গৌহাটি হাইকোর্টের ধমক অসমে, ফরেনার্স ট্রাইবুনালে গোড়ায গলদ ,উঠে আসছে প্রশ্ন এন আর সি স্বচ্ছতা নিয়ে

Spread the love

অয়ন বাংলা, ওয়েবডেস্ক: বিদেশি খুঁজতে গিয়ে যথেষ্ট পক্ষপাতিত্ব করেছে অসমের ফরেনার্স ট্রাইবুনালগুলি৷ ফলে বিভ্রান্তি হয়েছে প্রচুর৷ এই কথা জানাচ্ছে গৌহাটি আহইকোর্ট স্বয়ং৷ উচ্চ আদালত আগের সদস্যের উল্লেখ করে তীব্রঅসন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ এমন ঘটনা অপ্রত্যাশিত বলে জানিয়েছে আদালত। ফরেনার্স ট্রাইবুনালের২৮৮টি মামলা খতিয়ে দেখে হাইকোর্ট জানিয়েছে, ৫৭টি মামলার রায়ে গরমিল পাওয়া গিয়েছে।উল্লেখ্যনজাতীয় নাগরিকপঞ্জি(এনআরসি) থেকে যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের ভবিষ্যৎ স্থির হবে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে।

এদিকে সেই ট্রাইবুনালেই নোটশিটে প্রথমে ভারতীয় বলে দেখানো সত্ত্বেও পরে রায়ে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছে। গৌহাটি হাইকোর্ট এ ধরনের ঘটনায় ফরেনার্স ট্রাইবুনালের কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে, এবং শুধু মরিগাঁও জেলায় ট্রাইবুনালের দেওয়া ৫৭টি নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছে।হাইকোর্ট বলেছে, সাধারণভাবে এ ধরনের ঘটনায় শৃঙ্খলাজনিত বা অন্য ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ ব্যাপারে ট্রাইবুনালের এক প্রাক্তন সদস্যের দেওয়া নির্দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে আদালত।১৯ লক্ষ মানুষ অসমের এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। তাঁদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য অসমের বর্তমান ১০০টি ফরেনার্স ট্রাইবুনাল ছাড়াও আরও ২০০টি নতুন ট্রাইবুনাল চালু করা হতে চলেছে। এ ছাড়া আরও ২০০ ট্রাইবুনাল এ বছরের শেষে তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা।

ফরেনার্স ট্রাইবুনাল নিয়ে বাঙালির পক্ষের সংগঠনগুলি শুরু থেকেই সরব হয়েছে৷ অ্যাবসোর সভাপতি চন্দন চট্টোপাধ্যায় এর সাফ অভিযোগ, পুরো ফরেনার্স ট্রাইবুনাল পুরোটাই অত্যন্ত পক্ষপাতিত্বমূলক ও ভুলে ভরা৷ তাঁর সোজা কথা, পুরো প্রক্রিয়াটাই গলদ৷ শুধু ৫৭ নয় ২০০র বেশি ভুলে ভরা বলে তিনি বিশ্বাস করেন৷ বাংলাপক্ষ-এর প্রধান মুখ গর্গ চট্টোপাধ্যায়ো মনে করেন ফরেন ট্রাইবুনালসের নামে ইচ্ছা করে বাঙালি খেদানো চলছে অসম জুড়ে৷

১৯ সেপ্টেম্বরের রায়ে বিচারপতি মনোজিৎ ভুঁইয়া বলেছেন, ‘মরিগাঁওয়ের ৪ নং বিদেশি ট্রাইবুনালের দেওয়া উক্ত ৫৭টি নির্দেশ আইনের চোখে যথাযথ নয় এবং সেগুলি খারিজযোগ্য, ফলে তা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এই ৫৭টি আবেদনের শুনানি সংশ্লিষ্ট পর্যায় থেকে নতুন করে শুরু করতে হবে। ট্রাইবুনাল সদস্য এ ব্যাপারে নতুন তারিখ দিয়ে নতুন নোটিস দেবেন।’ আদালতের নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, উক্ত ৫৭টি ক্ষেত্রে মরিগাঁওয়ের পুলিশ সুপার (সীমান্ত) বা ডেপুটি কমিশনারকে কোনও ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে না।মরিগাঁওয়ের পুলিশ সুপার স্বপ্ননীল ডেকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্দেশের কপি হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন

।২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল মরিগাঁওয়ের ৪ নং ফরেনার্স ট্রাইবুনালের সদস্য মৌসুমী ডেকার একটি ই মেলের ভিত্তিতে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে। আসাম সরকারের মুখ্যসচিব, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে ওই মেল করা হয়েছিল। মেলের কপি পাঠানো হয়েছিল গৌহাটি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার (বিচার বিভাগ)-কেও।ওই মেলে তিনি জানান, তাঁর আগের সদস্য ২৮৮টি রেফারেন্সের কাজ শেষ করলেও এ ব্যাপারে স্বাক্ষর ও মতামত সংবলিত যে রেকর্ড থাকার কথা তা নেই।পূর্বতন সদস্যের উল্লেখ করে হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং তা অপ্রত্যাশিত বলে জানিয়েছে। ২৮৮টি মামলা খতিয়ে দেখে হাইকোর্ট জানিয়েছে, ৫৭টি মামলার রায়ে গরমিল পাওয়া গিয়েছে।

১১টি মামলার রেকর্ডে রায় পাওয়া যায়নি। ৬টি ক্ষেত্রে রায়ের কপি ও নির্দেশের কাগজের মধ্যে ফারাক রয়েছে। এর মধ্যে তিনিটি ক্ষেত্রে রিপোর্টে লেখা রয়েছে নোট শিটে ভারতীয় বলে ঘোষিত, কিন্তু মতামত দেবার সময়ে বিদেশি ঘোষিত।৫টি ক্ষেত্রে দু’রকম রায় পাওয়া গিয়েছে।৩২টি ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিদেশি বলে ঘোষণা করে দেওয়ার পর, সে রায় খারিজ না করেই ফের তাঁদের ভারতীয় বলে ঘোষণা করা হয়েছে।দুটি মামলায় নামের গরমিল পাওয়া গিয়েছে। একটি ক্ষেত্রে বিদেশি বলে সন্দেহভাজন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায় তা অসম্পূর্ণ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ভাবে দেখা গিয়েছে উধোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানো হয়েছে৷ ফলে দেশি , বিদেশি, আবার বিদেশি রাতারাতি দেশি হয়েছে৷

সৌজন্য:- মহানগর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.