন, তাঁরাও জানিয়ে দেন এঁদের কাউকে খুন করতে দেখেননি।’’
মামলার সহকারী প্রধান আইনজীবী স্বরাজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার ৭১ বছর বয়স হল। আমি ৪৮ বছর ধরে এই পেশায় রয়েছি। একজন খুন হওয়া পুত্রের পিতা সাক্ষী দিলেন না, কারণ তিনি নিজের চোখে কিছু দেখেননি। এটা আমার কাছে নজিরবিহীন ঘটনা।’’